Samakal:
2025-02-13@20:58:25 GMT

প্রেমের কবিতা

Published: 13th, February 2025 GMT

প্রেমের কবিতা

নদীর নাম
তুষার দাশ

তোমার ভেতরে কত মহানন্দা, 
কত লুপ্ত নদী বয়ে যায় 
শরীরের ভাঁজে ভাঁজে
প্রত্যক্ষের সাধ্য নেই তার উন্মোচন করে।
আমার হাতের তালু ছুঁয়ে দিলে তোমার ও মুখ, চোখের পাপড়ি আর 
কানের নরম লতি আঙুল-টোকায়, 
কেমন গর্জন করে তোমার ভেতর আর 
মুখর এক বনভূমি জেগে ওঠে–
অথচ তোমার কণ্ঠে শব্দই সরে না।
 
তুমি পদার্থের গুণগান করো– 
তুমি ঘাসের ডগার মতো রৌদ্রে হেসে ওঠো মৌন আনন্দ-আভায়
তোমার কোথাও কোনো দ্বিধা নেই 
আমার আকাশে এসে এখন উড়তে থাকো— 
পরীর সুঠাম শাদা মেঘপুঞ্জে বিভান্বিত হয়ে– 

তোমার সকল নদী ফেটে যায় বিপুল উজানে–
এত নদী কীভাবে লুকিয়ে রাখো নিজের ভেতর–

তোমার অজস্র নদী– শুধু একটি নদী ধার দেবে? 

আমারও প্রবাহ চাই, প্রবাহিত হতে চাই– 
তোমার ভেতরে তবে আমাকেও
যুক্ত করো এক নদী ভেবে–

নদীতে নদীতে চলো হই একাকার।

 

 

অবজ্ঞার চাদর
আলফ্রেড খোকন

আমাকে ভর করেছে মেঘ
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
মেঘের রয়েছে উদ্বেগ
চাদরে কিছুটা সন্দেহ বুনিও

মেঘের রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
আমার থাকুক মৃদু–জল–জ্যোৎস্না
হাওয়াকেও কাছে ডেকে নিও

উত্তীর্ণ সন্ধ্যার জলে শস্যদানা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
জলেই অবগাহন– বীজ বোনা
সন্ধ্যার বৃষ্টি খুবই অনমনীয়

এখন তোমার দিকে ফেরা
সংহিতা তোমার চাদরটা দিও
সন্ধ্যায় নেই কোনো অপেরা
প্রেম অতি ধীরে– অবজ্ঞাও

 

সাকিনে তোমার 
নীহার লিখন 

সকালের শব্দাবলির আলোর টুকরোগুলোকে জল মনে করে বেঁচে ওঠা মাছটা বলছি– 
একটু চোখ বন্ধ করে ডুবতে দেখো, শীতল সমাহারে পাহাড়সম নিশ্চল সমস্ত দেহের প্রতীক, তারপর মনের দিকে হাত বাড়িয়ে রাখো কৃষ্ণচূড়া, ভাবো পাখিদের সুখে কতবার অবনত হয়েছে আকাশ আর শূন্যতার সুউচ্চ মহিমা 
পৃথিবীর অর্থ কোনো প্রবল পরার্থ, তাই ফাল্গুনের পাতার জীবন নাচছি চক্রাকারে; কোথাও আমার নাম বৃষ্টি, কোথাও আমিই ইন্দ্র বলছি–
আমাকে অদৃশ্যকরণের নিয়মে রেখে হেঁটে যাও, এপাড়া ওপাড়া, প্রতিটা মজ্জা ও বুননের গভীর খোদাইচিত্রে, দেখতে দেখতে যাও ঘুমন্ত বন, দরোজা খুললেই আলো যেভাবে হেসে দ্যায়, ঠিক সেভাবেই, আমাকে হাসতে হাসতে যাও সাকিনে তোমার

 

ডিপ্রেশন
চাঁদনী মাহরুবা 
 
ইচ্ছে হয়, আমার স্মৃতির ভেতরের শহরটাকে দেখাই। তোমাকে শোনাই, ভৈরবের স্রোত আর হরীতকী পাতার শব্দ। 
নিকট দূরত্বে এসে দেখ, কলতলার জল কেমন উছলায়। 
সন্ধ্যায়, মানুষের ছায়ারাও সরে যায় তার শরীর থেকে। এতটা ঘন একাকিত্ব পেয়ে বসে আমাদের।
 
ফুলতোলা জামার নরম কুঁচি, আরেফা আপার খোলা চুলে সেই কত দূরের কোন জামরুল গাছের হাওয়া এসে লাগে!
গ্রীষ্মের চোখফোটা দুপুরে, লুকিয়ে পড়া বইগুলো হয়ে যায় প্রেমের অধিক গোপনীয়।

মোরগঝুঁটি ফোটার আগ্রহে বহুক্ষণ
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতাম লাল বাড়িটার দিকে। এভাবে এখন কেবল  দাঁড়াতে পারি গোরস্তানের সামনে। 

শহর থেকে কারও ফেরার খবর আসত। যেন জেসাস ফিরতেছে .

.. 
কিশোরীর হৃদয় তখন পবিত্র জেরুজালেমের মাটি। 
পর্দা ওঠানো সকালে তারে মনে করে, এখনও কাটানো যায় বিরহকাল।
ইশকুলের ঘণ্টা শোনার অপেক্ষায় ছুটির দিনগুলো ঠিক উবে যেত
হলুদ অড়বরইয়ের ভাগ পাওয়া ছাড়া, আমাদের তীব্র কোনো বিষণ্নতা ছিল না।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র চ দরট

এছাড়াও পড়ুন:

৩ দিন পর হবিগঞ্জ থেকে হাত-পা বাঁধা ছাত্রদল নেতা উদ্ধার

ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর ছাত্রদল নেতা মামুনকে (২১) হাত-পা বেঁধে হবিগঞ্জে সড়কের পাশে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ভালুকা থানা পুলিশ গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসে।

মামুন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর সংকরপুর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর ১০ ফেব্রুয়ারি ভালুকা মডেল থানায় জিডি করেন বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন। 

উদ্ধারের পর মামুন জানিয়েছেন, গত সোমবার রাত ১০টার দিকে ভালুকার কর্মস্থল থেকে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। পথে লিচু বাগানের কাছে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজন তাঁকে পেছন থেকে ডাক দেয়। তিনি কাছে যাওয়ার পর আরও দু’জন এসে তাঁর চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তাঁকে ইনজেকশনের মাধ্যমে অচেতন করে অজানা স্থানে নিয়ে একটি ঘরে আবদ্ধ করে রাখা হয়। গতকাল একটি মাইক্রোবাসে তুলে হাত-পা বেঁধে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। 

সেখান থেকে এক বাসচালক ও পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে বাহুবল হাসপাতালে নেয়। পরে বাহুবল থানা পুলিশ তাঁকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মামুন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। গত ৪ আগস্ট ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলায় তোফাজ্জল হোসেন নামে একজন গুরুতর আহত হন। পরে মামুন তাঁকে নিয়ে স্থানীয় একাধিক ক্লিনিকে যান। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা না পেয়ে তোফাজ্জলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়ায় মামুনকে অপহরণ করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির জানান, মামুনকে হবিগঞ্জ থেকে উদ্ধারের পর ভালুকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ