Samakal:
2025-02-13@22:14:36 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

Published: 13th, February 2025 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

গত মৌসুমে ১২ শতাংশ জমি থেকে ৬৬ মণ টমেটোর ফলন পেয়েছিলেন নবদ্বীপ মল্লিক। তাঁর উৎপাদন খরচ হয়েছিল ৭ হাজার টাকা। গড়ে ১৫ টাকা পর্যন্ত দর পেয়েছিলেন সেবার। পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে তাঁর মুনাফা হয়েছিল ৩৩ হাজার টাকা। একই পরিমাণ জমিতে চলতি মৌসুমে তাঁর খরচ হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। টমেটো উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০ মণ। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র ৭ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন নবদ্বীপ।
এই চাষির বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামে। কৃষিতে অবদানের জন্য অতীতে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন নবদ্বীপ। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে খরচ ওঠানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা উপজেলার প্রায় সব চাষির। 
ডুমুরিয়ায় এক কেজি টমেটো বিক্রি করে মাত্র তিন টাকা পাচ্ছেন চাষিরা। অথচ একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয় দিনে ৮০০ টাকারও বেশি। ছয় মণ টমেটো বিক্রি করেও সেই মজুরি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ তো আছেই। এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ক্ষেতেই টমেটো নষ্ট হচ্ছে। বাজারেও ক্রেতা নেই। ফলে টমেটোর স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। উপজেলার বেশির ভাগ কৃষকের মাথায় এখন লোকসানের বোঝা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি গ্রামে টমেটো চাষ হয়েছে। চিংড়ি ঘেরের বেড়িবাঁধের অবশিষ্ট জায়গায়ই টমেটোর চাষ হয় ব্যাপকভাবে। অল্প খরচে বেশি লাভ হতো বলে চাষিরা কয়েক মৌসুম ধরে আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন। উপজেলাজুড়ে চলতি মৌসুমে ৪০০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৩ টন টমেটো উৎপাদনের আশা করেছেন কর্মকর্তারা। 
অথচ গত মৌসুমে একই জমিতে ২১ টন টমেটো উৎপাদন হয়েছিল। এবার উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ২ টন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর বাজারে বাইরে থেকে বিপুল পরিমাণ পাইকারি ব্যবসায়ী এসেছিলেন। ফলে কৃষকরা টমেটোর দাম ভালোই পান। এ মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। বাজারে এবার পাইকার অনেক কম। যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম মিলছে না। 
খর্নিয়া গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, বাজারে এখন টমেটোর কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন টাকা। একজন শ্রমিকের জন্য দিনে মজুরি গুনতে হয় ৮০০ টাকা। 
এ ছাড়া পরিবহন খরচ তো আছেই। বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। সব মিলিয়ে তাঁর মতো চাষিদের টমোটো এখন ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।
ডুমুরিয়া পাইকারি বাজারের ‘আল্লার দান সবজি বিক্রয় কেন্দ্রে’র মালিক আব্দুল কাদের শেখ বলেন, বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। টমেটো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় পচন ধরেছে। বাধ্য হয়ে তাদের এসব টমেটো ফেলে দিতে হবে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনছাদ ইবনে-আমিন বলেন, টমেটো পাকা শুরু হওয়ার পর দুই-তিন দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। এর পর পচন শুরু হয়। 
ডুমুরিয়ায় টমেটো সংরক্ষণের মতো কোনো হিমাগার 
নেই। ফলে উৎপাদিত টমেটো নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উৎপ দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.)

একবার হজরত সোলায়মান (আ.) আল্লাহর কাছে একটি দোয়া করেছিলেন। দোয়াটি আল্লাহর কাছে এত ভালো লেগেছিল যে তিনি দোয়াটি কবুল করে নিয়ে তার মনের আশা পূরণ করে দেন। দোয়াটি কোরআনেও আছে, ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়াহাবলি মুলকাল্ লায়ামবাগি লিআহাদিম মিন বাদি, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব।’ মানে, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করো, আর এমন এক রাজ্য আমাকে দান করো, আমি ছাড়া কেউ যার অধিকারী হতে পারবে না; তুমি তো মহাদাতা। (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৫)

হজরত সোলায়মান (আ.)–কে নিয়ে আরেকটি দোয়া কোরআনে আছে, ‘রাব্বি আওজিনি আনআশকুরা নিমাতাকাল্লাতি আনআমতা আলাইয়া ওয়া আলা ওয়ালিদাইয়্যা, ওয়া আন আমালা সালিহান তারদ্বাহু, ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন।’ মানে, ‘সোলায়মান ওর কথায় মুচকি হাসল আর বলল, হে আমার প্রতিপালক তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার কাছ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি আমার ওপর ও আমার পিতা মাতার ওপর তুমি যে অনুগ্রহ করেছ তার জন্য আর যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা তুমি পছন্দ করো, আর তোমার অনুগ্রহে আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ দাসদের শামিল করো।’ (সুরা নামল, আয়াত: ১৯)

আরও পড়ুননামাজে অন্য চিন্তা আসবে না অর্থ বুঝে পড়লে১৯ জানুয়ারি ২০২৪

সোলায়মান (আ.)–এর দোয়া কবুলের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, ‘তখন আমি বায়ুকে তার অধীন করে দিলাম, সে যেখানে ইচ্ছা সেখানে তাকে বয়ে নিয়ে যেত; আমি আরও অধীন করে দিলাম জিনকে, যারা সকলেই ছিল স্থপতি ও ডুবুরি। এবং আরও অনেককে জোড়া শিকল পরিয়ে।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৬-৩৮)

আল্লাহর প্রতি সর্বোচ্চ সুধারণা রেখে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। আর সে চাওয়া যত কঠিন কিংবা অসম্ভবই হোক না কেন তবু্ও চাইতে হবে। কোনো কিছু চাওয়ার সময় চিন্তায় আনতে হবে আল্লাহ এই চাওয়া কবুল করবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা যখন আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করবে, তখন বড়ো জিনিস অর্থাৎ জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২,৭৯০)

আল্লাহ বলেছেন, বান্দা আমার সম্পর্কে যে রকম ধারণা পোষণ করে, আমি তার সঙ্গে সে অনুযায়ী আচরণ করি। (সে যদি ধারণা রাখে যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, তার তাওবাহ কবুল করবেন, বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন, তাহলে তাই করি।) (তিরমিজি, হাদিস: ২৩৮৮)

আরও পড়ুননামাজ পড়ার সময় সুরা আগে-পরে হলে কী করবেন২১ জানুয়ারি ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ