দেশে জনসংখ্যার তুলনায় ওষুধের দোকান বেশি। তবে ওষুধ সহজপ্রাপ্য করতে দাম নির্ধারণ যৌক্তিকভাবে করতে হবে। অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করার পাশাপাশি সরকারের একমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডকে শক্তিশালী করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা বিষয়ক এক নীতি কর্মশালায় এ কথা বলা হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ইউএসসি ফোরাম যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। আয়োজনে আর্থিক সহায়তা দেয় ইউনিসেফ। কর্মশালায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, গবেষক, ওষুধবিজ্ঞানী, জনস্বাস্থ্যবিদ ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় দেশে অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদি—সব মিলিয়ে ওষুধ কোম্পানি আছে ৯০৫টি। এর মধ্যে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ কোম্পানি আছে ৩০৫টি, চালু ২২৯টি। দেশের ওষুধের বাজার ৪০ হাজার কোটি টাকার।
কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে ধরা হয় ১০ হাজার মানুষের জন্য আড়াইটি ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি যথেষ্ট। কিন্তু বাংলাদেশে ১০ হাজার মানুষের জন্য ওষুধের দোকান আছে ১৬টির বেশি। দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ের বড় অংশ চলে যায় ওষুধের পেছনে।
শুরুতে আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের মানুষের কাছে ওষুধ সহজপ্রাপ্য কতটা, ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা, ওষুধের মূল্য নির্ধারণ ও ওষুধের মূল্য এবং সরকারি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিষয়ে আলোচনার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভায় উপস্থিত একাধিক আলোচক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের একমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বেশিরভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী, বেড়েছে চালের
পবিত্র রমজানের বাজারে বেশিরভাড় পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তবে বাজারে কিছু কিছু চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, ভালোমানের সরু চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি চাল ৭০ থেকে ৭৬ টাকা আর মোটা চালের দাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা।
চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিনদফা বেড়েছে চালের দাম। এই সময় কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুই-এক টাকা কমেছিল।
কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী রুস্তম শেখ বলেন, চালের দাম গত এক সপ্তাহে আবারও কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। রশিদ, উৎসব ডায়মন্ড, মোজাম্মেল ইত্যাদি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সরু মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। এই চাল ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা কেজি পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, আসলে ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। আর বড় বড় ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম আরও বেশি, ৯০ থেকে ৯২ টাকার আশপাশে। ফলে মধ্যম আয়ের মানুষকে ৮০ টাকা কেজি চাল কিনতে হচ্ছে।
মোটা চালের দামও কম নয়। মোহাম্মদপুর, কাওরান বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা ঘুরে দেখা যায়, ৫৮ টাকায় মোটা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে। একটু ভালোমানের মোটা চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে বেশি পরিমাণে নিলে দু-এক টাকা কম দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতো স্থিতিশীল দেখা গেছে, কিছু পণ্যের দাম নিম্নমুখীও। রোজার শুরুতে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল এখন তা-ও কমেছে। খোলা সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বোতলজাত তেলের সরবরাহে এখনও কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে।
রামপুরা বাজারে চঞ্চল ট্রেডার্সের বেলাল হোসেন বলেন, খোলা সয়াবিনের সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। বোতলজাত তেলও দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। তবে চাহিদার তুলনায় কম। আগে যে তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না, তেমন আর নেই।
লেবু, শসা ও বেগুনের মতো বাড়তি চাহিদার পণ্যগুলোর দাম কমছে। আগে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লেবুর হালি ৪০ টাকা ও শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অন্যান্য সবজির বাজার আগের মতো থাকলেও ঢেড়স ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দর কমেছে। প্রতি কেজি ঢেড়স ৬০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
গত বছর উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজেরও ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালোমানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা। যেখানে গত বছর এ সময় বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দাম অর্ধেক কমে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মোটাদাগে বলতে গেলে এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগেই বাজারে যে অরাজকতা এবার দেখা যায়নি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।