সাদপন্থিদের ইজতেমা শুরু, ধাপে ধাপে চলছে বয়ান
Published: 14th, February 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার সকালে। এই আয়োজন চলবে রোববার পর্যন্ত। শুক্রবার ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমা। আম বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুস সাত্তার সাহেব (নিজামুদ্দিন)। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন মুফতি আজিম উদ্দিন।
ভারতীয় মাওলানা সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো.
শিক্ষকদের উদ্দেশে আলাদা বয়ান: মো. সায়েম জানান, শুক্রবার সকাল ১০টায় ইজতেমা ময়দানের পূর্ব-উত্তর কোনে টিনশেডে ব্যবসায়ী, সরকারি বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশে আলাদা বয়ান হবে। বয়ানের মিম্বরে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আলাদা বয়ান হবে। একই সময়ে ইজতেমার ময়দানের পশ্চিম পাশে টিনশেডে বধিরদের উদ্দেশ্যে আলাদা বয়ান অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় খিত্তায় খিত্তায় তালিম হবে।
জুমার নামাজে ইমামতি করবেন মাওলানা সাদের ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ: শুক্রবার বেলা দেড়টায় হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। নামাজে ইমামতি করবেন ভারতের মাওলানা সাদের বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। জুমার নামাজের পর বয়ান করবেন নিজামউদ্দিন অনুসারী (সাদপন্থি) তাবলীগ জামাতের মুরুব্বী ওয়াসিফুল ইসলাম (কাকরাইল), আসর নামাজের পর ভারতের হাফেজ মনজুর সাহেব (নিজামুদ্দিন), তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা রুহুল আমিন, বাদ মাগরিব বয়ান করবেন মাওলানা জমশেদ সাহেব (নিজামুদ্দিন), তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ ব ইজত ম র ন ম জ র পর ময়দ ন ইজত ম
এছাড়াও পড়ুন:
কোরআনের বিষয়ভিত্তিক অনুবাদ
বাংলা ও ইংরেজিসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় পবিত্র কোরআন শরিফের তরজমা বা অনুবাদ হয়েছে। এসব অনুবাদের বিভিন্ন ধরনও আছে। কিছু অনুবাদ আরবি থেকে সরাসরি হয়েছে, কিছু অনুবাদ আবার অনুবাদের অনুবাদ। যেমন: বাংলা ভাষায় প্রচলিত তরজমাগুলোর একটা বড় অংশই কোরআনের উর্দু তরজমার সাহায্যে করা হয়েছে। আবার কোরআনের কিছু অনুবাদে টীকা বা সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়েছে স্পষ্টীকরণের জন্য। কিছু অনুবাদ তাফসিরভিত্তিক বা বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক বা কোরআনে আলোচিত বিভিন্ন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েও অনুবাদ করা হয়েছে। ড. মুস্তাফা খাত্তাবের দ্য ক্লিয়ার কোরআন: আ থিমেটিক ইংলিশ ট্রান্সলেশন সে রকমই একটি অনুবাদ যা প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এই অনুবাদে কোরআনের তিনটি প্রধান বিষয়কে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—
(১) উপদেশ-নির্দেশ, (২) ঘটনা-কাহিনি এবং (৩) অদৃশ্য বা গায়েবি বিষয়।
আরও পড়ুনহজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা–জীবন২৫ নভেম্বর ২০২৩প্রথমটিতে প্রধানত মুসলমানদের সঙ্গে আল্লাহর, অন্যান্য মানুষের ও আল্লাহর বাকি সৃষ্টির সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক আলোচিত হয়েছে। যেমন: ইবাদত, পারিবারিক সম্পর্ক ইত্যাদি। দ্বিতীয়টিতে হজরত আদম (আ.), ইব্রাহিম (আ.), মুসা (আ.) ও আরও কয়েকজন নবী-রাসুলের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এর একাধিক উদ্দেশ্য আছে। প্রথমত, ইসলাম প্রচারকালে মুহাম্মদ (সা.) যখন কাফেরদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হচ্ছিলেন, তখন তাঁকে আশ্বস্ত করা এবং কাফেরদেরও সতর্ক করা। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন কাহিনির মধ্যে মুসলমানদের নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া। সর্বশেষ গায়েবি বা অদৃশ্য বিষয়ের মাধ্যমে একজন মুসলমানকে এটা বোঝান যে আল্লাহ, তাঁর গুণাবলি, তাঁর ফেরেশতাকূল, কেয়ামতের পর পুনরুত্থান ও শেষ বিচারসহ বিভিন্ন অদৃশ্য বিষয়গুলো চোখে না দেখেই অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে হবে। তা না হলে সে সত্যিকার ইমানদার মুসলমান হতে পারবে না।
বইটিতে কোরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে উক্ত তিনটি বিষয়ের কোনটি বা কোন কোনটির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে, তার একটি প্রতীকযুক্ত তালিকা দেওয়া আছে প্রথমে। যেমন: সুরা বাকারায় তিনটি বিষয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আবার, সুরা ইয়াসিনে কাহিনি ও গায়েবি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে।
আরও পড়ুনহজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মদিনা–জীবন০২ ডিসেম্বর ২০২৩সুরার ভেতরে আলোচিত ও বর্ণিত বিষয়গুলোর সার-সংক্ষেপ প্রতিটি সুরার শুরুতে দেওয়া হয়েছে। তারপর বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদের পাশাপাশি আয়াতগুলোর মূল কথা একবাক্যে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন: সুরা আল-আরাফের (৭ম সুরা) ১০ থেকে ১৮ আয়াতের মূল কথা হলো: ‘শয়তানে ঔদ্ধত্য।’
সহজ ইংরেজিতে করা এই অনুবাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো, পশ্চিমা দুনিয়ায় ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের মাঝে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ও বিকৃতি ধারণা অবসানে সহযোগিতা করা। সে কারণে, কোরআনে বর্ণিত বিভিন্ন নবী-রাসুলের নাম বাইবেলের প্রচলিত নামানুসারে অনুবাদ করা হয়েছে। যেমন: সুরা ইউসুফের ক্ষেত্রে মূল নামের পাশাপাশি ’জোসেফ’ উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বোপরি প্রারম্ভে কোরআনের কাঠামো, ভাষা শৈলী ও গুরুত্বের ওপরে আলোকপাত করা হয়েছে এবং পাশ্চাত্য জগতের ইসলামভীতি ও ইসলামবিদ্বেষ বিষয়ক কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। তরজমাটি মিশরের আল-আজহার ইসলামিক রিসার্চ একাডেমি থেকে অনুমোদিত হয়েছে। আর মুদ্রিত হয়েছে তুরস্ক থেকে।
দ্য ক্লিয়ার কোরআন: আ থিমেটিক ইংলিশ ট্রান্সলেশন; ড. মুস্তাফা খাত্তাব; বুক অব সাইনস ফাউন্ডেশন, আমেরিকা, ২০১৬।
আরও পড়ুনপ্রাঞ্জল বাংলা অনুবাদে কোরআন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫