প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্পেসএক্স, টেসলা এবং এক্স-এর মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে এক ভিডিও আলোচনায় ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র অন্বেষণ এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ভিডিও আলোচনা চলাকালে বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গা সংকট এবং অগ্রাধিকার ইস্যু বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড.

খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং স্পেসএক্সের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস উপস্থিত ছিলেন।

তাদের কথোপকথনে অধ্যাপক ইউনূস এবং ইলন মাস্ক স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগে বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, গ্রামীণ ও পিছিয়ে থাকা নারী এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর রূপান্তরমূলক প্রভাবের ওপর জোর দেন।

কম খরচে কীভাবে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষমতায়ন অনুন্নত অঞ্চলে এবং এর লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে জাতীয় সীমানার বাইরে প্রবেশাধিকার দিতে পারে সে বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের সংযোগ লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে এবং দেশকে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সংহত করবে। তিনি বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে প্রযুক্তি-চালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচন করতে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্টারলিংক হবে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণফোনের একটি সম্প্রসারণ, যা গ্রামের নারী ও যুবকদের বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করার পথপ্রদর্শক হতে পারে।

জবাবে ইলন মাস্ক দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাব স্বীকার করে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করেন।

টেসলা মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা মাস্ক বলেছেন, তিনি বহু বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ ভিলেজ ফোনের কাজের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলোকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও এগিয়ে নিতে পারে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন 

জাতীয় উন্নয়নে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস স্টারলিংক পরিষেবার সম্ভাব্য প্রবর্তনের জন্য ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। মাস্ক তাতে ইতিবাচক সাড়া দেন।

মাস্ক বলেন, ‘আমি এর অপেক্ষায় আছি।’ বাংলাদেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং সারা দেশে উদ্ভাবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

ফরহাদ মজহারের বক্তব্য বিএনপি ও দেশের মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে: বিএনপি নেতা এ্যানি

বিএনপিকে নিয়ে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের বক্তব্য বিএনপিসহ ‘সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে আঘাত’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে গুম ও শহীদ’ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। এ আয়োজনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ফরহাদ মজহার সাহেব গতকাল বিএনপি সম্পর্কে যে কথা বলেছেন, এটা বিএনপি নয় শুধু, সারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তাঁর বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, এ দেশে তাঁর ‘নমিনেটেড’ (মনোনীত) লোক শুধু আন্দোলন করেছে, আর কেউ আন্দোলন করেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, যারা এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, করেছিল, ফরহাদ মজহারের বক্তব্যে তারা সুযোগ পাচ্ছে। এ সুযোগ আমরা দেব না, ইনশা আল্লাহ। আমার বিশ্বাস, যারা শহীদ পরিবারের তারা কোনো দিনও এ সুযোগ দেবে না। কারণ, তারা প্রায়োরিটি বেসিসে (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) বিচার চেয়েছে।’

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমি আজকে অভয় দিতে চাই, এ সরকার শিগগিরই একটি নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে এবং এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর সে সরকারের নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।’ তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে অনুরোধ করব, বিগত ১৫-১৬ বছরে যাঁরা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি করবেন না।’

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি, তখন থেকে পতন শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক, কাল হোক তারা হারিয়ে যাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ