আগুনঝরা ফাগুনে মেতেছে নাটোরের উত্তরা গণভবন
Published: 14th, February 2025 GMT
আগুনঝরা ফাগুনে মেতেছে নাটোরের উত্তরা গণভবন। চারদিকে পাখির কলতান। বাতাসে হাজারো ফুলের সুবাস। ফুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বর্ণিল পোশাকে সেজেছেন দর্শনার্থীরা। সারি সারি ফুলবাগানের পাশে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেন। শুক্রবার সকালে বসন্তবরণের দিনে (শুক্রবার সকালে) উত্তরা গণভবন ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে।
ছুটির দিনে শীতের সকালে এমনিতেই উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। তবে আজকের ভিড় একটু অন্য রকম। রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন সকাল ১০টা থেকে ২০ টাকায় টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও আজ সকাল ৯টা থেকেই গণভবন দর্শনার্থীতে ঠাসা। সবার শরীরে বর্ণিল পোশাক। মেয়েরা পরেছেন শাড়ি, ছেলেরা পাঞ্জাবি।
গণভবনের প্রধান ফটকে ঢুকে দুই পাশ দিয়ে থাকা হলুদ গাঁদা ফুল দেখে প্রিয়জনের হাত ছেড়ে সবাই ছুটে যাচ্ছেন ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখতে। নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে সামনে এগোতে হচ্ছে। এরপরই চোখে পড়ে বিশাল আকৃতির কালো রঙের কামান। ডান পাশে রাশি রাশি ফুলের বৃত্তাকার বাগান। বাগানে রয়েছে ডালিয়া, রাজ-অশোক, সৌরভী, পারিজাত, হাপরমালি, কর্পূর, হরীতকী, যষ্টিমধু, মাধবী, তারাঝরা, মাইকাস, নীলমণি লতা, বনপুলক, পেয়ালি, সেঁউতি, ও হৈমন্তী ফুলের গাছ।
বাগানের মালিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এবার উত্তরা গণভবনের বাগান সাজাতে অন্তত ৪০ প্রজাতির ২০ হাজারের বেশি ফুলগাছ লাগানো হয়েছে। এসব গাছ দিয়ে খণ্ড খণ্ড বাগান করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফুল ফুটেছে ইতালিয়ান গার্ডেনে। নিরাপত্তার কারণে সেখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। বাগানটি মূল ভবনের দক্ষিণ আঙিনায়। সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে পুরো ভবনের ছবি পাওয়া যায়। দর্শনার্থীদের ঢোকার আগ্রহ থাকে বেশি। তবে বাগানের ভেতরে থাকা শ্বেতপাথরের মূর্তির নিরাপত্তার কথা ভেবে বাগানটি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। তবে ফুলের সংখ্যার দিক থেকে উত্তর আঙিনার বাগানে দর্শনার্থীদের সমাগম বেশি। দক্ষিণ বাগানের আকর্ষণ; পাশেই রানির পুকুর ও শ্বেতপাথর দিয়ে বাঁধানো ঘাট।
ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে নাটোরের উত্তরা গণভবন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র্যাব ডিজি
দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিএইচ