Samakal:
2025-03-17@04:54:08 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

Published: 13th, February 2025 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

গত মৌসুমে ১২ শতাংশ জমি থেকে ৬৬ মণ টমেটোর ফলন পেয়েছিলেন নবদ্বীপ মল্লিক। তাঁর উৎপাদন খরচ হয়েছিল ৭ হাজার টাকা। গড়ে ১৫ টাকা পর্যন্ত দর পেয়েছিলেন সেবার। পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে তাঁর মুনাফা হয়েছিল ৩৩ হাজার টাকা। একই পরিমাণ জমিতে চলতি মৌসুমে তাঁর খরচ হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। টমেটো উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০ মণ। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র ৭ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন নবদ্বীপ।
এই চাষির বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামে। কৃষিতে অবদানের জন্য অতীতে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন নবদ্বীপ। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে খরচ ওঠানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা উপজেলার প্রায় সব চাষির। 
ডুমুরিয়ায় এক কেজি টমেটো বিক্রি করে মাত্র তিন টাকা পাচ্ছেন চাষিরা। অথচ একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয় দিনে ৮০০ টাকারও বেশি। ছয় মণ টমেটো বিক্রি করেও সেই মজুরি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ তো আছেই। এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ক্ষেতেই টমেটো নষ্ট হচ্ছে। বাজারেও ক্রেতা নেই। ফলে টমেটোর স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। উপজেলার বেশির ভাগ কৃষকের মাথায় এখন লোকসানের বোঝা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি গ্রামে টমেটো চাষ হয়েছে। চিংড়ি ঘেরের বেড়িবাঁধের অবশিষ্ট জায়গায়ই টমেটোর চাষ হয় ব্যাপকভাবে। অল্প খরচে বেশি লাভ হতো বলে চাষিরা কয়েক মৌসুম ধরে আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন। উপজেলাজুড়ে চলতি মৌসুমে ৪০০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৩ টন টমেটো উৎপাদনের আশা করেছেন কর্মকর্তারা। 
অথচ গত মৌসুমে একই জমিতে ২১ টন টমেটো উৎপাদন হয়েছিল। এবার উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ২ টন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর বাজারে বাইরে থেকে বিপুল পরিমাণ পাইকারি ব্যবসায়ী এসেছিলেন। ফলে কৃষকরা টমেটোর দাম ভালোই পান। এ মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। বাজারে এবার পাইকার অনেক কম। যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম মিলছে না। 
খর্নিয়া গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, বাজারে এখন টমেটোর কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন টাকা। একজন শ্রমিকের জন্য দিনে মজুরি গুনতে হয় ৮০০ টাকা। 
এ ছাড়া পরিবহন খরচ তো আছেই। বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। সব মিলিয়ে তাঁর মতো চাষিদের টমোটো এখন ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।
ডুমুরিয়া পাইকারি বাজারের ‘আল্লার দান সবজি বিক্রয় কেন্দ্রে’র মালিক আব্দুল কাদের শেখ বলেন, বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। টমেটো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় পচন ধরেছে। বাধ্য হয়ে তাদের এসব টমেটো ফেলে দিতে হবে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনছাদ ইবনে-আমিন বলেন, টমেটো পাকা শুরু হওয়ার পর দুই-তিন দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। এর পর পচন শুরু হয়। 
ডুমুরিয়ায় টমেটো সংরক্ষণের মতো কোনো হিমাগার 
নেই। ফলে উৎপাদিত টমেটো নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উৎপ দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে শিশুকন্যার গলায় ছুরি ধরে মাকে ধর্ষণের চেষ্টা

যশোরে চার বছর বয়সী কন্যার গলায় ছুরি ধরে মাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে তিন দুর্বৃত্ত। পরে ওই নারীর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আহত নারীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (১৬ মার্চ) রাতে যশোর শহরতলীর বিরামপুরে এই ঘটনা ঘটে। 

ওই নারীর স্বজনরা জানিয়েছেন, আলমগীর নামে এক প্রতিবেশির ছেলে হাসান ওই নারীর ছোট ভাইয়ের বন্ধু। সে সুবাদে মাঝেমধ্যে তার বোনের বাড়িতে আসতো। রবিবার সন্ধ্যার পর হাসান ওই নারীর (২৬) ঘরে নিজের মোবাইল ফোন চার্জ দিয়ে যায়। রাত সাড়ে আটটার দিকে আরও দুজনকে নিয়ে হাসান ওই বাসায় যায়। এসময় ওই নারী রান্না করছিলেন। দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তার চার বছর বয়সী কন্যার গলায় ছুরি ধরে ওই নারীকে ধর্ষণে উদ্যত হলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এসময় ওই নারী চিৎকার করতে থাকলে দুর্বৃত্তরা তার মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ছুটে আসলে ওই নারীর বাঁ হাতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এলাকাবাসী ওই নারীকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল হাসপাতালে বলেন, “ঘটনার সময় তিনজন ছিল বলে ওই নারী জানিয়েছেন। এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে মাঠে নেমেছে।”

ঢাকা/রিটন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ