ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত
Published: 14th, February 2025 GMT
যশোরের কেশবপুরে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু, ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তালা দেয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এর আগে, গত বুধবার তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরে নাটোর যায় শিক্ষার্থীরা। রাতে সেখান থেকে ফেরার পরে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বনাথ আইচ ওই ছাত্রীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যান। পথে মেয়েটির শ্লীলতাহানি ঘটান তিনি।
এ বিষয়ে কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর বলেন, ‘‘বুধবার ছাত্রীর বাবার অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী, ওই শিক্ষককে সেদিনই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু, এলাকাবাসী তার স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ কারণে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রেণিকক্ষের তালা খোলা হয়েছে।’’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক বিশ্বনাথ আইচের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কেশবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মকর্তা এ এস এম জিল্লুর রশীদ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বনাথ আইচকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
ঢাকা/রিটন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক বরখ স ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।