ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ময়না আক্তার (১০) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী খুন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুরের আতকাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ময়না উপজেলার মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী ফারুক মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় আতকাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

স্থানীয় লোকজন এবং ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুরের আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হোসেন মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী ও ইয়াবা বড়ি বিক্রি করেন। একই গ্রামের বাসিন্দা সবজাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া একজন মাদকসেবী। ময়নার পরিবার মাদক ব্যবসায়ী হোসেনের প্রতিবেশী। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গ্রামে মাদক বেচাকেনা নিয়ে হোসেন ও রুবেলের মধ্যে কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ হয়।

দুই পক্ষ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হোসেনের প্রতিবেশী শিশু ময়না ঘর থেকে বের হয়ে ঝগড়ার মাঝখানে গিয়ে পড়ে। সে সময় প্রতিপক্ষ হোসেন ও রুবেলের যেকোনো একজনের ছুরিকাঘাতে ময়না বুকের বাঁ পাশে আঘাত পান। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রাত নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিশু ময়নার চাচা মফিজ মিয়া ও লায়েস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হোসেন ইয়াবা বড়ি বিক্রি করে আর রুবেল তাঁর কাছ থেকে ইয়াবা কিনে সেবন করেন। গতকাল এশার নামাজের পর তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার মাঝখানে ময়নার বুকে ছুরিকাঘাত লাগে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে কথা হলে ঘটনাস্থলে থাকা বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রওশন আলী প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামে আত্মীয়ের মধ্যে একটি বিয়ে হয়। বিকেলে মেয়ের পক্ষের লোকজন বরপক্ষের কাছে কনেকে তুলে দেয়। বিয়েতে একটি ঝগড়া হলে গ্রামবাসী সালিশ করে তা সমাধান করে দেন। সন্ধ্যায় চাওড়া গ্রামে সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে এক পক্ষ গানের আয়োজন করে। তা দেখতে আতকাপাড়া গ্রামের লোকজন যান। সেখানে সাউন্ড বক্স নিয়ে আতকাপাড়ার হোসেনের সঙ্গে চাওড়া গ্রামের লোকজনের কথা–কাটাকাটি হয়।

ওসি মো. রওশন আলী আরও বলেন, হোসেন এক পর্যায়ে চাওড়া গ্রামের বেলালকে থাপ্পড় মারেন। এর জেরে চাওড়া গ্রামের লোকজন দেশে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আতকাপাড়া গ্রামে হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। লোকজন বাড়িঘরে হামলা চালালে বল্লমের আঘাতে ঘরের ভেতরে থাকা শিশু ময়না আহত হয়। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ময়নার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল কজন উপজ ল ময়ন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘পুষ্পা কিংবা কবির সিং নয়, এটা জংলি’

সিয়াম পরনে লুঙ্গি, ঘাড়ে কাক বসা, ঠোঁটে পাতার বিড়ি, একহাতে দিয়াশলাই কাঠি, পেছনে আগুনের জ্বলজ্বলে শিখা। অনেক রহস্যঘেরা তার চারদিক– এমন আবহে গত বছরের মার্চে প্রকাশ করা হয়েছিল জংলি ছবির প্রথম পোস্টার। পোস্টার প্রশংসিত হলেও চারদিকে সাজসাজ রব উঠে পুষ্পা কিংবা কবির সিংয়ের আদলে সম্ভবত ছবিটি নির্মিত হবে। এর পর জংলি ছবির অনেক কিছুই প্রকাশ হয়েছে। একের পর এক ইউনিক পোস্টার, রোমান্টিক গান, প্রি-টিজসহ অনেক কিছুই।

মূলত আসন্ন ঈদের ছবির প্রচারণায় সবার আগেই নেমে পড়ে জংলি। তাই জংলি আদপে কবির সিং না পুষ্পার আদলে সেটা নিয়েও হচ্ছিল চর্চা। সে চর্চায় এবার ঘি ঢাললেন সিয়াম। পরনে লুঙ্গি, চোখেমুখে হিংস্রতা, উশকোখুশকো চুল-দাড়ি আর পুরোদস্তুর অ্যাকশন লুক– সম্প্রতি প্রকাশিত জংলির টিজারে দেশি মাসালা হিরোরূপে দেখা মিলল সিয়াম আহমেদের।

এমন সিয়ামকে এর আগে দেখেনি কেউ! ১ মিনিট ১১ সেকেন্ডের টিজারে পপ কালচার রেফারেন্সে সিয়ামের মুখ থেকেই যেন এলো ভারতীয় ছবির আদলে জবাব, ‘পুষ্পা? কবির সিং? অ্যাহহে! জংলি’!

টিজার প্রকাশের পরপরই দারুণ সাড়া জাগায় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মাঝে। হুড়হুড় করে শেয়ার করতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফলে ২০ ঘণ্টার মাথায় ২ মিলিয়নের বেশি ভিউয়ের খবর আসে। অধিকাংশই টিজার কাটের প্রশংসা করছেন।

সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এম রাহিম; যার প্রথম সিনেমা ‘শান’। প্রথম সিনেমাতেই সিয়ামকে নিয়ে বাজি ধরেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় সিনেমাতে তিনি সিয়ামকে নিয়ে আসছেন জংলি রূপে।

রাহিম বলেন, ‘টিজারে সবার ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। সবাই দারুণ পছন্দ করছেন। অনেকেই ফোন করে ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। জংলির গল্পের আমরা যা দেখাতে চাই দর্শক এমন গল্প বহু বছর দেখেনি। আমি বাজি ধরে বলতে পারি এটি পুরো মাসালা ছবি আবার গল্পের ছবি। যে গল্প আমাদের হাসাবে, কাঁদাবে এবং নতুন এক মায়ায় আবদ্ধ করবে। সিনেমার টিজার-ট্রেলার তো জাস্ট গল্পের ইঙ্গিত। আমার জংলি পুরো ছবি দেখলে আরও মুগ্ধতা নিয়ে হলে থেকে বের হবেন এটা দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি।’

জংলিতে সিয়ামের দুই নায়িকা। একজন শবনম বুবলি, অন্যজন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। কিন্তু এতদিন জংলি টিম ইচ্ছে করেই এ যেন আগলে রেখেছিল বুবলির চরিত্রটিকে। সিনেমার প্রচারণায় কোথাও না থাকা বুবলিকে এক ঝলক দেখা গেল টিজারে। এখানেই বোঝা গেছে বুবলির চরিত্রের গুরুত্ব। তবে গোটা টিজারে সিয়াম হাজির হয়েছেন ভয়ংকর মারমুখী ভাইবে। লুঙ্গি পরা এই সিয়াম টিজারেই দেখিয়েছেন, দেশীয় গল্পে দেশীয় নির্মাণেও 
দারুণ কিছু ঘটানো সম্ভব!

টিজারে শেষ দৃশ্য নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন রহস্য। এতদিন জংলিতে সিয়ামের সঙ্গে বুবলি ও দীঘিই ছিলেন আলোচনারা কেন্দ্রে। টিজারে সিয়ামের সঙ্গে দেখা গেছে একজন শিশুশিল্পীকেও। আন্দাজ পাওয়া গেল, জংলির গল্পে মূল প্লটে শিশুশিল্পীর শক্তিশালী ভূমিকা বিদ্যমান। যদিও বিষয়টি ধোঁয়াশার মধ্যেই রেখেছে টিম। নিশ্চয়ই এই ধাঁধার উত্তর কিছুটা হলেও মিলবে জংলির ট্রেলারে। বাকিটা নিশ্চয়ই দেখা যাবে সিনেমা হলের পর্দায়।

‘জংলি’ ছবির গল্প লিখেছেন আজাদ খান, চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা। এতে বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন– দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল খান, এরফান মৃধা শিবলু প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাউফলে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির সময় পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ৩
  • প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির বক্তব্য, সমালোচনা
  • তেঁতুলিয়া নদীতে ট্রলারে ডাকাতি, গণপিটুনিতে নিহত ১
  • মালিকের ‘কিছু ফুটবলার অতিরিক্ত বেতন পায়’ মন্তব্যের জবাব দিলেন ব্রুনো
  • ভিউ বাণিজ্যে ক্ষতি হয় ক্রিকেটারদের
  • ‘ভিউ বাণিজ্যে ক্ষতি হয় ক্রিকেটারদের’
  • ভিউ বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ক্রিকেট
  • জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিভিয়েছি: ইরফান
  • জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিভিয়েছি: ইরফান সাজ্জাদ
  • ‘পুষ্পা কিংবা কবির সিং নয়, এটা জংলি’