হলিউডে অ্যাকশন, থ্রিলার ও হরর মুভির পাশাপাশি বক্স অফিস কাঁপিয়ে বেড়ায় রোমান্টিক ছবিগুলোও। বহু ছবি যুগে যুগে ভালোবাসার বার্তা দিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে হলিউডে। এবারের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো হলিউডের দর্শকনন্দিত কয়েকটি রোমান্টিক সিনেমার কথা…

কাসাব্ল্যাঙ্কা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। যুক্তরাষ্ট্র যদিও তখনও যুদ্ধে যোগ দেয়নি, কিন্তু ইউরোপ মোটামুটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে বাঁচার আশায় দলে দলে মানুষ ইউরোপ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে সরাসরি যাওয়ার উপায় নেই। যেতে হয় প্যারিস, মার্সেই, ভূমধ্যসাগর, ওরান, কাসাব্ল্যাঙ্কা, লিসবন, যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে। এখন সমস্যা হচ্ছে কাসাব্ল্যাঙ্কা পর্যন্ত আসতে পারলেও এখান থেকে লিসবন যাওয়ার অনুমতিপত্র জোগাড় করা খুবি কঠিন। তাই কাসাব্ল্যাঙ্কায় দিন দিন বাড়ছে উদ্বাস্তুর সংখ্যা, যারা কিনা বৈধ-অবৈধ যেকোনো উপায়ে অনুমতিপত্র জোগাড় করতে ইচ্ছুক। আবার এটি জোগাড় করে দেওয়া নিয়ে কালোবাজারে চলছে রমরমা ব্যবসা। শুধু অর্থই নয়, সেই সঙ্গে উঁচু পর্যায়ের দহরম-মহরম ছাড়া এ অনুমতিপত্র জোগাড় করা মোটামুটি অসম্ভব। কাসাব্ল্যাঙ্কায় জনপ্রিয় ক্যাফে চালায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত রিক ব্লেইন। ঘটনাক্রমে ট্রানজিটের দুটো কাগজ পায় ব্লেইন। এই শহরেই সে আবিষ্কার করে সাবেক প্রেমিকা ইলসাকে। ইলসার স্বামী লাজলো চেকেস্লোভাকিয়ার বিদ্রোহী নেতা, জার্মানরা যাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। ইলসা জানে, কেবল ব্লেইনই সাহায্য করতে পারবে তাদের। ঈর্ষাকাতর ব্লেইন কি সাহায্য করবে? সে কি ছিনিয়ে নেবে তাঁর ভালোবাসাকে, নাকি পালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে তাকে। প্রেমিকার স্বামীর ব্যাপারে বা কি পদক্ষেপ নেবে সে? এ উত্তরগুলো পেতে আপনাকে দেখতে হবে সিনেমাটি। ১৯৪২ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মাইকেল কার্টিজ। এতে অভিনয় করেছেন হামফ্রি বোগার্ট, ইনগ্রিড বার্গম্যান প্রমুখ। ছবিটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।

গন উইথ দ্য উইন্ড
১৯৩৯ সালের ছবি। গৃহযুদ্ধ চলাকালীন জর্জিয়ার এক তুলা বাগানের প্রেক্ষাপটে এ ছবির গল্প গড়ে উঠেছে। খামার মালিকের চঞ্চল কন্যা স্কারলেট ভালোবাসে এসলে উইলকেসকে। ওদিকে এসলের সঙ্গে মেলানি হেমিল্টনের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। এসলের কাছে প্রশ্রয় না পেয়ে স্কারলেট নজর দেয় রেথ বাটলারের দিকে।  দুরন্ত রেথ বিয়েতে আগ্রহী নয়। এক রকম জেদের বশেই স্কারলেট অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে। তবুও এসলের প্রতি তার টান যায় না। স্কারলেট দুটি বিয়ে করেও সুখী হতে পারে না। যুদ্ধের দামামায় সে রেথকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যায়। রেথও শেষ পর্যন্ত তার কাছে ধরা দেয় না। গৃহযুদ্ধ আর স্কারলেটের অস্থিরতা পাশাপাশি চলে। নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেও স্কারলেট দেখে তার বাবার বাড়ি-ঘর সব ভেঙে গেছে। খামারের একবিন্দু অংশও অবশিষ্ট নেই। ভিক্টর ফ্লেমিং পরিচালিত এ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে মার্গারেট মিচেলের লেখা একই নামের উপন্যাস থেকে। ১০৩৭ পৃষ্ঠার ঢাউস উপন্যাস ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে। এ উপন্যাস পুলিৎজার পুরস্কারও পায়। প্রযোজক ডেভিড ও সেলজনিক উপন্যাস ছাপা হওয়ার পর পরই লেখকের কাছ থেকে এর চলচ্চিত্র কিনে নেন ৫০ হাজার ডলারে। তখন পর্যন্ত এটিই ছিল কোনো উপন্যাসের সর্বোচ্চ দাম। প্রায় ৫০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এ ছবি ১৯৩৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর আটলান্টায় মুক্তি পায়। মুক্তির আগে ছবির প্রচারণা চলে তিন বছর ধরে। মুক্তি পাওয়ার পর শুধু হলিউডে নয়, সারা বিশ্বেই এ ছবি একটি ইতিহাস হয়ে ওঠে। অস্কারে ১৩ নমিনেশন ও ১০টি পুরস্কার পায় এ ছবি।

রোমান হলিডে

রাজকুমারী অ্যান বেরিয়েছেন ইউরোপ ভ্রমণে। ছুটিতেও শান্তি নেই। সব সময় নিরাপত্তারক্ষীদের বর্মের আড়ালে থাকলে কি আর ছুটি কাটানো যায়? এক রাতে হোটেল ছেড়ে পালিয়ে গেল অ্যান। তার সঙ্গে দেখা হলো রোমে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে আসা মার্কিন সাংবাদিক জোয়ের। অ্যান তখন ঘুমিয়ে ছিল বেঞ্চিতে। জো নিজের ঘরে নিয়ে এলো অ্যানকে। দু’জনের মনের কোণে উঁকি দিল প্রেমসূর্য।  জো আবিষ্কার করল, অ্যান আর কেউ নয়, মহামান্য রাজকন্যা! এমনই এক গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমা ‘রোমান হলিডে’। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি পরিচালনা করেছেন উইলিয়াম ওয়াইলার। এ সিনেমাটি চলচ্চিত্রপ্রেমীর কাছে ভালোবাসার ছবি, আবেগের নাম। চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের রায়ে ধ্রুপদি সিনেমা। এ সিনেমার শেষ দৃশ্য বুকের মধ্যে যেমন হাহাকার জাগায়, মন খারাপ করিয়ে দেয়। অড্র্রে হেপবার্ন ও গ্রেগরি পেক অভিনীত ‘রোমান হলিডে’ তিনটি অস্কারসহ, গোল্ডেন গ্লোব ও আমেরিকান রাইটার্স গিল্ডের পুরস্কারও পায়। এ ছাড়াও আরও অনেক পুরস্কার অর্জন করে সিনেমাটি। এছাড়াও অনেক পুরস্কারের জন্যে নমিনেশনও পায়। হয়তো এত অর্জন বলেই সিনেমাটি নিয়ে কাটাছেঁড়াও কম করেননি সুশীল সমাজ। বেলজিয়ান অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন এ ছবির মাধ্যমে হলিউড এবং সারাবিশ্বের নজর কাড়েন। এর আগে রেইনি ডে ইন প্যারাডাইস জাংশন ছবিতে তিনি অভিনয় করলেও এটিই তাঁর প্রথম বড় চরিত্র। শুধু কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগই নয়, এ ছবির কল্যাণে তিনি অস্কার, নিউইয়র্ক ফিল্ম ক্রিটিক সার্কেল এবং বাফটায় সেরা অভিনেত্রীর ক্যাটেগরিতে পুরস্কার জেতেন। গ্রেগরি প্যাক এবং অড্রে হেপবার্ন দু’জনেই চেয়েছিলেন এ ছবির সিক্যুয়াল তৈরি হোক। ১৯৭০ সালে রানী অ্যানের মেয়ে এবং লেখক জোর ছেলেকে নিয়ে একটা গল্পও তৈরি করা হয়। শেষ পর্যন্ত সে ছবি আলোর মুখ দেখেনি। রোমান হলিডে সিনেমার পরে আরও অনেক সিনেমা হয়েছে কাছাকাছি কাহিনি নিয়ে। মেকিং, গল্পসহ জনপ্রিয়তায় এর ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারেনি একটিও। বিশেষ করে ১৯৪০ সালে হার হাইনেস অ্যান্ড দ্য বেলবয় এবং ১৯৪২ সালে প্রিন্সে ও’ রুকে উল্লেখযোগ্য। যত কথাই হোক না কেন, অসাধারণ সিনেমা সবসময়ে অসাধারণই থেকে যাবে।

ওয়েস্ট সাইড স্টোরি

শেক্সপিয়ারের অমর সৃষ্টি রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট-অনুপ্রাণিত এ ছবির গল্প। নিউইয়র্ক শহরে রাস্তার দুই মাস্তান দলের মধ্যে মহাবিরোধ। জেটস বনাম শার্কস একে অপরের ছায়াও সহ্য করতে নারাজ। দুই শত্রুগোষ্ঠীর দুই তরুণ-তরুণীর মধ্যে অলৌকিক প্রেম বাসা বাঁধে। জেটস দলের নেতা টনি প্রেমে পড়ে শার্কস দলনেতা বার্নার্ডোর বোন মারিয়ার। কী ভবিষ্যৎ এই প্রেমের? মিউজিক্যাল ধাঁচের এ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬১ সালে। ছবির পরিচালক রবার্ট ওয়াইজ ও জেরম রবিনস।

অ্যান অ্যাফেয়ার টু রিমেম্বার

নিকি হচ্ছে ‘প্লেবয়’, প্রেম তার কাছে ছেলেখেলাই। ইউরোপ থেকে নিউইয়র্কের জাহাজে করে যাওয়ার সময় নিকের সঙ্গে পরিচয় টেরির। দু’জনের মধ্যে হয়ে গেল প্রেম। কথা ছিল ছয় মাস পর এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের ছাদে আবার দেখা হবে দু’জনের। দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে টেরি যেতে পারল না নির্দিষ্ট দিনে। অপেক্ষা করে ভাঙা মন নিয়ে ফিরে এলো নিকি। ভাবল, হয়তো টেরি সত্যিই তাকে ভালোবাসেনি। হয়তো সে বিয়েথাও করে ফেলেছে। কখনোই কি দেখা হবে না নিকি-টেরির? পরিচালনা করেছেন লিও ম্যাকক্যারি। ১৯৫৭ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন ক্যারি গ্র্যান্ট এবং ডেবরা কের। 

দ্য ওয়ে উই ওয়্যার

কেটি আর হাবেল পড়ত একই কলেজে। দু’জনের জীবনদর্শন একেবারে আলাদা। কেটি মনেপ্রাণে সাম্যবাদী। স্পেনের গৃহযুদ্ধ কিংবা ইউরোপে হিটলারের উন্মেষ কোনোটাই সে ভালো চোখে দেখে না। কঠোর পরিশ্রম করে তাকে খরচ মেটাতে হয় পড়াশোনার। হাবেল খেলাধুলা নিয়ে মেতে থাকে। রাজনীতির ধার ধারে না। দুই ভিন্ন জগতের দুই বাসিন্দার দেখা হয় বহু বছর পর। পরিচালক সিডনি পোলাক। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে।

সিটি লাইটস

পথের ধারে ফুল বেচে অন্ধ এক মেয়ে। তার ফুল কিনতে গিয়ে এক ভবঘুরে আবিষ্কার করে, মেয়েটি নিজেই সদ্য ফোটা নিষ্পাপ এক ফুল যেন। মেয়েটার প্রেমে পড়ে যায় সেই হতদরিদ্র ভবঘুরে। মেয়েটি ভাবে, ছেলেটা বুঝি অনেক ধনী পরিবারের কেউ। ভবঘুরেটি চায়, মেয়েটি ফিরে পাক দৃষ্টি। এর জন্য চাই অনেক টাকা। সেই টাকা জোগাড়ের চেষ্টায় নামে ভবঘুরেটি। এমনকি এর জন্য জেলেও যেতে হয়। মেয়েটি চোখের দৃষ্টি ফিরে পায়। আবিষ্কার করে, তাঁর স্বপ্নের রাজপুত্র আসলে হতদরিদ্র একজন। চার্লি চ্যাপলিনের সেরা সৃষ্টিগুলোর একটি। ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবিটি নির্বাক, কিন্তু বাঙময়!

টাইটানিক

মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিকাপ্রিও এবং কেট উইন্সলেট। নর্থ আটলান্টিক সমুদ্রের বুকে সৃষ্টি একটি মানবিক প্রেম এবং তার করণ সমাপ্তি নিয়ে তৈরি টাইটানিক ছবিটি। ১৯৯৭ সালে নির্মিত একটি ট্র্যাজেডিক প্রেমকাহিনি টাইটানিক। বিপুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে এই ছবিটি অস্কার জয় করে।

প্রিটি ওম্যান

মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিচার্ড গিয়ার এবং জুলিয়া রবার্ট। ভালোবাসা যেকোনো সময় মনের কোণে এসে উঁকি দিতে পারে। প্রিটি ওম্যান ছবিতে এক সম্পদশালী পুরুষের কাছে তাই প্রেম হয়ে এসেছিল বন্ধনহীন প্রেমহীন এক নিশীথচারিণী। ১৯৯০ সালে নির্মিত ভীষণ সাবলীল ও সুন্দর এক প্রেমের ছবি প্রিটি ওম্যান।

রোমিও জুলিয়েট

বিশ্ববিখ্যাত লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের কালজয়ী ট্র্যাজেডি গল্প অবলম্বনে ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয় রোমিও জুলিয়েট। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিকাপ্রিও এবং ক্লেয়ার ডেনিস। এর আগেও অনেকবার এ প্রেমকাহিনি নিয়ে ছবি নির্মিত হয়েছে। দুটি ভিন্ন পরিবারের পূর্ববর্তী রেষারেষি এবং আভিজাত্যের অহংকারকে পেছনে ফেলে দু’জন মানুষ প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যায়। নানা রকম টানাপোড়েনের পর তাদের বিয়ে হয় এবং তথ্যগত ভুলের কারণে জীবনে একসময় নেমে আসে প্রেম উপাখ্যানের ট্র্যাজেডি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ম ন হল ড ন র ম ত হয় চলচ চ ত র উপন য স ও অন ক ব ল ইন পর চ ল র জন য ইউর প জনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ার কাছে রেকর্ড রানও নিরাপদ নয়!

ওয়ানডে ক্রিকেটে তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কেন তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারই আরেকটি প্রমাণ মিলল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মঞ্চে। ইংল্যান্ডকে স্রেফ নাকানিচুবানি খাইয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির যাত্রা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া।

লাহোরে দুই দলই ইতিহাসের পাতায় নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে। ইংল্যান্ড আগে ব্যাটিং করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান ৩৫১ জমা করে। এই রানও অস্ট্রেলিয়ার কাছে নিরাপদ নয়। পাল্টা জবাব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেটে, ১৫ বল হাতে রেখে।

ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেট চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান করেছিলেন প্রথম ইনিংসে। ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। তার দেড়শ’র জবাব সেঞ্চুরিতে দিয়েছেন জশ ইংলিস। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার বিজয়ের রূপকথা লিখা হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

সাকিবসহ ১০৪ ক্রিকেটারের দলবদল সম্পন্ন, আগামীকাল করবেন তামিম

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের কোনো উত্তাপ টের পাচ্ছে না ভারত!

অজি দলে নিয়মিত একাধিক ক্রিকেটার নেই। কামিন্স, স্টার্ক, মার্শ, হ্যাজেলউড, স্টয়নিসকে ছাড়া অস্ট্রেলিয়া দলটি কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিল সমর্থকরা। কিন্তু স্কোয়াডের গভীরতা যে এতোটা বেশি তা কেউ ভাবতে পেরেছিল?

তার ওপরে ট্র্যাভিস হেড (৬), অধিনায়ক স্মিথ (৫) ও মার্নাস লাবুসানে (৪৭) ফেরার পর সাড়ে তিনশর বেশি রান তাড়া করা যাবে এমন ভাবনার লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল ছিল। কিন্তু পাঁচে নামা জশ ইংলিস সব হিসেব পাল্টে দিলেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন অ্যালেক্স ক্যারি। দুজন মিলে পঞ্চম উইকেটে ১১৬ বলে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন।

ক্যারি ফিফটি ছুঁয়ে ৬৯ রানে ফিরে গেলে ইংলিস তুলে নেন ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরি। তাতে লিখা হয়ে অনবদ্য এক বিজয়ের গল্প। ৮৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ইংলিস তার ইনিংসটি সাজান। এছাড়া ম্যাক্সওয়েল ১৫ বলে ৩২ রান করেন ৪ চার ও ২ ছক্কায়।

এর আগে বেন ডাকেটের একক ব্যাটিং প্রদর্শনীতে রানের পাহাড়ে চড়ে ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৮তম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন। প্রায় পৌনে চার ঘণ্টার ইনিংসে ১৭ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন জো রুট। ১৫৫ বলে ১৫৮ রান যোগ করেন দুজন। রুট ৭৮ বলে ৬৮ রান করে ফিরে গেলেও ডাকেট তুলে নেন ওয়ানডে ক্রিকেটের তৃতীয় সেঞ্চুরি।

এই দুই ব্যাটসম্যান বাদে বিশের ঘর পেরিয়েছেন কেবল জস বাটলার ও জোফরা আর্চার। বাটলার ২১ বলে ২৩ ও আর্চার ১০ বলে ২১ রান করেন। শেষ দিকে আর্চারের অতি গুরুত্বপূর্ণ রানের সুবাদে ইংল্যান্ডের রান সাড়ে তিনশ পেরিয়ে যায়।

ইনিংসের শুরুতে অ্যালেক্স ক্যারি দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে আলো কেড়ে নেন। বেন  ডোয়ার্শুইসের বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়েছিলেন। সেখানে ক্যারি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে অসাধারণ দক্ষতায় বল তালুবন্দি করেন।

অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে তেমন ঝাঁজ ছিল না। ডোয়ার্শুইস ৬৬ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা ও মার্নাস লাবুসানে।

প্রথমে রেকর্ড রান গড়া। সেই রান তাড়া করে জয়। দুই ইনিংসে দুটি অনবদ্য সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে বলা যায় ওয়ানডে ক্রিকেট দারুণ একটি দিন কাটাল। আর ক্রিকেটপ্রেমীরাও সেটা মনভরে উপভোগ করলো।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ