দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আফজালুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা ছাত্রদল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সহদপ্তর সম্পাদক কাউছার আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানো নোটিশে আফজালুর রহমানকে বলা হয়েছে, আপনি দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কের মতো দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো গুরুতর অভিযোগ থাকায় আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে আগামী তিন দিনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি শাহাজান খান ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা বলেন, এই নেতা দলীয় প্রভাব খাঁটিয়ে যেসব কর্মকাণ্ড করছেন, তা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। এ জন্য কারণ দর্শানো হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাস্তানি, মানুষকে জিম্মি করে হয়রানিসহ নানা ঘটনায় অভিযুক্ত গাজী জাহিদ হাসান দলের কেউ নয় বলে জানিয়েছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক মো.

শরীফুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জীবননগর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নূর ইসলামের ছেলে গাজী জাহিদ হাসান বিএনপি-অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বর্তমানে কোনো পর্যায়ের কোনো দায়িত্বে নেই। তার সঙ্গে বিএনপি-অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। তার কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের দায় দল বহন করবে না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে গাজী জাহিদ হাসান নিজেকে কখনো বিএনপি, আবার কখনো যুবদলের নেতা পরিচয়ে জীবননগর পৌর এলাকায় মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি জীবননগর শহরের মোটর পার্টস ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম করিম ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী পারভীনের বিয়ে অবৈধ দাবি করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সাইফুল টাকা দিতে অস্বীকার করায় গাজী জাহিদের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা এই দম্পতিকে বাড়ি থেকে তুলে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যান। আলোচিত বিষয়টি জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব অবগত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘোষণা দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় সাবেক সমন্বয়ককে মারধরের অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম শরিফুল ইসলাম। তিনি গড়াইটুপি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

আজ বুধবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান খান বাবু। তিনি বলেন, শাহাপুর ক্যাম্পে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাকে মারধর করা হয়েছে। গড়াইটুপি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন আমার ওপর হামলা চালায়। ওই সময় আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির লোকজনও উপস্থিত ছিল। আমি কোনো অপরাধ করিনি।

প্রথম লাইভের কিছুক্ষণ পর ফের লাইভে আসেন তিনি। এ সময় বলেন, অনেকেই ফোন করছেন, কিন্তু আমি ধরতে পারছি না। আমি এখনো শাহাপুর ক্যাম্পেই আছি। প্রতিহিংসার কারণে আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমি যদি মারা যাই, তাহলে আমার ফেসবুক লাইভে বলা নামগুলোই দায়ী থাকবে। হামলায় গড়াইটুপি ও আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন যুক্ত ছিল।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গড়াইটুপি ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামে পাঁচ বিঘার একটি জলাধার নিয়ে মেহেদী হাসান খান বাবুর বাবা মুসা খান ও খালু আবুজার মোল্লার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার মুসা খানের পক্ষে রায় দেয় আদালত। রায় পেয়ে জলাধারের দখল নিতে গেলে প্রতিপক্ষ আবুজার মোল্লা তাতে বাধা দেন।

এই ঘটনায় শাহাপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মেহেদী হাসান সমঝোতার জন্য বুধবার উভয়পক্ষকে ক্যাম্পে হাজির হতে বলেন। সমঝোতার সময় উভয়পক্ষের কথাবার্তার একপর্যায়ে আবুজার মোল্লার ছেলে ওসমান গনি (২৪), মৃত রইচ উদ্দিন মোল্লার ছেলে আবুজার মোল্লা (৫৭), আবুজার মোল্লার স্ত্রী আকলিমা খাতুন (৪০), মৃত ছাত্তার মন্ডলের ছেলে আব্দুল আলিম (৫৫) ও গড়াইটুপি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামসহ ১০-১৫ সাবেক ওই সমন্বয়ক ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে।

এ বিষয়ে জানতে শাহাপুর পুলিশ ফাঁড়ির (টুআইসি) উপসহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মামুন হোসেন বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে আমরা বসেছিলাম এবং সেটি মীমাংসাও হয়েছে। বাবু ভাইদের কাগজপত্র সঠিক ছিল। তারা যখন চলে যাচ্ছিলেন, তখন কিছু যুবক হঠাৎ করে তাকে চড় মারেন।

তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পের আইসি বিষয়টি জীবননগর থানার ওসিকে জানিয়েছেন। আমি নিজে ফোর্স নিয়ে বাবু ভাইকে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছি।

গড়াইটুপি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, শাহপুর পুলিশ ক্যাম্পে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসা চলছিল। সেখানে থাকা অবস্থায় মেহেদী হাসান বিএনপি নিয়ে কটূক্তি করে। ওই সময় বিএনপির লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, ঘটনাটি পারিবারিক এবং জমি সংক্রান্ত জের ধরে সংঘটিত হয়েছে। আমার ক্যাম্পের আইসি বিষয়টি সমাধান করে বাবু ভাইকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। এখনও এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়াডাঙ্গায় সাবেক সমন্বয়ককে মারধরের অভিযোগ