ভালোবাসা দিবসে কাজে লাগল না, এত গোলাপ দিয়ে আর কী হবে
Published: 14th, February 2025 GMT
হাসি নেই মোহাম্মদ আবদুল্লাহর (৪৬) মুখে। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে বাগান পরিষ্কার করছিলেন। তাঁর বাগানে কয়েকজন দর্শনার্থী এসেছেন। তাঁরা ছবি তুলছিলেন, ভিডিও করছিলেন। সেই দিকে তাকানোর সময় নেই তাঁর। ৮০ শতক জমিতে গোলাপের চাষ করেছেন তিনি। বাগানজুড়ে ফুটে আছে শত গোলাপ। আশা ছিল, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ভালো বিক্রি হবে। সব না হোক, অন্তত বাগানের বেশির ভাগ ফুল বেচতে পারবেন। কিন্তু তা হলো না। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দিনে গোলাপ বিক্রি করেছেন মাত্র ৯০০টি। তা–ও কম দামে। আগে প্রতিটি বিক্রি করেছেন ১৪-১৫ টাকায়। আর এই দুই দিনে দাম নেমে এসেছে ৩ থেকে ৫ টাকায়।
আক্ষেপ করে বাগানি আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত বছরের ভালোবাসা দিবসে সাত হাজার গোলাপ বিক্রি করেছি। প্রতিটি গোলাপের দামও ছিল ১৫ টাকার মতো। এখন আরও আড়াই হাজার গোলাপ বাগানে পড়ে রয়েছে। এত গোলাপ দিয়ে কী হবে? বাগানের খরচ কীভাবে ওঠাব, সেটাই ভাবছি।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীর মাইজপাড়া এলাকার একটি গোলাপবাগানে কথা হয় আবদুল্লাহর সঙ্গে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে বরইতলীর গোলাপবাগানে এ সময় অনেক ব্যস্ততা থাকার কথা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। সেই পাইকারি ক্রেতাদের হাঁকডাক, গোলাপ তোলার ব্যস্ততা। গোলাপের দামও অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অনেক কম। প্রতিটি গোলাপ এখন আড়তদারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে তিন টাকায়।
বাগানমালিকেরা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। তার ওপর একই সঙ্গে পবিত্র শবে বরাত পড়ে যাওয়ায় গোলাপের চাহিদা নেই। এ কারণে গোলাপের পাশাপাশি গ্ল্যাডিওলাসেরও বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে।
আবদুল্লাহর সুরেই কথা বলেন পাশের বাগানের মালিক রুসিলা বেগম ও শেফায়েত উল্লাহ। তাঁরা জানিয়েছেন, গোলাপের চাহিদা কম। চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে গেছে। অথচ এবারের ভালোবাসা দিবসে প্রতিটি বাগান থেকে ২ থেকে ১০ হাজার গোলাপ কাটার প্রস্তুতি ছিল।
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তেমন বিক্রি হয়নি গোলাপ। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীর পুরোনো রাস্তার মাথায় একটি দোকানে গোলাপ গুছিয়ে রাখছেন এক চাষি। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ
আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ সোমবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়ে বলা হয়, এদিন ঢাকাসহ সারাদেশে প্রত্যুষে একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়াও জেলা ও উপজেলার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। দেশের সকল বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। তবে ২৫ মার্চ গণহত্যার কালরাতে আলোকসজ্জা করা যাবে না।
ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। এদিন সরকারি ছুটি থাকবে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা বাণী প্রদান করবেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট, কাবাডি, হাডুডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন করবে।
এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সকল হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো ওইদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।