বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক বলেছেন,“জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগকে, শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি মনে করি, তার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনার।” 

শুক্রবার (১৪ ফেবব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিরও (জাপা) সমালোচনা করেন জয়নাল আবদীন ফারুক। 

জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও পবিত্র রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এ নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন,“গত ৫৪ বছরে কোনোদিন দেখিনি স্বাধীনতা দিবসে একটা মিছিল করতে। যখনই অন্তর্বর্তী সরকার অক্টোবর-নভেম্বরে নির্বাচনের কথা বলা শুরু করল, তখনই আপনাদের মুখে রাম নাম। আবার শুনি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কীসের ইঙ্গিত? সংস্কারের পর নির্বাচন? কোথায় ছিলেন স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়, কোথায় ছিলেন গত ১৬ বছর?” 

তিনি বলেন, “আমরা শুনেছি আপনাদের একটা পত্রিকার মাধ্যমে, ১৯৭১ সালে আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম, তাদেরকে অমুসলিম বলা হয়েছে। আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কোথায় ছিলেন, আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর হাসিনার কাছে মাথা নত করিনি। এখন এই সরকারকে সমর্থন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করব না।”

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, “জামায়াতে ইসলামী আপনারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পরিণামে কী পেয়েছেন? আপনাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মেরেছে।”

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উদ্দেশে জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, “তিনবার জাতীয় নির্বাচনে বৈধতা দিয়ে; শেখ হাসিনাকে, আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে আপনাদের দল আজ বিলীনের পথে।”

তিনি আরো বলেন,“বিগত ১৬ বছরে আমরা অনেক কষ্ট করেছি, অনেক কটূক্তি শুনেছি, অনেক ব্যথা পেয়েছি, অনেক জেল খেটেছি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে এই প্রেস ক্লাবের সামনে থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দসহ গ্রেপ্তার হয়েছি। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজকে ভারতের আশ্রয় গ্রহণকারী শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে তার (শেখ হাসিনার) বাবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা আমরা কখনোই শেখ মুজিবের কাছে আশা করিনি। সে কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়। মানুষের ভালোবাসার সম্মান যে ব্যক্তি দিতে পারে না, সে ব্যক্তি কোনোদিনও ক্ষমতাই থাকতে পারে না। তার আরেক প্রমাণ শেখ হাসিনা।”

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো.

নবী হোসেন প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ল আবদ ন ফ র ক আপন দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের বাড়ির একটি ঘরে আগুন

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির একটি খড়ের ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত গভীর রাতে (দেড়টায়) পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাতখামার এলাকায় সাদ্দামের গ্রামের বাড়ির প্রাচীর সংলগ্ন একটি খড় ও খড়ি রাখার ঘরে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় বোদা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার মূল বাড়ির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। 

এ দিকে সাদ্দামের বাড়ির অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বিভিন্ন পেজে শেয়ার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা কোনোভাবে জীবন রক্ষা পেয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
 
ফায়ার সার্ভিস জানায়, বাড়ির প্রাচীর সংলগ্ন একটি খড় ও খড়ি রাখার ঘরে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায়। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। মধ্য রাতে ওই ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

সাদ্দাম হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, মধ্যরাতে কে বা কারা আমাদের খড়ের ঘরে আগুন দেয়। প্রতিবেশীরা আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সময়মত তারা না আসলে আগুন আমাদের থাকার ঘরেও লাগতো। আমার স্বামী ৩ বছর ধরে বিছানায় পড়ে রয়েছেন। আমরা এখন খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা চাই, প্রশাসন এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে কারা আগুন দিয়েছে তা খুঁজে বের করুক এবং শাস্তির ব্যবস্থা করুক।

বোদা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর রায়হান ইসলাম বলেন, আমাদের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ১ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছি। তবে আগুনের সূত্রপাত এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ