গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত, লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 13th, February 2025 GMT
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের হামলায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা আল মামুন মণ্ডল (৩২) নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার ধাপেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আল মামুনের লাশ নিয়ে ধাপেরহাট বাজার এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন স্বজন ও স্থানীয় লোকজন। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। রাত আটটার দিকে সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিহত আল মামুন মণ্ডল উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামের মান্নান মণ্ডলের ছেলে। তিনি ধাপেরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম।
নিহত মামুনের বাবা মান্নান মণ্ডল বলেন, ‘কয়েক বছর থেকে দলের সঙ্গে মামুনের সক্রিয়তা নেই। দীর্ঘদিন থেকে মামুন ক্রিকেট খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
নিহত আল মামুন মণ্ডল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ম ম ন
এছাড়াও পড়ুন:
এত বড় লোকসানের বোঝা সইবেন কী করে
ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের খাবারের জোগান নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের জন্যই বিশাল চ্যালেঞ্জের কাজ। রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, মূল্যস্ফীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি—এ সবকিছু ছাপিয়ে বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই এ দেশের মানুষ এখনো টিকে আছে, তার সবচেয়ে বড় অবদান কৃষকের। অথচ দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে অবহেলার শিকার হন তাঁরা। এবার আলুচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আলু নিয়ে যে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়েছেন, তাতে মনে হতেই পারে, আলু উৎপাদন করে তাঁরা কি অপরাধ করে ফেলেছেন?
আমনের মৌসুমে দফায় দফায় বন্যা হওয়ায় চালের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে চালের দাম এখন গত বছরের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। এ অবস্থাতেও শীতের সবজির ওপর ভর করে প্রায় দুই বছর পর গত মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০-এর নিচে নেমেছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান কৃষকের। কিন্তু শীতের সবজি চাষে এ বছর তাঁরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এবার পেঁয়াজ উৎপাদনেও কৃষকেরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু পেঁয়াজেও কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।
এবার যে আলুর উৎপাদনও বেশি হবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। আগাম বুঝতে পেরে হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারের ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কৃষকেরা মানববন্ধন করে, রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করে হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানান। সরকার কিছুটা ভাড়াও কমান। কিন্তু প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের চেয়ে ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আলু সংরক্ষণের অনুমতিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কতটা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অধিকাংশ আলুচাষি।
হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কৃষকদের মাঠ থেকেই তাঁদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ১ কেজি আলু উৎপাদনে যেখানে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে মাঠ থেকে মাত্র ১৪ টাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এত বড় লোকসানের বোঝা তাঁরা সইবেন কী করে!
শীতের সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম এতটা পড়ে যাওয়ার পেছনে হঠাৎ করেই হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি উঠেছে। সরকার যদি একের পর এক ফসলে কৃষকের এই ক্রমাগত লোকসানের দিকে নজর না দেয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে বাজারে স্বস্তির দেখা মিললেও দীর্ঘ মেয়াদে বড় সংকট তৈরি করবে। হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে কেন হাজার হাজার কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেন? সরকারকে অবশ্যই কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।