দেড় যুগের বেশি সময় ধরে টিভি নাটকে অভিনয় করছেন দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। অভিনয় নৈপুণ্য ও রূপের জাদুতে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। মাঝে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চিত হয়েছেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এসব বিষয় নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা হয় এই অভিনেত্রীর।

আলাপচারিতার শুরুতে জানান, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই তার। প্রভা বলেন, “আমার মনে আছে, সর্বশেষ ভ্যালেন্টাইন ডেতে আমরা ফাল্গুন পালন করেছিলাম সন্ধ্যা পর্যন্ত। তারপর ভাই-বোনকে নিয়ে ডিনার করেছিলাম। তবে এবার এরকম কোনো প্ল্যান নেই।”

ভালোবাসা দিবসের স্মৃতিবহুল ঘটনা বর্ণনা করেছেন প্রভা। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফিরে যান ৪ বছর আগে। এ অভিনেত্রী বলেন, “২০২১ সালে যে আমার প্রেমে ছিলেন উনি রোজ ডেতে অনেকগুলো ফুল দিয়েছিলেন, টেডি ডেতে টেডি, প্রমিজ ডেতে প্রমিজ নোটস, ভ্যালেন্টাইনের সাতটি দিনই সেলিব্রেট করেছিলেন। একটু ক্রেজ ছিল আবার একটু সুইটও।”

আরো পড়ুন:

আপনি অনেক সুন্দর, শাকিব খানকে প্রভা

যুক্তরাষ্ট্রে কী করছেন প্রভা?

প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো দোষের কিছু না বলে মনে করেন প্রভা। তার ভাষায়, “প্রেম দোষের কিছু না। চলার পথে কাউকে ভালো লাগতে পারে। মনে হতে পারে এর সঙ্গে চলা যেতে পারে। আবার দুইটা মানুষের সম্পর্ক একটা সময় নাও থাকতে পারে। এটা অন্যয় কিছু না। দোষটা তখনই হয় যখন একটা মানুষের সঙ্গে কমিটেড থেকে অন্য একটা মানুষকে ভালোবাসে।”

কাউকে ভালোবাসলে সেরাটা দিয়েই ভালোবাসেন প্রভা। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি জানি এটা হবে না; এরকম একজন মানুষকে নিয়ে কোনোদিন চিন্তাও করি না। কিন্তু এরকম একটা মানুষকেও আমাদের ভালো লেগে যায়! একটা সময় ভালোওবেসে ফেলি। এই স্পার্ক সবার জন্য সমান হয় না। আমি যখন দেখি আমার জন্য ওর আগ্রহ আছে, তখন চিন্তা করি ভালোবাসা যায় কি না। আমি যখন ভালোবাসি তখন আমার সেরা এফোর্টটাই দিই।”

ব্যক্তিগত জীবনে প্রভা কি একা নাকি সম্পর্কে রয়েছেন? এ প্রশ্ন তার অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীর। প্রিয় মানুষদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রভা বলেন, “আপাতত কোনো প্রেম করছি না। কখন হয়ে যায় এটা কেউ জানে না। যদিও একটা বয়সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আমরা এতটা ক্যালকুলেটিভ না। আমার দুর্বলতা আমাকে কেউ ভালোবাসলে, আমার মাথায় কেউ হাত রাখলে, আমার জন্য কেউ কখনো কিছু করলে আমি ভুলতে পারি না।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে, ছড়াও ফুলের বন্যা

‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ/ দুপুর বেলার অক্ত/ বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়?/ বরকতের রক্ত।/ হাজার যুগের সূর্যতাপে/ জ্বলবে, এমন লাল যে,/ সেই লোহিতেই লাল হয়েছে/ কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে!/ প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে/ ছড়াও ফুলের বন্যা,/ বিষাদগীতি গাইছে পথে/ তিতুমীরের কন্যা।’ 

কবি আল মাহমুদের লেখা এ কবিতার চরণ অনুসরণ করে দেশের সব রাজপথ গিয়ে মিশে যাবে আজ শহীদ মিনারে।
পলাশ আর শিমুল ফোটা ফাগুনের মিষ্টিমাখা হালকা শীতে কোকিলডাকা সূর্যোদয়ে দেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে বীর সন্তানদের। বুকের তাজা খুন ঢেলে মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করে গেছেন সেই শহীদরা। নগ্ন পায়ে শহীদ মিনারমুখী লাখো মানুষের কণ্ঠে থাকবে বিষাদমাখা চিরচেনা সেই গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।’ কি শিশু, কি বুড়ো– দল-মত নির্বিশেষে সবাই হাজির হবেন ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। শ্রদ্ধা-ভালোবাসা আর মমতার ফুলে ভরে উঠবে বাঙালির শোক আর অহংকারের প্রতীক শহীদ মিনার।
চির প্রেরণার অমর একুশের ৭৩ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ভাই হারানোর বেদনা বুকে ধারণ ধরে বিশ্বজুড়ে বাঙালির আজ যুগপৎ শোক ও গর্বের দিন।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনের সোনাঝরা রোদ্দুরে নিজ ভাষায় কথা বলার দাবিতে, মায়ের মুখের ভাষার সম্মান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে প্রকাশ্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন বাংলা মায়ের বীর সন্তানেরা। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের সেই স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস আজ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর দিন।
পৃথিবীর বুকে ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে একমাত্র বাঙালি জাতি। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির চেতনার প্রতীক। এই শহীদদের ঠাঁই প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মর্মমূলে। পরম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় উচ্চারিত হয় ভাষাশহীদদের একেকটি নাম। তাদের স্মরণে সারাদেশে, অগণিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং বিদেশে যেখানে রয়েছে বাঙালি, সেখানে গড়ে ওঠে শহীদ মিনার। অমর একুশে তাই আত্মত্যাগের অহংকারে ভাস্বর মহান একটি দিন; জেগে ওঠার প্রেরণা। দেশমাতৃকার প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গ করার শপথ গ্রহণের দিন।

এ বছর মাতৃভাষা দিবস সারাদেশে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পালিত হচ্ছে। গত বছর জুলাই-আগস্টে সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয় তরুণ-যুবারা। তাদের সম্মিলিত আন্দোলনে অভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮১ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাণের বিনিময়ে মুক্তবাক, মুক্তচিন্তা ও গণতন্ত্রের পথে দেশকে উত্তরণে অবদান রেখে গেছেন জুলাই শহীদরা। তাদের এই আত্মত্যাগ বায়ান্নর অবিস্মরণীয় ভাষা আন্দোলনের প্রতিবাদী চেতনাকেই ধারণ করে।
এবার দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধান  উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও দেশের ভাষাগুলোর মর্যাদা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

আয়োজন, কর্মসূচি
রাষ্ট্রীয় আয়োজনে একুশের অনুষ্ঠানমালার সূচনা হবে রাত ১২টা ১ মিনিটে, ঢাকা মেডিকেল কলেজসংলগ্ন একুশের রক্তাক্ত স্মৃতিবিজড়িত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে।
প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার। এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হবে শ্রদ্ধা।
সারাদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাষাশহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সকাল সাড়ে ৬টায় উপাচার্য ভবনের সামনে ‘স্মৃতি চিরন্তন’ চত্বর থেকে মৌন মিছিল ও প্রভাতফেরি বের করা হবে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এতে নেতৃত্ব দেবেন। মৌন মিছিল ও প্রভাতফেরিটি উদয়ন স্কুল হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাবে। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেবেন।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে– শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে কালো ব্যাজসহ প্রভাতফেরিতে অংশ নেওয়ার জন্য বলাকা সিনেমা হলের সামনে দলীয় নেতাকর্মীকে জমায়েত হতে বলা হয়েছে। তারা আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের মাজার জিয়ারত এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করবেন।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেড় দশক পর গৌরনদীতে ভাষাসৈনিক কাজী গোলাম মাহবুবকে নিয়ে অনুষ্ঠান
  • চাঁদাবাজি কেন সহ্য করব, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: জামায়াত আমির
  • আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নই: জামায়াত আমির
  • শহীদ দিবসের ফুল কুড়াতে যাওয়া শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
  • রিয়াদে মহান শহীদ দিবস পালিত
  • সীতাকুণ্ডে শিবচতুর্দশী মেলা শুরু মঙ্গলবার
  • শহীদদের প্রতি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধা
  • তানিয়া বৃষ্টির সঙ্গে বিয়ের ছবি ভাইরাল, যা বললেন শামীম হাসান
  • ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে ৩ নাটক
  • প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে, ছড়াও ফুলের বন্যা