চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের মরিয়ম আশ্রমে আয়োজিত ‘মা-মারিয়ার তীর্থোৎসব’ শেষ হয়েছে। দুই দিনের এই উৎসবে সারা দেশ থেকে প্রায় আট হাজার খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী অংশ নেন। ‘মা-মারিয়ার হাত ধরে, মেষপালকের সঙ্গে বিশ্বাসের পথে’- এই প্রতিপাদ্যে গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া উৎসব আজ শুক্রবার সকালে শেষ হয়।

দুই দিনের উৎসব উপলক্ষে দেয়াঙ পাহাড়ের আশ্রম ও আশপাশের এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। উৎসবের সমাপ্তি হয় বিশ্বশান্তি ও মানব জাতির কল্যাণের জন্য প্রার্থনার মধ্য দিয়ে।

আয়োজকেরা জানান, পবিত্র খ্রিষ্টযাগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীর্থোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এতে পৌরোহিত্য করেন চট্টগ্রাম ক্যাথলিক আর্চ ডাইয়োসিসের আর্চবিশপ সুব্রত লরেন্স হাওলাদার। এরপর নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করেন ভক্তরা।

গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পর তীর্থযাত্রীরা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আলোক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। আজ সকালে মহাখ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন বরিশাল ক্যাথলিক ডাইয়োসিসের বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও।

উল্লেখ্য যে, ১৫১৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে পর্তুগিজ বণিকদের আগমনের মধ্যে দিয়ে পূর্ববঙ্গে খ্রিষ্টবিশ্বাসেরও আগমন ঘটে। ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পর্তুগিজ বণিকেরা চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। এরপর ১৫৯৮ সালে দক্ষিণ ভারতের কোচিন থেকে বাংলায় প্রথম মিশনারিরা আসেন।

প্রথম মিশনারি জেজুইট ধর্মসংঘের পুরোহিত ফাদার ফ্রান্সেসকো ফার্নান্দেজ দেয়াঙয়ে পূর্ববঙ্গের প্রথম গির্জা নির্মাণ করেন ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে। ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাথরঘাটা বান্ডেল রোড ও জামালখানে দুটি গির্জা নির্মাণ করেন। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মরিয়ম আশ্রমে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা বসে মা মারিয়া তীর্থ উৎসবে। এবারও সম্মিলিত খ্রিষ্টযাগে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু।

দুদিনের উৎসবে অংশ নিতে আসা ব্রিজেট ডায়েস বলেন, ‘সারা দেশ থেকে আমাদের সম্প্রদায়ের আট হাজারের বেশি ভক্ত এসেছেন। এমন আয়োজনে আসতে পেরে সত্যি অনেক ভালো লাগছে। আমাদের আশা একটাই- বিশ্বশান্তি।’

চট্টগ্রাম ক্যাথলিক আর্চ ডাইয়োসিসের পালকীয় সেবা দলের সেক্রেটারি ফ্লেভিয়ান ডি কস্তা বলেন, এমন আয়োজনের জন্য খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ পুরো বছর ধরে অপেক্ষায় থাকেন। তীর্থোৎসবে অংশগ্রহণকারীরা ভক্তিপূর্ণ সময় অতিবাহিত করেছেন।

রেজাউল//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র থ ৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

এ বছর জাতীয়ভাবে নববর্ষ পালন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে

এ বছরের বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসবের মধ্য দিয়ে। এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে একটি সার্বজনীন অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আগামী ১৩ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চৈত্র সংক্রান্তি কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছে। এই কনসার্টে মাইলস্, ওয়ারফেজ, দলছুট, এভোয়েড রাফা, ভাইকিংস্ ও স্টোন ফ্রি ব্যান্ড দল গান পরিবেশন করবে।

এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আগে নির্ধারণ করা অনুদানের অর্থ দ্বিগুণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এ বছরই প্রথম সরকার প্রতিটি জেলায় এক লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দিয়েছে, যা আগে ছিল ৫০ হাজার টাকা এবং উপজেলা পর্যায়ে নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে ৪৯৫টি উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা আগে ছিল ৩০ হাজার টাকা।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এবার বাংলা নববর্ষ পালনে শুধু রাজধানীকে কেন্দ্র করে না সারা দেশের সব জেলায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপস্থিতি শুধু অংশগ্রহণ নয়, দৃশ্যমানভাবে যাতে উপস্থিতি স্পষ্ট হয় সেভাবে সাজানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সুরের ধারার হাজার কন্ঠের গান এবার হবে উন্মুক্ত চত্বরে এবং সেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে আয়োজন হবে।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, পহেলা বৈশাখের আগের দিন চৈত্রসংক্রান্তিতে বিভিন্ন ব্যান্ড দলের পরিবেশনার পাশাপাশি বাউল–ফকিরদের অংশগ্রহণেও হবে বিশেষ পরিবেশনা। পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধ্যায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে পহেলা বৈশাখ ও জুলাই বিপ্লব নিয়ে প্রদর্শিত হবে ড্রোন শো। এটি হবে চীন সরকারের সহেযাগিতায়।

উপদেষ্টা আরও জানিয়েছেন, এবারের বর্ষবরণের আয়োজনের মোট বরাদ্দ এখনই নির্ধারণ করে বলা সম্ভব না। তবে পরে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

এবার রাজধানীতে নববর্ষের শোভাযাত্রার সময় ও স্থান সম্পর্কে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামীকাল এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংস্কৃতি উপদেষ্টার বৈঠকের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রথম আলোকে জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিলিংয়ে লড়াইটা মূলত হামজা বনাম ছেত্রী
  • ‘কন্যা’র পর নুসরাত ফারিয়া-সজলের ‘ব্যবধান’
  • বৈশাখের উৎসবে রঙ বাংলাদেশ
  • অচেনা ফোনকলে ঝুঁকি!
  • উৎসবে ডিজিটাল ক্যানভাস
  • মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে, জানালেন উপদেষ্টা ফারুকী
  • এ বছর জাতীয়ভাবে নববর্ষ পালন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে
  • এক উৎসবে অনেক দেশ
  • চারদিকে এত এত পুরুষের গল্প
  • সাগরে মাছ নেই, জেলে পরিবারে ঈদ আনন্দ ম্লান