জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, গত ৫৪ বছরে কোনোদিনও দেখিনি স্বাধীনতা দিবসে একটা মিছিল করতে। যখনই অন্তর্বর্তী সরকার অক্টোবর-নভেম্বরে একটি নির্বাচনের কথা বলা শুরু করলেন, তখনই আপনাদের মুখে রাম রাম। আবার শুনি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কীসের ইঙ্গিত। সংস্কারের পর নির্বাচন? কোথায় ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। কোথায় ছিলেন ১৬ বছর? 

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও পবিত্র মাহে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি’ শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব প্রশ্ন রাখেন।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, শুনেছি আপনাদের একটা পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম তাদের অমুসলিম বলা হয়েছে। তাই আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কোথায় ছিলেন আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন। যারা কবরস্থানের মধ্যে, জঙ্গলে ঘুমিয়ে জীবন কাটিয়েছেন, যারা আয়না ঘরে মানুষকে মারার শিক্ষা দিয়েছেন তখনও আপনাদের এত জোরালো কথা বলতে দেখিনি। এখন আবার এই ষড়যন্ত্র কেন? 

বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর আমরা শেখ হাসিনার কাছে মাথা নত করিনি। এখনও এই সরকারকে সমর্থন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে মাথা নত করবো না।

ফারুক বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। একটু যেন গোলমাল করে ফেলছে কেউ। যেন কোথায় কীসের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। না হলে এই জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগকে, শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি মনে করি, তার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনার।

বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা বলেন, জামায়াতে ইসলামী আপনারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, পরিণামে কী পেয়েছেন? আপনাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মেরেছে।

জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরের উদ্দেশে তিনি বলেন, তিনবার জাতীয় নির্বাচনে বৈধতা দিয়ে, শেখ হাসিনাকে, আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে আপনাদের দল আজ বিলীনের পথে।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ বছরে আমরা অনেক কষ্ট করেছি, অনেক কটূক্তি শুনেছি, অনেক ব্যথা পেয়েছি, অনেক জেল জুলুম খেটেছি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে এই প্রেসক্লাবের সামনে থেকেই আমাদের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজকে ভারতের আশ্রয়কারী শেখ হাসিনা সরকার। শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে তার (শেখ হাসিনার) বাবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা আমরা কখনও শেখ মুজিবরের কাছে আশা করেছিলাম না। কিন্তু সে কারণেই তাঁকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়। মানুষের ভালোবাসার সম্মান যে ব্যক্তি দিতে পারে না সে ব্যক্তি কোনোদিনও ক্ষমতাই থাকতে পারে না। তার আরেক প্রমাণ শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো.

নবী হোসেন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য় ত ইসল ম ব এনপ আপন দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেন ইমরান খান

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রচারে তার প্রচেষ্টার জন্য নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। 

২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ইমরান খানের নাম প্রস্তাব করেছে পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স (পিডব্লিউএ) এবং নরওয়ে ভিত্তিক সংগঠন পার্টিয়েট সেন্ট্রাম। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে পার্টিয়েট সেন্ট্রাম বলেছে, “আমরা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, মনোনয়নের অধিকারী এমন একজনের সঙ্গে (পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স) জোটবদ্ধ হয়ে, আমরা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে তার কাজের জন্য নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছি।” 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড

পাকিস্তানে ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের ভাড়া কমল ২০ শতাংশ

বিবৃতিতে গণতন্ত্রের সংগ্রামে পিটিআই প্রধান ইমরান খানের নেতৃত্ব, মানবাধিকারের প্রতি তার অবস্থান ও পাকিস্তানিদের সমস্যা সমাধানে তার নিষ্ঠার প্রশংসা করা হয়েছে। 

এর আগে, ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার জন্য ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। সেবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ইমরান খানের নাম মনোনীত করেছিল মার্কিন পত্রিকা ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর।

প্রতি বছর, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শত শত মনোনীতদের নাম পায়, যার পরে তারা দীর্ঘ আট মাসের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচন করে।

 

পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মামলায় তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এটি চতুর্থ বড় মামলা যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস এবং বেআইনি বিবাহ সম্পর্কিত তিনটি দোষ উচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিল বা স্থগিত হয়েছে।

২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের পর ইমরান খান ক্ষমতা হারান। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন, এগুলোকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ