সঞ্জনা ভেমভানি নিউইয়র্কভিত্তিক পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন ইনডিপেনডেন্ট সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা। ভারত বিভাজনের সময় তাঁর পূর্বপুরুষদের নিজ জন্মভূমি ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। সে কারণেই ধীরে ধীরে তাঁর পরিবার মাতৃভাষা হারিয়ে ফেলে। এখন কি তিনি তা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন? শুনুন তাঁর কথা:
মনে পড়ে, আমি যখন আট বছর বয়সী ছিলাম, তখন দিল্লির একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাদের এক শিক্ষক জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমাদের পরিবারে কোন ভাষায় কথা বলা হয়। পরিবারের দ্বিতীয় ভাষা সম্পর্কে তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না।
ভারত বিশ্বের অন্যতম ভাষাগত বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে ১২২ থেকে ৪৫৬টি ভাষা প্রচলিত। দিল্লির মতো বড় শহরগুলোতে সাধারণত মানুষ দৈনন্দিন জীবনে অন্তত দুটি ভাষা ব্যবহার করে: একটি সরকারি কাজ, স্কুল বা অফিসের ভাষা (দিল্লির ক্ষেত্রে হিন্দি), আরেকটি আঞ্চলিক ভাষা। কিন্তু আমি শুধু হিন্দি বলেই বড় হয়েছি।
বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, তাঁর উত্তর আমাকে অবাক করল। ‘সিন্ধি’– তিনি বললেন। আমি আগে কখনও এই ভাষার নাম শুনিনি। বাবা ব্যাখ্যা করলেন যে সিন্ধি ভাষার মূল অঞ্চল সিন্ধু; যা এখন আর ভারতে নয়, বরং আমাদের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে অবস্থিত।
১৯৪৭ সালে, দুই শতকের ঔপনিবেশিক শাসনের পর ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় যে রেখা টানে, সেটিই ‘র্যাডক্লিফ লাইন’ নামে পরিচিত। এই রেখার মাধ্যমে ভারতকে দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করা হয়: একটি ছিল হিন্দু-অধ্যুষিত ভারত, আর অন্যটি মুসলিম-অধ্যুষিত পাকিস্তান। এই বিভাজনের ফলে শিখ, মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ১৪.
ভারতে এসে, দাদিকে দিল্লির প্রধান ভাষা হিন্দি রপ্ত করতে হয়, অন্য সিন্ধি সম্প্রদায়ের মানুষদের মতো। ফলে, নতুন প্রজন্মের মধ্যে সিন্ধি ভাষা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে শুরু করে। আমার পরিবারেও তাই হয়েছে।
সিন্ধি ভাষায় ইমপ্লোসিভ শব্দ রয়েছে, যা শ্বাস ভেতরে টেনে উচ্চারণ করা হয়। ভারতের টোলানি কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের সিন্ধি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ভিম্মি সদারাঙ্গানি উল্লেখ করেছেন যে সিন্ধিতে চারটি ইমপ্লোসিভ ধ্বনি ɓ, ɗ, ɠ এবং ʄ পাওয়া যায়, যা অন্যান্য ভাষায় কম ব্যবহৃত। এ ছাড়া সিন্ধি ভাষায় সংস্কৃত থেকে পাঁচটি নাসাল ধ্বনি সংরক্ষিত আছে, যা আধুনিক হিন্দিতে নেই এবং রপ্ত করা কঠিন। সদারাঙ্গানির মতে, ভাষার প্রকৃত দক্ষতা অর্জন করতে হলে পার্সো-আরবি এবং দেবনাগরী উভয় লিপি শিখতে হবে। যদি কেউ ছোটবেলা থেকে এগুলো না শেখে, তাহলে তা রপ্ত করা বেশ কঠিন হতে পারে।
যেমন, ভারতীয়-মার্কিন উদ্যোক্তা কিরণ থাডানির দাদা-দাদি দেশভাগের সময় সিন্ধু থেকে আহমদাবাদে পালিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া থাডানি এখন লন্ডনে সিন্ধি শেখার চেষ্টা করছেন, যদিও কিছু উচ্চারণে আমেরিকান ধাঁচ রয়ে যায়। তিনি বলেন, “আমার শৈশবের অনুভূতিগুলো সব সময় ইংরেজিতে প্রকাশ করতে পারি না, কিন্তু সিন্ধিতে আমি তা অনুভব করতে পারি।”
সিন্ধি ভাষার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও এটি ভারতে টিকে থাকতে সংগ্রাম করছে। কারণ, দেশভাগের পর সিন্ধি ভাষা সংরক্ষণের প্রচেষ্টা থাকলেও কিছু পণ্ডিতের মতে, প্রধান সমস্যা ছিল ভাষার লিপি নিয়ে মতভেদ। সাহিত্য মহলে একদল পার্সো-আরবিক লিপি সংরক্ষণে আগ্রহী ছিল, যাতে ভারত ও পাকিস্তানের সিন্ধিভাষীরা পরস্পরের সাহিত্য পড়তে পারে এবং সিন্ধুর সঙ্গে সাংস্কৃতিক সংযোগ বজায় থাকে। অন্য দল দেবনাগরী লিপি ব্যবহারের পক্ষে ছিল। কারণ, এটি ভারতে অধিকাংশ মানুষ বোঝে এবং হিন্দু পরিচয়ের সঙ্গে সহজে খাপ খাইয়ে নেওয়া সম্ভব হতো।
আজ ভারতে সিন্ধি ভাষার উচ্চারণ ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে, যেখানে হিন্দির প্রভাব বাড়ছে এবং কিছু আরবি উচ্চারণ হারিয়ে যাচ্ছে।
তবে ভারত ও পাকিস্তানের তরুণ সিন্ধিরা আজ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে নতুনভাবে সংযোগ তৈরি করছে। এমনই একজন পাকিস্তানি মুসলিম সিন্ধি পরিবারে জন্ম নেওয়া ফারাজ আহমেদ খোখর। ৯ বছর বয়সে হায়দরাবাদ ছেড়ে পরিবারসহ লন্ডনে চলে আসেন তিনি। সেখানে তিনি সিন্ধি যুব ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে কাজ করেন এবং পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় ভারতীয় সিন্ধিদের না চিনলেও যুক্তরাজ্যে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন। খোখর জানান, সিন্ধি ভাষা সিন্ধুর সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ানো হলেও, পাকিস্তানেও এটি কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। পাকিস্তানের সিন্ধি পরিবারগুলো তাদের আঞ্চলিক ভাষা কম ব্যবহার করছে, বরং বেশি প্রচলিত উর্দু ব্যবহার করছে। শহুরে এলাকাগুলোতে ভাষাটি উর্দু এবং ক্রমশ ইংরেজির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
সিন্ধি ভাষার অবনতি ঘটেছিল যখন বিভাজনের পর ভারত রাজ্যগুলোতে ভাষাগত সীমানায় ভাগ করা হয়। যেমন– গুজরাটে গুজরাটি এবং পাঞ্জাবে পাঞ্জাবি ভাষা। এ কারণে সিন্ধি ভাষার জন্য কোনো আলাদা জায়গা তৈরি হয়নি।
ভারতীয় লেখিকা রিতা কোঠারি তাঁর বই The Burden of Refuge: Sindhi Hindus of Gujarat-এ উল্লেখ করেন যে, রাজস্থান ও গুজরাতের হিন্দু সিন্ধিভাষীরা আরেকটি সমস্যার মুখোমুখি হন। যদিও তারা হিন্দু ছিল, তাদের মুসলিম প্রভাবিত ঐতিহ্য নতুন ভারতীয় সমাজে সন্দেহের জন্ম দেয়, যেখানে ধর্মীয় উত্তেজনা ছিল। তারা একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ থেকে এসেছিল, পার্সো-আরবিক লিপিতে লিখত এবং মাংসভোজী ছিল, যার ফলে তাদের ‘হিন্দুত্ত্ব’ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, গুজরাটের শহুরে এলাকায় বসবাসকারী সিন্ধিরা কম লাভের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ধর্মীয় বা অন্যান্য বাধা ছাড়াই অদ্ভুত সময়েও কাজ করতেন, যাতে তারা জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এর ফলে স্থানীয় ব্যবসাগুলোর ক্ষতি হচ্ছিল। এ নিয়ে সিন্ধিদের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণাও তৈরি হয়।
তাছাড়া, ভারত ১৯৫০ সালে তার সংবিধান গ্রহণ করার সময় ১৪টি অফিসিয়াল ভাষা ঘোষণা করেছিল, যার মধ্যে সিন্ধি ভাষা ছিল না। পরবর্তী সময়ে ভারতের সিন্ধিরা তাদের ভাষাকে ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সফলভাবে আন্দোলন চালালেও, তখন পর্যন্ত ভাষাটি অনেকটাই মিইয়ে গিয়েছিল।
আজ সিন্ধি ভারতীয় জাতীয় সংগীতে অন্তর্ভুক্ত, যা আমি প্রতিদিন স্কুলে গাইতাম। তখন এর গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। যখন আমাকে আমার পরিবারের মাতৃভাষা স্কুলে আনার জন্য বলা হয়, আমি সিন্ধি ভাষাটি ‘ভারতের ভাষা’ তালিকায় যোগ করতে পারতাম। কিন্তু আমি চিন্তা করছিলাম পাকিস্তান থেকে আসা একটি ভাষা যুক্ত করার জন্য অনুমতি চাওয়া উচিত কিনা। আমার এই উদ্বেগ, বহু দশকের রাজনৈতিক বিতর্কের প্রতিধ্বনি ছিল, যা ওই ভাষা, তার বক্তাদের এবং তাদের ভারতের মধ্যে অধিকারী স্থান নিয়ে চলছিল।
তবে সিন্ধি ভাষাভাষীরা এখন অনলাইনে নতুন কমিউনিটি গড়ে তুলেছেন; যেখানে অনেকেই, যারা আগে ভাষাটি শিখেননি, এখন শিখতে চাচ্ছেন।
মনে পড়ে, আমার দাদা-দাদি ডাইনিং টেবিলে বসে খাওয়ার সময় তাদের মাতৃভাষায় কথা বলতেন। তখন আমি ‘গুটে ভারী ভাগী’ (gute vaaree bhaakee) একমাত্র সিন্ধি বাক্যটি শিখেছিলাম। তবে আমার বাবার কাছে জানলাম, ১০ বছর ধরে এটি ভুল বলে আসছি। তাই সঠিক উচ্চারণ শেখার মাধ্যমে আমার ভাষার সাথে পুনঃসংযোগের প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। সম্প্রতি আমি সিন্ধি ভাষা শেখার কোর্সে ভর্তি হয়েছি। যথেষ্ট অনুশীলনের সাথে হয়তো একদিন আমাদের পরিবারে সিন্ধি ভাষার পুনর্জীবন ঘটাতে পারব। তবে সিন্ধি ক্লাসে ভর্তি হওয়ার ছয় দিন পর, আমার দাদি মারা যান। এই প্রবন্ধটি আমি উৎসর্গ করছি প্রিমা ভামভানিকে, যিনি সীমান্ত পেরিয়ে একটি ভাষা আমাদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁর স্মৃতিতে সংরক্ষণ করেছিলেন, যাতে আজ আমি তা আবার শিখতে পারি। v
সূত্র: বিবিসি
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র দ দ র পর ব র ব ভ জন র ব যবহ র র জন য আম দ র কর ছ ল র সময
এছাড়াও পড়ুন:
মিফতাহ সিদ্দিকীর ইফতার মাহফিলে সিলেটে সুধীজনদের মিলনমেলা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় এতিম, রাজনীতিবীদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পেশাজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে দোয়া ও ইফতার মাহফিল করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী।
রোববার সিলেট নগরীর একটি অভিজাত কনভেনশন হলে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার মাহফিলটি বিভাগের চার জেলার বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খছরুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যরিষ্টার এম.এ সালাম, ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সহ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, ফয়সল আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, নগর বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ এম সারওয়ার উদ্দিন চৌধুরী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক সাজেদুল করিম, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি আশরাফুল আলম, সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সচিব চৌধুরী মামুন আকবর, সম্মিলিত পোশাজীবী পরিষদ, সিলেটের আহ্বায়ক ডা. শামীমুর রহমান, সদস্য সচিব ডা. শাহনেওয়াজ আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহমান রিপন, হবিগঞ্জের জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সেলিম, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, সাবেক আইজিপি (প্রিজনস) বিগরেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইফতেখারুজ্জামান, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা আজমল হোসেন কুনু, জাতীয় নাগরিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহানগর সভাপতি মাওলানা গাজী রহমত উল্লাহ, মহানগর খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান তাপাদার, মহানগর এবিপার্টির আহবায়ক ওমর ফারুক, সদস্য সচিব রেজাউল করিম সোয়েব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সিলেটের সমন্বয়ক আব্দুল্লা আল গালিব প্রমুখ।
ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, মানুষ দীর্ঘদিন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রতীক্ষায় রয়েছে। এসময় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরী সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচনের জোর দাবি জানান তারা।