বিজয়নগরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিশুর মৃত্যু
Published: 13th, February 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ময়না আক্তার (১০) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী খুন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুরের আতকাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ময়না উপজেলার মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী ফারুক মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় আতকাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয় লোকজন এবং ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুরের আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হোসেন মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী ও ইয়াবা বড়ি বিক্রি করেন। একই গ্রামের বাসিন্দা সবজাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া একজন মাদকসেবী। ময়নার পরিবার মাদক ব্যবসায়ী হোসেনের প্রতিবেশী। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গ্রামে মাদক বেচাকেনা নিয়ে হোসেন ও রুবেলের মধ্যে কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ হয়।
দুই পক্ষ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হোসেনের প্রতিবেশী শিশু ময়না ঘর থেকে বের হয়ে ঝগড়ার মাঝখানে গিয়ে পড়ে। সে সময় প্রতিপক্ষ হোসেন ও রুবেলের যেকোনো একজনের ছুরিকাঘাতে ময়না বুকের বাঁ পাশে আঘাত পান। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রাত নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশু ময়নার চাচা মফিজ মিয়া ও লায়েস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হোসেন ইয়াবা বড়ি বিক্রি করে আর রুবেল তাঁর কাছ থেকে ইয়াবা কিনে সেবন করেন। গতকাল এশার নামাজের পর তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার মাঝখানে ময়নার বুকে ছুরিকাঘাত লাগে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে কথা হলে ঘটনাস্থলে থাকা বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ওসি মো. রওশন আলী আরও বলেন, হোসেন এক পর্যায়ে চাওড়া গ্রামের বেলালকে থাপ্পড় মারেন। এর জেরে চাওড়া গ্রামের লোকজন দেশে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আতকাপাড়া গ্রামে হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। লোকজন বাড়িঘরে হামলা চালালে বল্লমের আঘাতে ঘরের ভেতরে থাকা শিশু ময়না আহত হয়। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ময়নার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল কজন উপজ ল ময়ন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভিউ বাণিজ্যে ক্ষতি হয় ক্রিকেটারদের’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত কনটেন্ট ও নেতিবাচক উপস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের ব্যাটার লিটন কুমার দাস। সম্প্রতি সমকালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মাঠে ব্যাটিংটা সুন্দর বলেই সবাই ধরে নেয় আমি নামলেই রান করব। কিন্তু আমি তো মানুষ, সব সময় তো রান করা সম্ভব না।’
২০১৯ সালে লিটনের ব্যাটিং দেখে ভীষণ মুগ্ধ হয়েছিলেন ইয়ান বিশপ। সেবার বিশ্বকাপে এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ধারাভাষ্য দেয়ার সময় লিটনের প্রতিটি শটকে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তার মতে ইতালিয়ান চিত্রকর দ্য ভিঞ্চি তুলির আঁচড়ে মোনালিসার যে চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন লিটনের ব্যাট যেন ঠিক তার তুলির মতোই।
এমন ছবির মত ব্যাটিংয়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই আপত্তি তুললেন লিটন। জানালেন, এমন প্রশংসা আমার জন্য নেতিবাচক। আমার ব্যাটিং সুন্দর দেখে প্রতিদিন রান করতে হবে, এই জিনিসটি সবার ভেতরে গেঁথে গেছে। সবাই ভাবে আমি মাঠে গেলেই রান করব। কেউ রান করুক বা নাই করুক, আমাকে রান করতে হবে। কিন্তু আমি তো মানুষ, ফেল হতেই পারি। একজন বোলারের একটি ভালো বলে আউট হতেই পারি। একটি ভালো ক্যাচ নিতে পারে বা আমি একটি বাজে শট খেলতে পারি; কারণ আমি মানুষ।
লিটন ক্ষোভ ঝেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার ভিউ বাণিজ্য নিয়েও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার খারাপ মুহূর্তগুলো বারবার তুলে ধরা হয় উল্লেখ করে লিটন বলেন, যারা নিউজ পোর্টাল চালায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলস বানায়, তাদের উপস্থাপনায় থাকে আমি কেন রান করছি না। আমাকে নিয়ে দিনের পর দিন তারা কনটেন্ট বানিয়েই যাচ্ছে। এটি শুধু চাপই নয়, বরং মানসিকভাবে ‘হ্যাম্পার’ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা রিল বানায়, ইউটিউবে কনটেন্ট দেয়, তারা নিজেদের মতো করে উপস্থাপন করে—কিন্তু সেটি নৈতিক জায়গা থেকে না। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্যও ভুল বার্তা যাচ্ছে। একজন খেলোয়াড়ের খারাপ দিন থাকতেই পারে। কিন্তু একাধিকবার সেই খারাপ মুহূর্ত প্রচার করায় দর্শক বিভ্রান্ত হয়। এই কনটেন্ট কিছু মানুষের জন্য ভালো—ভিউ বাড়ে, লাভ হয়। কিন্তু আমাদের জন্য তা হতাশাজনক।’