বিকেএমইএতে ভোটের হাওয়া, প্রার্থী হতে লাগবে ২ লাখ টাকা
Published: 14th, February 2025 GMT
প্রায় এক যুগ পর নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অবশেষে ভোট ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী ১০ মে সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে ভোট গ্রহণ হবে। এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একজন ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকায় মনোনয়নপত্র কিনতে হবে।
চলতি মাসের শুরুতে বিকেএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান সফিউল্লা চৌধুরী। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। ১৯ এপ্রিল চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন বোর্ড।
বিকেএমইএর পরিচালক পদের মনোনয়ন ফি ২ লাখ টাকা হলেও সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও সহসভাপতি পদে আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে নির্বাচিতদের। সভাপতি পদে ৩ লাখ, নির্বাহী সভাপতি পদে ২ লাখ ৭৫ হাজার এবং সহসভাপতি পদের মনোনয়নপত্র কিনতে লাগবে আড়াই লাখ টাকা। সংগঠনটিতে একজন করে সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছাড়া ছয়টি সহসভাপতি পদ রয়েছে।
আরও পড়ুনসমঝোতায় আবারও বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান২৬ জুলাই ২০২৩২০১০ সালের পর বিকেএমইএতে সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচন হয়নি। সেবার নির্বাচনে জয়ী হয়ে সভাপতি পদে বসেন নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের এ কে এম সেলিম ওসমান। পরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ সদস্য হোন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সমঝোতা করে ছয়বার বিকেএমইএর সভাপতির পদে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন চাপে পদত্যাগ করেন সেলিম ওসমান। ২৫ আগস্ট সংগঠনটির সভাপতির পদে বসেন মোহাম্মদ হাতেম। তার আগে তিনি নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সব মিলিয়ে সেলিম ওসমান যে সাত মেয়াদে সভাপতি ছিলেন, তার মধ্যে পাঁচ মেয়াদে নির্বাহী সভাপতি ও সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ হাতেম।
জানা যায়, সেলিম ওসমান সভাপতির পদ আঁকড়ে থাকতে প্রতিবারই বিভিন্ন কৌশলে সরাসরি ভোটকে পাশ কাটিয়ে সমঝোতার কমিটি করেন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে সংগঠনের প্রধান কার্যালয় নির্মাণের কারণ দেখিয়েও কমিটির মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছিলেন সেলিম ওসমান।
বিকেএমইএর সভাপতি পদ ধরে রাখতে ২০১৯ সালে ভিন্ন কৌশল নিয়েছিলেন সেলিম ওসমান। সেবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তবে তাঁর অনুসারীরা নিশ্চিত করেন, কোনো শিল্পমালিক যাতে মনোনয়নপত্র না কেনেন। ফলে দুই দিন একটি মনোনয়নপত্রও বিক্রি হয়নি। পরে সেলিম ওসমানের অনুসারী ব্যবসায়ীরা তাঁকে মনোনয়নপত্র কিনতে অনুরোধ করেন। তারপর যে কয়টা পদ আছে, সে কয়টা মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়। শেষ পর্যন্ত সেলিম ওসমান সভাপতি হোন।
এ ছাড়া ২০২১ সালে ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে সেলিম ওসমানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত নিট ফোরামের সমানসংখ্যক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে আবার সভাপতি হন তিনি
সর্বশেষ ২০২৩ সালে সমঝোতার কমিটি করার জন্য ২০২১-২৩ মেয়াদের পর্ষদের সব সদস্যকে ঢাকায় নিজের বাসভবনে ডাকেন সেলিম ওসমান। সবাইকে তিনি বার্তা পাঠান, সভায় না এলে মনোনয়নবঞ্চিত থাকতে হবে। শেষ পর্যন্ত চারজন অনুপস্থিত থাকেন। তাঁদের পরিবর্তে নতুন চারজনসহ ৩৪ প্রার্থীকে নিয়ে ২০ জুলাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সেলিম ওসমান। ওই দিন এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে নির্বাচিত ৩৪ পরিচালকের তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন বোর্ড। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নির্বাচিত পরিচালকেরা সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি এবং সাতজন সহসভাপতি নির্বাচিত করেন। এভাবেই অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে পুরো নির্বাচনের প্রক্রিয়া মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়। সভাপতি হন সেলিম ওসমান।
ভোটের হাওয়া কোন দিকে
তফসিল ঘোষণা হলেও বিকেএমইএতে ভোটের হাওয়া শুরু হয়নি। তবে সম্মিলিত নিট ফোরামের প্যানেল লিডার হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন মোহাম্মদ হাতেম। আর কোনো প্যানেল হবে কি না, সেটি জানা যায়নি।
নির্বাচন নিয়ে মোহাম্মদ হাতেম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিকেএমইর সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। সদস্যদের সেই সুযোগ করে দিতে আমরা আগাম নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি জানান, তাঁর নেতৃত্বাধীন পর্ষদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী সেপ্টেম্বরে।
আরও পড়ুনসেলিম ওসমানমুক্ত বিকেএমইএ, নতুন সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম২৫ আগস্ট ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স ল ম ওসম ন ব ক এমইএর সদস য সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের স্মৃতিচারণে মেতে উঠলেন নিউইয়র্কস্থ দিনাজপুর জেলা সমিতির সদস্যরা
প্রবাস জীবনে দেশের স্মৃতিচারণ আর খোশগল্পে মেতে উঠলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কে বসবাসকারী দিনাজপুর জেলা সমিতির সদস্যরা। বাংলাদেশে যেকোনো উন্নয়ন কিংবা দুর্যোগে এগিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। দেশ নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথাও জানান নিউইর্য়কের দিনাজপুর জেলা সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে। তারা জানান- প্রবাস জীবনে এভাবে একত্রিত হওয়াটাই অনেক আনন্দের।
কুইন্সে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে অভিষেক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এটা অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও সবার মাঝে ছিল ভিন্ন ধরনের আমেজ। বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষ তারপর আবার সবাই এক জেলার সেজন্য আমেজটাও ছিল ভিন্নরকম।
নতুন কমিটির সভাপতি মো. জাবেদ চৌধুরী ভুট্রু ও সাধারণ সম্পাদক মো. বিপুল সরকার শপথ গ্রহণের পর বলেন, সমিতিকে সুসংগঠিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে।অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্বে পালন করেন সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ড. রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, বাংলাদেশি আমেরিকানদের মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সময় এসেছে। সবার মাঝে একতা তৈরি হলে তা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন আরিফুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সুর আর সংগীতের মূর্ছনার মেতে উঠেছিল সবাই। নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী দিনাজপুরের অনেক পরিবার পরিজন নিয়ে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানটি দিনাজপুরবাসীর মিলনমেলায় পরিণত হয়।
২৯ সদস্যের এই নতুন কমিটি ২০২৫-২৬ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. জাবেদ চৌধুরী ভুট্টু, সাধারণ সম্পাদক মো. বিপুল সরকার, সহ-সভাপতি ফতেনূর আলম বাবু, সহ-সভাপতি মো. গোলাম কিবরিয়া, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বাপ্পি, সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান ইনসান, সহ-সভাপতি ডা. মহিদুল চৌধুরী, যু্গ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মোস্তাক আহমেদ, শাহীন চৌধুরী, শামীম সরকার, এফ আলম (নিউমুন), যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লুতফর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মাসুদ বেগ, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ এস রহমতুল্লাহ, সাহিত্য ও প্রচার সম্পাদক আমিনুর ইসলাম, যুগ্ম সাহিত্য ও প্রচার সম্পাদক আরিফুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক রানা পারভেজ, ক্রীড়া সম্পাদক শফি উল্লাহ, যুগ্ম ক্রীড়া সম্পাদক কিবরিয়া হাবিব, আপ্যায়ন সম্পাদক সামিউর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডা. নার্গিস রহমান, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারহানা চিশতী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা বিলকিস বি. চৌধুরী, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, শেখ জুয়েল, কার্যকরী সদস্য তারেক জাহেরী, কার্যকরী সদস্য টি. ইসলাম, কার্যকরী সদস্য শামিমা ইসলাম সুমী ও কার্যকরী সদস্য আব্দুর রশিদ।