হকারের বাড়িতে উড়ো চিঠি, চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি
Published: 14th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উড়ো চিঠিতে রেজাউল ইসলাম (৫৭) নামে এক গামছা বিক্রেতার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার মধ্যে টাকা না দিলে বা পুলিশকে জানালে রেজাউল করিমের দুই নাতিকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত দুই মাসে উড়ো চিঠিতে তিনবার চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
রেজাউল ইসলাম উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি ফুটপাতে গামছা বিক্রি করেন। এ ঘটনায় রেজাউল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে রেজাউল জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত কে বা কারা তারা বাড়ির জানালা ভাঙে। শব্দ পেয়ে তিনি বাইরে এসে দেখেন একটি হাতে লেখা চিঠি পড়ে রয়েছে। চিঠিতে তার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ অথবা কাউকে জানালে তার নাতিসহ তাকেও গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি সড়ক থেকে ২০০ মিটার নিচে রেজাউলের চার কক্ষবিশিষ্ট টিনসেড ঘর। স্ত্রী, ছেলে, ছেলের স্ত্রী, নাতি-নাতনিসহ সাতজনের বসবাস। ঘরের একটি কাঁচের জানালা ভাঙা।
এ সময় রেজাউলের মেয়ে রিমা খাতুন বলেন, ‘‘কারো সাথে শত্রুতা নেই। তবুও কে বা কারা চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বুঝতে পারছি না। গেল দুই মাসে তিনবার এ ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরা আতঙ্কিত।’’
দুর্বৃত্তের রেখে যাওয়া চিঠি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে ভাঙা ভাঙা অক্ষরে লেখা রয়েছে: ‘ভয় নাই আজ মারবো নানে। চলে গেলাম। তোর দুই নাতি ছেলের মাথার দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে তিন লাখ টাকা নিয়ে চলে আসবি। আর এটা আমার এলাকা। তাই পুলিশ বা অন্য কোনো ঝামেলা না করলে তোর ভালো হবে। আর যদি কিছু করিস। তাহলে, রেজাউল তুই বাড়ির বাইরে আসলে আগে তোকে পাখির মতো গুলি করে মারব মনে রাখিস।’
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী রেজাউল বলেন, ‘‘কারা কেনো এমন করছে জানি না। পরিবার নিয়ে খুব ভয়ে আছি। বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এর আগেও ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম।’’
উড়ো চিঠিতে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির বিষয়ে লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
কাঞ্চন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর চারপাশে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর চারপাশে ভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে লুকানো সেই বৈদ্যুতিক শক্তির খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। শান্ত কিন্তু শক্তিশালী এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ু ও মহাকাশের সংযোগে প্রধান ভূমিকা পালনও করে থাকে এই শক্তি। নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের খোঁজ মিলেছে।
পৃথিবীর অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে, এর ফলে সেখানে পরমাণু চার্জযুক্ত কণা ভেঙে হালকা ইলেকট্রন ও ভারী আয়নে পরিণত হয়। সাধারণভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আয়নকে নিচে টেনে নিয়ে আসে আর ইলেকট্রন হালকা বলে ওপরে ভেসে থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক চার্জ আলাদা থাকতে চায় না। ইলেকট্রন পালাতে শুরু করলে তার সঙ্গে আয়নকে একসঙ্গে ধরে রাখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় আর ইলেকট্রনকে ধীর করে দেয়। এই ভারসাম্যকে বিজ্ঞানীরা অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বলেন। এটি একটি অদৃশ্য টানাটানির মতো কাজ করে। চার্জকে আলাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে এই ক্ষেত্রের উপস্থিতি দেখা যায়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু বেশ শক্তিশালী।
নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন বলেন, অ্যাম্বিপোলার ক্ষেত্র কণাকে উত্তপ্ত করার পরিবর্তে শান্তভাবে কণাকে ওপরে নিয়ে যায়, যেখানে অন্যান্য শক্তি সেগুলোকে আরও ওপরের মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ক্ষেত্র হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। মাধ্যাকর্ষণের ঊর্ধ্বমুখী শক্তির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই শক্তি।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত চার্জযুক্ত কণার তথ্য জানতে ২০২২ সালের ১১ মে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল নাসার এনডুরেন্স মিশন। রকেটটি পৃথিবীর ওপরে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: আর্থ ডটকম