বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের দপ্তরে তালা দিয়ে জিলাপি বিতরণ করেছেন এক দল শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী ভিসির দপ্তরে তালা দেন। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা বানচাল করতে ছাত্রশিবির এ কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের দপ্তরে তালা লাগানোর পর প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল– আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গোপন সিন্ডিকেট সভা আহ্বানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ। তালা লাগানোর পর বিক্ষোভকারীরা নিজেদের মধ্যে জিলাপি বিতরণ করেন। উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগানও দেন। 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে ভিসিবিরোধী একটি আন্দোলন হয়েছিল। সেখানে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। ভিসি বলেছিলেন, তিনি সেই শর্তগুলো পূরণ করবেন। পরে তিনি কথা রাখেননি। আমরা এর কোনো ব্যাখ্যা চাই না। আমাদের এক দাবি–ভিসির পদত্যাগ। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থী নাম ব্যবহার করে উপাচার্যের দপ্তরে তালা মেরেছে। শুক্রবার সিন্ডিকেট সভায় কী সিদ্ধান্ত হবে, তা আন্দোলনকারীরা এক দিন আগে কীভাবে জানল? তিনি আরও বলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে উপাচার্যের প্রকাশ্যে বিরোধ চলছে। উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকদের কেউ শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়েছেন। আরেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান জানান, উপাচার্যের কক্ষে তালা দেওয়া শিক্ষার্থী বেশির ভাগই শিবিরকর্মী। এর সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক নেই। 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। ক্যাম্পাসে বিভিন্নভাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের দপ্তরে তালা দিয়েছেন। এর সঙ্গে শিবিরের সম্পর্ক নেই। 

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, শুক্রবার সিন্ডিকেট সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে– এমন ধারণায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তালা দিয়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আমার বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই। 

উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিন বলেন, যারা পতিত স্বৈরাচারের ভাবনাকে এখনও লালন করে, তারা গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। অবুঝ শিক্ষার্থীরা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদযাত্রা: ২৬ মার্চের ট্রেনের টিকিট মিলছে আজ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ)। রবিবার (১৬ মার্চ) তৃতীয় দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।

সকাল ৮টা থেকে মিলছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। আজ যারা টিকিট কিনবেন তারা আগামী ২৬ মার্চ ভ্রমণ করতে পারবেন।

এর আগে, গত ৯ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ, ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ, ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ ও ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এছাড়া, চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।

আরো পড়ুন:

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু আজ, ফিরতি টিকিট ২৪ মার্চ

কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি

ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু, এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।

এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পর যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

ঢাকা/হাসান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ