ময়মনসিংহে ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষে অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত
Published: 14th, February 2025 GMT
ময়মনসিংহের ভালুকায় ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষে অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত এবং চালক আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোয়ারী ভাওয়ালিয়া বাজু বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ভালুকা-গফরগাঁও সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন উপজেলার চান্দারাটি নদীর পাড় এলাকার আবদুল ওয়াদুদের ছেলে মনির হোসেন (৪০) ও সাতেঙ্গা এলাকার আবদুল হাইয়ের ছেলে মো.
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভালুকাগামী একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের গোয়ারী ভাওয়ালিয়া বাজু বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি মাহিন্দ্রা ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে অটোরিকশার যাত্রী মনির হোসেন মারা যান। খবর পেয়ে ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা মো. হামিদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অটোরিকশাচালক শাহজালাল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান।
ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা ট্রাক্টরের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।
ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবীর বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের মরদেহ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ট্রাক্টরটি আটক করা যায়নি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়েছে, মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে পারিনি: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বিগত সময় (আওয়ামী সরকার) পুলিশ বাদী হয়ে ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ৩৬ জুলাইয়ের পর রাজনৈতিক মামলা ও পুলিশ বাদী হয়ে মামলা হয়নি। বিগত সময় ৭০০ মানুষ গুম হয়েছে, বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। বিগত সরকার সাড়ে চার হাজার মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে। ৩৬ জুলাইয়ের পর বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এখনো মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে পারিনি। ময়মনসিংহ নগরের একটি রিসোর্টে আজ বৃহস্পতিবার এক কর্মশালায় এ কথাগুলো বলেন তিনি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক দিনব্যাপী এই কর্মশালা বেলা সোয়া ১১টায় শুরু হয়। এতে বিভাগের চার জেলার বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭১ সালে লাখো মানুষের রক্ত ঝরেছিল। বিগত ১৫ বছরে যেসব মানুষ গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। যারা ৩৬ জুলাই পর্যন্ত পাখির মতো গুলি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষী নিতে সময় লাগছে প্রসিকিউশনের।’ এ সময় তিনি মামলাগুলো ভিন্নভাবে দেখার জন্য বিচারকদের প্রতি অনুরোধ করেন।
মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমরা সতর্কতার সঙ্গে দেখেছি, গত ১৫ বছর কীভাবে ফ্যাসিজমকে লালন করেছেন, এখনো অনেকে মদদ দিচ্ছেন। ফ্যাসিজমকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আকাশের যত তারা, আইনের তত ধারা আছে। আমরা এসেছি ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করতে। আমরা এসেছি শহীদদের রক্তের দায় থেকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উপহার দিতে। এ যাত্রায় ফেল করলে দেশের গণতন্ত্র সার্বভৌমত্ব হারাবে।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষক ও আইসিটি) লুৎফন নাহারের সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মাহবুবুর রহমান।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও পুলিশ কোনো অঙ্গ যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে তার প্রভার অন্যদের ওপর পড়ে। গত ৫ আগস্টের আগে কেউ বাধ্য হয়ে, কেউ অতি উৎসাহিত হয়ে নানা অপকর্ম করেছেন। ৫ আগস্টের পর মামলার হিড়িক পড়ে। তখন মামলায় ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার আসামি দেওয়া হয়, কিন্তু কিছু করার ছিল না। নিরীহ কোনো লোককে গ্রেপ্তার না করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মামলাগুলোর তদন্তে যে অসুবিধা হচ্ছে, সে সম্পর্কে বিচার বিভাগ বিবেচনায় নেবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গণি। তিনি জানান, ঢাকার পর ময়মনসিংহে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই কর্মশালা হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ, জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন, পুলিশের ডিআইজি আশরাফুর রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় জুলাই-আগস্ট–পরবর্তী পরিস্থিতির পর পুলিশ ও বিচার বিভাগের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে এবং মানবাধিকার সমুন্নত রেখে কীভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, জনগণ ও পুলিশের মধ্যে দূরত্ব দূর করা, বিচার বিভাগ সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা পরিবর্তন, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচার ও শাসন বিভাগ একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।