খুলনায় একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন আকলিমা বেগম নামের এক গৃহবধূ। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) খুলনা নগরীর বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ সন্তানের জন্ম দেন তিনি। 

জন্ম নেওয়া নবজাতকদের মধ্যে রয়েছে ৩ ছেলে ও এক মেয়ে। মা ও নবজাতকরা সুস্থ্য রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গৃহবধূ আকলিমার স্বামী সুজন কাজী একসঙ্গে ৪ সন্তান পেয়ে আনন্দিত ও উচ্ছসিত।

গৃহবধূ আকলিমা বলেন, আমি ভালো আছি। হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের সেবায় খুশি। চিকিৎসকরা জানান, একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম খুবই বিরল। এক্ষেত্রে মা ও নবজাতকরা সম্পূর্ণ সুস্থ্য থাকাটা সৌভাগ্যের বিষয়। সিজার সফলভাবে সম্পন্ন করেন গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের প্রধান ডা.

আমিনা জান্নাত পিয়া ও তার চিকিৎসক দল।

ডা. আমিনা জান্নাত পিয়া বলেন, এটি আকলিমার দ্বিতীয়বার সন্তান প্রসব। তিনি জানতেন পেটে যমজ বাচ্চা রয়েছে। যখন এখানে আসেন, তখন ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। বাচ্চা ছিল উল্টা পজিশনে। সে কারণে দ্রুত তাকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সিজার করে পর পর চারটি বাচ্চা ডেলিভারি করা হয়। প্রতিটি বাচ্চাই উল্টা পজিশনে ছিল। হাসপাতালের সব বিভাগ মিলে মা এবং বাচ্চাদের সুস্থ্য রাখতে কাজ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ বাচ্চারা ভালো ও সুস্থ্য আছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ হবধ একসঙ গ গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে ‘ভালোবাসা’ শেখানো হয়

খবরটা চোখে পড়েছিল কিছুদিন আগে। চীনের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে নাকি বিয়ে ও সন্তান গ্রহণের আগ্রহ কমে গেছে। ২০২৪ সালে চীনজুড়ে ৬১ লাখের বেশি যুগল বিয়ের নিবন্ধন করিয়েছেন। অথচ আগের বছরেও সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৭৬ লাখ ৮০ হাজার। সন্তান লালনপালনের চ্যালেঞ্জ, শিক্ষা খাতের উচ্চ ব্যয়, এমন নানা কারণেই চীনা তরুণেরা মা-বাবা হওয়ার দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। অন্যদিকে দেশটিতে শিশু বা তরুণের তুলনায় বয়স্কদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এই সংকট কাটাতে চীনা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিয়ে, ভালোবাসা, পরিবারের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি গত বছর নাকি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালোবাসা-সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

পড়াশোনা ও কাজের সুবাদে চীনে আছি বেশ কয়েক বছর হলো। এ দেশের শিক্ষা খাতের সঙ্গেও আমার নিবিড় যোগাযোগ আছে। তাই খবরটা পড়ে জানার আগ্রহ হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে কি সত্যিই ‘ভালোবাসা’ শেখানো হচ্ছে? খোঁজ নিয়ে যা জানলাম, তা-ই আপনাদের জানাচ্ছি।

ভালোবাসা ও সুখ

তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাধারণ ঐচ্ছিক পাঠ্যক্রমে ‘ভালোবাসা ও সুখ’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে সত্যি বলতে, এর সঙ্গে প্রেম বা বিয়ের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সম্পর্ক আছে মনোবিজ্ঞান ও যোগাযোগবিদ্যার। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছে, সম্পর্কের জটিলতা, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ কিংবা যোগাযোগ দক্ষতার অভাব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত ও সামাজিক জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই এসব বিষয়ে ছেলেমেয়েদের দক্ষ করে তুলতে তিয়ানজিনের মতো প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে ‘ভালোবাসা ও সুখ’-এর পাঠ দিচ্ছে। তিয়ানজিন ইউনিভার্সিটি ছাড়াও চীনের উহান ইউনিভার্সিটি ও শিয়ামেন ইউনিভার্সিটির পাঠ্যক্রমে এই কোর্স চোখে পড়ল।

আরও পড়ুনচীনে সন্তান লালনপালনে খরচ এত বেশি কেন১৮ মার্চ ২০২৪

চীনের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রধান বিষয়ের বাইরেও অন্যান্য বিষয়ের কিছু কোর্স বেছে নিতে পারে। যেমন খেলাধুলা, ভাষা ইত্যাদি। কেউ হয়তো প্রকৌশলে পড়ছে, তাঁকেও তাঁর বিভাগের বাইরে অন্য বিভাগ থেকে বেশি কিছু কোর্স করতে হয়। ‘ভালোবাসা ও সুখ’ কোর্সটিও সে রকমই একটি। ২ ক্রেডিটের এই কোর্স এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা একাডেমিক সাফল্যের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা অর্জন করতে চান, তাঁদের কাছে। এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য শুধু সঙ্গী নির্বাচনে সহায়তা করা নয়। বরং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব জানা, স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক ও মানসিক স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা। এখানকার ক্যাম্পাসে তারুণ্যের শক্তিটা চোখে পড়ার মতো। তবে আর সব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সম্পর্কের জটিলতা এখানকার শিক্ষার্থীদেরও বেশ ভোগায়।

সামাজিকভাবে চীনে প্রেমের সম্পর্ক তৈরিতে তেমন কোনো বাধা নেই। বরং ছেলেমেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে মা-বাবারাই জানতে চান, ‘তোমার সঙ্গী কোথায়?’ চীনা নববর্ষ, অর্থাৎ এখানকার বসন্ত উৎসবে মা-বাবার সঙ্গে ভালোবাসার মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চলও আছে।

চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং এগুলোর নিয়মিত চর্চার ওপর গুরুত্ব দেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কে থাকা শিক্ষার্থীদের বিষণ্নতা ও একঘেয়েমি কম হয়। অন্যদিকে যাঁরা সঙ্গী খুঁজছে, তাঁদের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা বেশি। তাই ‘ভালোবাসা ও সুখ’ সংক্রান্ত কোর্সগুলো মানসিক ভারসাম্য ও সামাজিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি শেখায়, যা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বচ্ছন্দ ও আনন্দদায়ক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে।

আরও পড়ুনচীনে চপস্টিক বানাতে বছরে কত কোটি গাছ কাটা হয়, জানেন?০১ নভেম্বর ২০২৪চোখে চোখ রাখার গুরুত্ব

চীনা ক্যাম্পাসগুলোর পরিবেশ দারুণ। সামাজিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে, ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশ্রণে এখানে তরুণ-তরুণীর মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভালোবাসার প্রকাশগুলোও চোখে পড়ে খুব সূক্ষ্মভাবে। যেমন গাছের নিচে বসে থাকা, একসঙ্গে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ। একসঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়াও চীনা সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাইব্রেরি বা ক্যাম্পাসের কোনো এক নিরিবিলি জায়গায় কোনো যুগল একসঙ্গে পড়াশোনা করছে, এটাও খুব পরিচিত দৃশ্য। এখানকার অনেকে মনে করেন, একাডেমিক সাফল্যের ক্ষেত্রে প্রেমের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে একে অন্যের পাশে থাকে। শিক্ষকেরাও এ ক্ষেত্রে উৎসাহ দেন, যেন ছেলেমেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিন্তু মেসেজিং অ্যাপ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উত্থানের কারণে অনেকেই হয়তো চোখে চোখ রেখে কথা বলার গুরুত্ব ভুলে যাচ্ছেন। যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া খুব জরুরি, এটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উপলব্ধি করেছে। এ জন্যই তারা যোগাযোগ-শিক্ষার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি একসঙ্গে
  • চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে ‘ভালোবাসা’ শেখানো হয়
  • ওরা কারা বসন্ত আটকে দিতে চায়!
  • জিম্মিদের একসঙ্গে মুক্তি দিতে ‘রাজি’ হামাস
  • বিয়ে করেছেন নার্গিস ফাখরি নাকি শুধুই ‍গুঞ্জন
  • মূল্যায়ন না পেলে কাজ করব না: ইয়াশ রোহান
  • শহীদ মিনারে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মারামারি
  • কমেডিয়ান জুটির বিয়ে
  • যে জেলায় একসঙ্গে বাস করেন ১৪ ভাষার মানুষ
  • পহেলা মার্চ রোজা হলে ৩৩ বছর পর দেখা মিলবে ‘বিরল’ দিনের