ডিসেম্বরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের চিন্তা, কোন দল কী ভাবছে
Published: 14th, February 2025 GMT
এ বছরের ডিসেম্বরের শেষার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
তবে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন চায়।
এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার থেকে ছয়টি কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আলোচনা কত দিন চলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি পথনকশা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ জন্য ১১টি সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে আগামীকাল থেকে।
বিএনপি সূত্র জানায়, মূলত নির্বাচন প্রশ্নে যাতে দলগুলো অভিন্ন অবস্থান নেয়, সে লক্ষ্যে এসব আলোচনা চলছে। পাশাপাশি নির্বাচনে আসন সমঝোতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংস্কারে জোর দিলেও বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এমন অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকার না এলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও আলোচনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে আর আরেকটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মাথায় এসে নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচন আয়োজন করার কথা ভাবছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিও আছে কোনো কোনো পক্ষের। এ বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে এক অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁর সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করবে। এ বছরের ডিসেম্বরে তা হতে পারে। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা করছেন। তারপরও আরও কিছু সংস্কারের জন্য যদি সময় নেওয়া হয়, তাহলে সেটা আগামী বছরের তিন মাস হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের সরকারের সময়সীমা। তারপর ১৬ বছরের মধ্যে একটি যথাযথ নির্বাচন—একটি বিশ্বাসযোগ্য, দৃশ্যমান ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে আমরা সন্তুষ্ট হব। জনগণ এটা উদ্যাপন করবে এবং আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ব্যাপারে প্রথম থেকেই দুটো সময়সীমার কথা বলে আসছিলেন। একটা হচ্ছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে, আরেকটা হচ্ছে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে। প্রধান উপদেষ্টার কথা শুনে যেটা বুঝতে পারি সেটা হচ্ছে, সরকারের প্রথম লক্ষ্য থাকবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলা এবং তার আগে অবশ্যই কিছু মৌলিক সংস্কার সাধন করা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। কোনো কারণে যদি এই ডিসেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব না হয়, তাহলে দু–এক মাস বা তিন মাস পেছানো; কিন্তু এটা জুনের আগে হবেই।’
একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, ততটুকু সংস্কার হোক। পরবর্তী সংস্কারগুলো একটি নির্বাচিত সরকারকে অবশ্যই করতে হবে। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, রাজনৈতিক বিশ্লেষকনির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিনির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে একাধিকবার বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ধরে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসি সূত্র জানায়, তারা মনে করছে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হবে। নির্বাচনের আগে মোটাদাগে বড় প্রস্তুতির মধ্যে আছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক নিবন্ধন এবং প্রয়োজনীয় কেনাকাটার মতো কাজগুলো শেষ করা। এগুলোর জন্য একটু লম্বা সময় প্রয়োজন হয়। এর বাইরে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, ব্যালট পেপার তৈরির মতো কাজগুলো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শুরু করা হয়।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে। আগামী জুনের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে। তবে এই হালনাগাদের তথ্য ভোটার তালিকায় যুক্ত হবে আগামী বছরের মার্চে। এর আগে নির্বাচন হলে এবং হালনাগাদে যাঁরা ভোটার হচ্ছেন, তাঁদের ভোটাধিকার দিতে হলে আইনে কিছুটা সংশোধনী আনার প্রয়োজন হতে পারে।
ইসি সূত্র জানায়, সীমানা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের মতো কাজগুলো এখনই ইসি শুরু করতে পারছে না। কারণ, এসব বিষয় নিয়ে সংস্কার কমিশনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে আইন ও বিধির সংশোধন প্রয়োজন। এ ছাড়া নির্বাচন-সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেও অনেকগুলো সংশোধনী প্রস্তাব করেছে সংস্কার কমিশন। তারা এখন মূলত এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হলে অধ্যাদেশ করে আইন পরিবর্তন করে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে ইসি। অন্যদিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে ইসি।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে প্রস্তুতিবিএনপি দ্রুত নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টার পাশাপাশি নির্বাচনী প্রস্তুতিও নিচ্ছে। নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ কিছু দাবিতে গত বুধবার থেকে কর্মসূচি শুরু করেছে দলটি। পাশাপাশি সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং জামায়াতে ইসলামীর বাইরে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের সঙ্গেও বিএনপির আলোচনা চলছে। বিএনপি সূত্র জানায়, মূলত নির্বাচন প্রশ্নে যাতে দলগুলো অভিন্ন অবস্থান নেয়, সে লক্ষ্যে এসব আলোচনা চলছে। পাশাপাশি নির্বাচনে আসন সমঝোতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে।
সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। বিএনপি সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে কাজ করছে। এতে স্থায়ী কমিটি আশাবাদী হয়েছে। তবে তারা নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছে না।
গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, যত দ্রুত জাতীয় নির্বাচন হবে, ততই রাজনীতি সহজ হবে, বাংলাদেশের মানুষ স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে আসবে। নির্বাচনটা হওয়া দ্রুত দরকার দুটি কারণে। একটি হচ্ছে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসা, অন্যটি সুশাসন চালু করা।
বিএনপির এক সময়ের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা ইতিমধ্যে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে। স্থানীয়ভাবে কিছু আসনের প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তারা বিএনপির মতো নির্বাচনের জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। গতকাল জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে ২৩ দফা দাবি জানায়।
বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস’। তিনি বলেন, অন্তত নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান ও বিভাগ জড়িত, সেগুলোর সংস্কার করেই জাতীয় সংসদের নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। গত তিনটি নির্বাচনে জনগণ যে ভোট দিতে পারেনি, সেই নির্বাচনেরই পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তিনটি বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে গুম-খুন করে এই দল স্বৈরাচারী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছিল—এমন অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা বা নির্বাচন থেকে দূরে রাখার দাবি আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
রাজনৈতিক কিছুটা মতভিন্নতা থাকলেও সংস্কার ও নির্বাচনকে একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন নিজেই সংস্কারের অংশ। তবে নির্বাচনের আগে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। আর সংবিধানসহ কিছু কাঠামোগত সংস্কারের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন।জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রশ্নেও বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতভিন্নতা আছে। গতকাল ইসির সঙ্গে বৈঠকের পর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণ চায়, স্থানীয় নির্বাচন আগে হোক।
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাওয়াকে রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশকে আরও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
রাজনৈতিক কিছুটা মতভিন্নতা থাকলেও সংস্কার ও নির্বাচনকে একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন নিজেই সংস্কারের অংশ। তবে নির্বাচনের আগে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। আর সংবিধানসহ কিছু কাঠামোগত সংস্কারের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন।
নাগরিক কমিটির অবস্থান ভিন্নগণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করছেন। চলতি মাসের মধ্যে এই দল আত্মপ্রকাশ করবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা এই দলের নেতৃত্বে থাকছেন। তাঁরা নির্বাচনের আগে সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু থেকে সংস্কারের আগে সংসদ নির্বাচন না দেওয়ার কথা বলে আসছে। তারা মনে করছে, দেশে সংস্কার আনতে হলে সবার আগে সংবিধান সংস্কার প্রয়োজন। সংবিধান সংস্কার না করে জাতীয় নির্বাচন করা হলে সংস্কারের লক্ষ্য ব্যাহত হবে। তাই আগে গণপরিষদ নির্বাচন করে সংবিধান সংস্কার করতে হবে। এরপর নতুন সংবিধানের আলোকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংস্কার না করে সংসদ নির্বাচন দিলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে। এ ছাড়া বর্তমান সংবিধান বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য আগে গণপরিষদের নির্বাচন হতে হবে। আমরা আগামী ডিসেম্বরে গণপরিষদ নির্বাচন চাই।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, ততটুকু সংস্কার হোক। পরবর্তী সংস্কারগুলো একটি নির্বাচিত সরকারকে অবশ্যই করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকেও এমন বক্তব্য আসছে। এখানে আশার কথা হলো, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ, আলোচনা হচ্ছে।
সংস্কার না করে সংসদ নির্বাচন দিলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে। এ ছাড়া বর্তমান সংবিধান বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য আগে গণপরিষদের নির্বাচন হতে হবে। আমরা আগামী ডিসেম্বরে গণপরিষদ নির্বাচন চাই।জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ব স স ক র কর ড স ম বর র র ড স ম বর পর স থ ত সরক র র সরক র ন ব এনপ র অবস থ ন ঐকমত য সময়স ম ইসল ম সময় র বছর র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত উন্মুক্ত কনসার্ট স্থগিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হতে যাওয়া ‘রিবিল্ডিং দ্য নেশন’ কনসার্টটি হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্থগিতের বিষয়টি আয়োজকরা নিশ্চিত করেছেন।
তবে হঠাৎ করেই একদিন আগে কেন আলোচিত এ কনসার্টটি স্থগিত করা হলো সে বিষয়টি দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আয়োজকদের একজন জানিয়েছেন নিরাপত্তা ইস্যুতে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠ, আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকরা জানান, নিরাপত্তার কারণে কনসার্টটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে কখন কনসার্টটি হবে তা নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়, ‘এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ উন্মুক্ত কনসার্ট হতে যাচ্ছে। কনসার্ট ভেন্যুতে কয়েক লাখ মানুষ একসঙ্গে নিরাপদে গান শুনতে পারবে।
‘তাদের সামনে দেশের বিভিন্ন ব্যান্ড গান পরিবেশন করবে। আমরা দেশীয় শিল্পীদের নিয়ে কনসার্টের লাইনআপ সাজিয়েছি; যারা আন্দোলনের সময় নিজেদের ক্যারিয়ারের চিন্তা না করে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।’
প্রসঙ্গত, এই কনসার্টে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে গান গাওয়ার কথা ছিল নগর বাউল জেমস। আরও গান শোনানোর কথা ছিল ব্যান্ড চিরকুট, আর্টসেল, সোনার বাংলা সার্কাস, বেঙ্গল সিম্ফনি, বাংলা ফাইভ, ক্রিপটিক ফেইট, কুঁড়েঘর, কাকতাল, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানসহ অনেকে।