রাবিতে উদযাপন হয়নি বসন্তবরণ উৎসব, প্রেমবঞ্চিত সংঘের বিক্ষোভ
Published: 14th, February 2025 GMT
প্রতি বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ এবং চারুকলা বিভাগ বসন্তবরণ উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও এ বছর কোনো বিভাগের আয়োজনে বসন্ত বরণ উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়নি।
এদিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন প্রেমবঞ্চিত সংঘের সদস্যরা। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ‘তুমি কে, আমি কে বঞ্চিত, বঞ্চিত’, এমন নানা স্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, এই কর্মসূচি ৯ বছর ধরে পালিত আসছে। সমাজে প্রেম ও ভালোবাসার অভাব পরিলক্ষিত। অবশ্যই আমরা প্রেমের বিরুদ্ধে না, তবে পবিত্র প্রেমের নামে এই বৈষম্য চাই না। আমরা চাই সমতা। এজন্য ভালোবাসা দিবসে এই কর্মসূচি।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন প্রেমবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি পরিবহন মার্কেট থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া এলাকায় মেয়েদের সকল হল ঘুরে সেন্টার লাইব্রেরি ও পারিস রোড হয়ে বুদ্ধিজীবী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মহা বারুনীর স্নান উৎসবে মানুষের ঢল
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৪তম জন্ম তিথি উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতুয়া সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুণ্য লাভের আশায় দেশ ও বিদেশের লাখো মতুয়া ভক্ত এ স্নানে অংশ নিচ্ছেন।
এ স্নান উপলক্ষে ঠাকুর বাড়ীতে বসেছে তিনদিন ব্যাপী গ্রামীণ মেলা। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠাকুর বাড়িসহ পাশপাশ এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি
ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর লীলা করেন পার্শ্ববর্তী ওড়াকান্দি গ্রামে। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টা পযর্ন্ত চলবে স্নান উৎসব। পুণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অন্তত ১০ লক্ষাধিক পুণ্যার্থী অংশ নিচ্ছেন এ স্নান উৎসবে। ভক্তদের পদচারণায়, ঢাক ঢোল ও কাসরের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ঠাকুরবাড়িসহ আশপাশের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। ভক্তরা মন্দিরে পূজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মূলত পুকুর) স্নান করে দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থণা করেন।
ওড়াকান্দিতে মহা বারুনীর স্নান উৎসব
এ উৎসব সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন।
স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে ৩ দিনব্যাপী লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরি জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টির দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান বসেছে।
ওড়াকান্দির স্নানোৎসবে খুলনা থেকে আসা অশোক বিশ্বাস বলেন, “পুণ্য লাভের আশায় আমি ঠাকুর বাড়িতে এসেছি। বিশ্বাস করি এখানে স্নান করে পুণ্য লাভ করেছি।”
ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি
মাদারীপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্র পলাশ বিশ্বাস বলেন, “আমি এবারই প্রথম ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়িতে এসেছি বন্ধুদের সাথে। স্নান করলাম, পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল চেয়ে প্রার্থণা করেছি।”
যশোর থেকে আসা শিউলী বিশ্বাস বলেন, “বিগত ৫ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ির বারুনী স্নানে অংশ নিতে আসি। এখানে স্নান করলে মনোবাসনা পুর্ণসহ সকল পাপ-কষ্ট দূর হয়।”
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও স্নানোৎসব কমিটির সভাপতি সুব্রত ঠাকুর বলেন, “এখানে পুণ্য লাভের আশায় সারা দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা আসেন, স্নান করেন। শুধু বাংলাদেশই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে। ভক্তরা এখানে এসে স্নান করলে তাদের মানোবাসনা পূরণ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে ভক্তদের থাকার জন্য করা হয়েছে আবাসন ও প্রসাদের ব্যবস্থা। সেনাবাহিনী ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।”
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “এ স্নান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।”
ঢাকা/বাদল/টিপু