টেসলা, স্পেসএক্স ও নিউরালিংকের প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে একসময় দারুণ বন্ধুত্ব ছিল গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের; কিন্তু কয়েক বছর ধরেই তাঁদের মধ্যে আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে প্রযুক্তিবিশ্বে কানাঘুষা থাকলেও এবার ল্যারি পেজের সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্টের কারণ নিজেই জানিয়েছেন ইলন মাস্ক। নিজের মালিকানাধীন এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিওতে ল্যারি পেজের সঙ্গে তার পুরোনো বন্ধুত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ইলন মাস্ক জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার ও সুরক্ষাপদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধের কারণে ল্যারি পেজের সঙ্গে এখন আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক নেই।

ল্যারি পেজ ছিলেন ইলন মাস্কের ভালো বন্ধুদের একজন। ইলন মাস্ক ওপেনএআই শুরুর সময় গুগলের শীর্ষস্থানীয় এআই বিজ্ঞানী ইলিয়া সুটস্কেভারকে নিয়োগ করেন। এই নিয়োগের কারণেই ইলন ও ল্যারির মধ্যে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। তখন ল্যারি ইলনকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করেছিলেন।

আরও পড়ুনইলন মাস্ক সম্পর্কে চমকপ্রদ ২১ তথ্য, যা হয়তো আপনার অজানা২২ নভেম্বর ২০২২

জানা গেছে, ল্যারি পেজের সিলিকন ভ্যালির বাসায় একসময় থাকতেন ইলন মাস্ক। তাঁদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে ২০১৬ সালে মার্কিন সাময়িকী ফরচুন ইলন মাস্ক ও ল্যারি পেজকে প্রযুক্তি জগতের সেরা বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছিল। তবে এআইয়ের সম্ভাব্য ব্যবহার ও বিপদ সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মতামতের কারণে তাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন২৬ বছর আগের ইলন মাস্কের যে ‘প্রলাপ’ এখন বাস্তব ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ইলন ম স ক র বন ধ ত ব বন ধ ত ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সত্যের পয়গাম

প্রাচীন ইরাকে ‘মেসোপটেমিয়া’ রাজ্যের রাজধানী ছিল বাবেল। মেসোপটেমিয়ার শাসক ছিল নমরুদ। খুবই অহংকারী আর দাম্ভিক। একদিন সে স্বপ্ন দেখল—আকাশে একটি নতুন তারা উদিত হয়ে চাঁদ আর সূর্যের আলোকেও নিষ্প্রভ করে দিয়েছে। স্বপ্নটি নমরুদকে আতঙ্কিত করে তুলল। সে জ্যোতিষীদের ডেকে স্বপ্নটির ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করল। তারা বলল, ‘আপনার রাজ্যে এমন এক শিশুর জন্ম হবে, যার হাতে আপনার ও আপনার রাজত্বের অবসান ঘটবে।’ সেই শিশুর জন্ম কত তারিখে হবে—জ্যোতিষীরা তা-ও বলে বলে দিয়েছিল। নমরুদ নির্দেশ দিল, ওই তারিখে যত পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করবে, প্রত্যেককে হত্যা করা হবে। রাজ্যের সর্বত্র চৌকি বসিয়ে দেওয়া হলো, প্রত্যেক গর্ভধারণকারী নারীকে জেলখানায় আবদ্ধ করা হলো।

আযর নামে এক কাঠমিস্ত্রির স্ত্রীও ছিল সন্তানসম্ভবা, কিন্তু আল্লাহর কুদরতে তার শরীরে গর্ভধারণের চিহ্ন দেখা যেত না। তিনি পালিয়ে এক গুহায় চলে যান, এবং সেখানে ইবরাহিম (আ.)-এর জন্ম হয়। ওদিকে নির্দিষ্ট দিনে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেক ছেলেকে হত্যা করা হলে নমরুদের মন শান্ত হলো। একসময় সে স্বপ্নের কথা ভুলেও গেল।

আরও পড়ুনআবু বকরের (রা.) মা যেভাবে মুসলমান হন০৫ এপ্রিল ২০২৫

ইবরাহিম (আ.) গুহাতেই বড় হতে থাকেন, আল্লাহ-তাআলা সেখানেই তাকে হেদায়েত দেন। তিনি কৈশোরে উপনীত হলে মা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনি আশ্চর্য হয়ে দেখেন শহরের সব মানুষ এক আল্লাহর পরিবর্তে কাঠের দেবদেবীর পূজা করে। আর সেই মূর্তি তৈরি করে কিনা তারই পিতা আযর! (সিরাত বিশ্বকোষ, ১/৩০১-৩০২, ইফাবা)

তিনি সর্বপ্রথম নিজ পরিবারে দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন। তিনি পিতাকে বলেন, ‘আপনি কি মূর্তিকে উপাস্য বলে মানেন? আমি তো আপনাকে আর আপনার সম্প্রদায়কে স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে দেখছি।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৭৪)

কিন্তু আযর তার কথা শুনল না। ইবরাহিম (আ.) ক্ষান্ত হলেন না, তিনি যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন।

বাবেলের অধিবাসীরা বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রে বিশ্বাস রাখত। মনে করত এরাও খোদা। কিন্তু গ্রহ-নক্ষত্র তো আল্লাহর মাখলুকমাত্র, উদিত হয় আবার অস্ত যায়। যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক, তার উদয়-অস্ত হতে পারে না। তিনি চিরঞ্জীব, তার কোনো আদি-অন্ত নাই। এই কথাগুলো বোঝানোর জন্য ইবরাহিম (আ.) কৌশলের আশ্রয় নিলেন, এক সন্ধ্যায় লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘এই যে তারকা, (ধরে নিলাম) এটা আমার প্রভু!’ একটু বাদে যখন তারকাটি ডুবে গেল, তিনি বললেন, ‘যেসব জিনিস ডুবে যায়, তার প্রতি আমার কোনো ভালোবাসা নাই!’ তারপর সব গ্রহ-নক্ষত্রকে আলোহীন করে চাঁদের উদয় হলো। তিনি বললেন, ‘এটাই আমার প্রভু!’ কিন্তু একসময় চাঁদও ডুবে গেল। তিনি বললেন, ‘আমার প্রভু যদি আমাকে পথ না দেখান, তবে নিশ্চয় আমি পথহারাদের দলে শামিল হব।

আরও পড়ুনইসলামের শত্রু আবু জাহেলের মা তিনি ০৪ এপ্রিল ২০২৫

পরদিন যখন সবদিক আলোকিত করে সূর্য উঠলো, তিনি বললেন, ‘এটাই আমার প্রভু, এটাই সবগুলোর চেয়ে বড়!’ এক পর্যায়ে সূর্যও ডুবে গেল, তিনি বললেন, ‘হে আমার জাতি, তোমার যেসব জিনিসকে আল্লাহর অংশীদার মনে করো, আমি তা থেকে মুক্ত। আমি একনিষ্ঠভাবে তার দিকে মুখ ফিরাচ্ছি যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ (তাফসীরে তাবারী, ৯/৪৫৬, ইফাবা)

এ কথা শুনে তার জাতি বাদানুবাদ শুরু করে দিল। তারা বলল, তুমি দেবতাদের ভয় করো, এ ধরনের কথাবার্তা বোলো না। ইবরাহিম (আ.) বললেন, ‘তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে আমার সঙ্গে বাদানুবাদ করছ, অথচ তিনি আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন? তোমরা যে জিনিসকে তার অংশীদার বানিয়েছ, আমি তাকে ভয় করি না। কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছে তা-ই করতে পারেন। প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে আমার প্রতিপালকের জ্ঞান পরিব্যাপ্ত, তোমরা কি তা বুঝবে না?’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৭৬-৮০)

কিন্তু তারা সত্যকে অস্বীকার করল। কাফেরেরা এমনই। তারা না মানে ‘যুক্তি’ আর না মানে যুক্তির ঊর্ধ্বে গিয়ে ‘বিশ্বাস’। তারা কেবল অন্ধের মতো নফসের অনুসরণ করে যায়।

আরও পড়ুনমদিনায় মুনাফেকির উদ্ভব কেন হয়েছিল০৩ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে
  • গাজীপুরে ত্রেখাইল্লা খালের মুখ ভরাট, জলাবদ্ধতার শঙ্কায় কৃষকরা
  • সত্যের পয়গাম