সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবে হোয়াইটওয়াশ অস্ট্রেলিয়া
Published: 14th, February 2025 GMT
এশিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সর্বনিম্ন রান কতো? ১৯৮৫ সালে ভারতের বিপক্ষে শারজাহতে মাত্র ১৩৯ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। সেটাই ছিল সর্বনিম্ন।
৪০ বছর পর আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) এশিয়ার মাটিতে আবার লজ্জায় ডুবলো তারা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে মাত্র ১০৭ রানে অলআউট হয়েছে অজিরা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করতে নেমে কুসল মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪ উইকেটে ২৮১ রান তোলে। জবাব দিতে নেমে স্পিন জাদুতে ২৪.
আরো পড়ুন:
শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য বানরকে দায়ী করলেন মন্ত্রী
৪৩ বছরে সবচেয়ে বড় হার শ্রীলঙ্কার
আজ দুনিথ ওয়েলালাগে ৭.২ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ৭ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ২৩ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। আরেক বোলার আসিথা ফার্নান্দো ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন আরও ৩টি উইকেট।
ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন ৩ চার ও ১ ছক্কায়। জশ ইংলিস ৪ চারে করেন ২২ রান। ৩ চারে ১৮ রান করেন ট্র্যাভিস হেড। বাকিদের কেউ ছুঁতে পারেনি দুই অঙ্কের কোটা।
তার আগে শ্রীলঙ্কার কুসল মেন্ডিস ১১৫ বলে ১১ চারে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি করেন। তার ১০১, চারিথ আসালঙ্কার অপরাজিত ৭৮ ও নিশান মাদুশকার ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে ২৮১ রানের লড়াকু পুঁজি পায়। যেটা লঙ্কান বোলিং তোপে অস্ট্রেলিয়ার জন্য পাহাড় সমান হয়ে দাঁড়ায়।
বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার বেন ডয়ারশুইস, অ্যারোন হার্ডি, শন অ্যাবোট ও অ্যাডাম জাম্পা ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হন সেঞ্চুরিয়ান কুসল। আর সিরিজ সেরা হন অধিনায়ক আসালঙ্কা।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে চেয়েছিল অজিরা। কিন্তু এশিয়ার মাটিতে তাদের সেই প্রস্তুতিটা ভালো হলো না। বরং লজ্জাকে সঙ্গী করে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে পাকিস্তানে যাচ্ছে তারা।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গা-ছাড়া ক্রিকেটে ডুবল আশার সূর্য
পূর্বে উদিত সূর্যের কড়া তাপের দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে নতুন কিছু শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দল। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ২৫ বছরে যা গড়ে উঠেনি টেস্ট সংস্কৃতি, সেটাই নতুন করে শুরুর ঘোষণা মিলেছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে।
আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেল্ফ ক্রিকেট থেকে বেরিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা, এক দাঁড়িপাল্লায় মেপে প্রতিটি বল বুক চিতিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ২২ গজে দেখা মিলল গা-ছাড়া ক্রিকেটের। তাতে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে অভিপ্রায় তা ভেস্তে গেছে প্রথম সুযোগে।
নিবেদনে প্রবল ঘাটতি, হতশ্রী ব্যাটিং প্রদর্শনী ও লড়াইয়ের জেদের অভাব। তাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনটি জিম্বাবুয়ে নিজেদের করে নিয়েছে। সময় যত গড়িয়েছে, মধ্য গগন থেকে সূর্য পশ্চিমে যতটা হেলেছে বাংলাদেশের সম্ভাবনার সূর্যও ডুবেছে অতলে।
আরো পড়ুন:
অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি
সিলেট ও চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত দিয়ে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ধারহীন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান তুলে রাঙিয়েছে প্রথম দিন। ১০ উইকেট হাতে রেখে দিন শেষ করার স্বস্তিতে মুখে চওড়া হাসি অতিথি শিবিরে।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যর্থতার গল্পগুলো একই রকম। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশার সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া। বোলিংয়ে শেষ কয়েক বছর লড়াই করলেও ব্যাটিং মাথা ব্যথার কারণ। কালেভাদ্রে হাসে ব্যাট। বেশিরভাগ সময়ই থাকে আড়ালে। সিলেটের ২২ গজে আজকের দিনটা ছিল তেমনই।
যদিও বোলারদের এখানে ক্রেডিট দেওয়ার সুযোগ সামান্য। জিম্বাবুয়ের বোলাররা আহামরি বোলিং করেননি যে বাংলাদেশ ৬১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলবে। অতীত রেকর্ডও বিশ্রী। এই টেস্টের আগে অলআউট হওয়া দশ ইনিংসের মধ্যে ছয়টিতেই দুইশ ছুঁতে পারেনি।
যার শুরুটা ওপেনিং জট থেকে। সবশেষ ৩১ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে কোনো সেঞ্চুরি আসেনি। এবার ৩১ রানেই উদ্বোধনী জুটিতে ফাটল। সাদমান স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরার ১ রান পরই মাহমুদুল হাসান জয় উইকেটের পেছনে তালুবন্দি হন। প্রথম সেশনে আর কোনো বিপদ বাদেনি। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনেই সব ওলটপালট। উইকেট আহামরি কঠিন ছিল না। ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ ছিল। জিম্বাবুয়ের বোলাররাও আহামরি বোলিং করেননি যে ব্যাটিংয়ে ধস পড়বে।
আত্মঘাতি শটে উইকেট উপহার দিয়ে না আসলে ব্যাটসম্যানদের আউট করা কঠিন ছিল। অতিথিদের জন্য কাজটা সহজ করে দেন অধিনায়ক শান্ত (৪০), মুশফিকুর (৪), মুমিনুল (৫৬) ও মিরাজ (১)। তাদের পথ অনুসরণ করেন তাইজুল (৩)। ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
সেখান থেকে তুলে দাঁড়ানোর শক্তি লেজের ব্যাটসম্যানদের ছিল না। জাকের আলীর ২৮, হাসান মাহমুদের ১৯ রান স্কোরবোর্ড কিছুটা সমৃদ্ধ করে। ওতোটুকুই যা লড়াই। টেস্টে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে ব্যাটিং জুটি। শুরুর দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল ও শান্ত ১২৮ বলের জুটি গড়েছিলেন। ৬৬ রান আসে তাদের জুটিতে। যা দলের পক্ষে ছিল সর্বোচ্চ। বাকিটা সময়ে কেবল ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল।
একই উইকেটে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা ১৪.১ ওভার খেলার সুযোগ পেয়েছিল। ব্রেইন বেনেটের ৩৭ বলে ৬ চারে সাজানো ৪০ ও বেন কারানের ৪৯ বলে ১৭ রানের জমাট ৬৭ রানের জুটি অবাক করেছে সবাইকেই। শেষ বিকেলে চার বোলার ব্যবহার করেও কোনো সাফল্য মেলেনি। তাতে দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে অতিথিরা।
ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিন ফিরতে না পারলে টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের এপিটাফ লিখে নিয়েছে ধরে নেওয়াই যাবে।
ঢাকা/আমিনুল