চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বিমান ধরছে বাংলাদেশ
Published: 13th, February 2025 GMT
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা শুনে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত খানিকটা হাসলেন। এরপর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন তাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। প্রশ্নটা ছিল, ‘‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আপনাদের লক্ষ্য কী?’’ এই প্রশ্নের জবাবে শান্তর সাহসিকতা সবাইকে মুগ্ধ ও বিস্মিত করেছে।
বিশাল স্বপ্ন ও আশা নিয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। স্টাফসহ পুরো দলই আজ একসাথে উড়াল দিচ্ছে। সঙ্গে আছেন দুই অতিরিক্ত পেসার হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তো বটেই, আইসিসির বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সর্বোচ্চ সাফল্য সেমিফাইনাল খেলা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ২০১৭ সালের আসরে নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে সেরা চারে খেলেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ।
সেই আসরের পর নানা জটিলতায় আর কোনো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হয়নি। আগের আসরের সেমিফাইনালে খেলার সুখ স্মৃতি নিয়েই এবার পাকিস্তানে উড়াল দিচ্ছে বাংলাদেশ।
আইসিসির সর্বশেষ কয়েকটি ইভেন্টে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল যাচ্ছেতাই। কোন আসরেই সুখকর কিছু করতে পারেনি লাল-সবুজের সারথীরা। তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও আশায় বুক বাঁধতে পারছেন না সমর্থকরা। কারণ প্রতিটা দলই শক্তিশালী। তবে অধিনায়ক শান্ত শুনিয়ে গেলেন বিরাট আশার কথা।
সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, “আমার কাছে এমন কিছু (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করায় বাড়তি চাপ) মনে হয় না। এখানে যে ৮টা দল আছে, সবাই চ্যাম্পিয়ন হওয়া ডিজার্ভ করে। ৮টা দলই কোয়ালিটি দল। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলের ওই (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার) সামর্থ্য আছে।”
বাংলাদেশ দলপতি আরো জানালেন, দলের সবাই শিরোপা জিততে আত্মবিশ্বাসী, “বাড়তি চাপ আমার মনে হয় না কেউ অনুভব করবে। কারণ সবাই এটাই চাচ্ছে। সবাই মনেপ্রাণে এটা চায় এবং বিশ্বাস করে আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। আমাদের রিজিকে আল্লাহ কী লিখে রেখেছেন, জানি না। আমরা মেহনত করছি, সততার সঙ্গে কাজ করছি। প্রত্যেকটা ক্রিকেটার বিশ্বাস করি যে, আমাদের যে লক্ষ্য, সেখানে পৌঁছাতে পারব।”
আত্মবিশ্বাসের কারণ হিসেবে শান্ত সামনে আনলেন আট বছর আগের আসরের সুখস্মৃতি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শান্ত আরো যোগ করেন, “সবশেষ যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা খেলেছি, ভালো একটা স্মৃতি ছিল। সেমিফাইনাল খেলেছিলাম। অবশ্যই এটা বাড়তি অনুপ্রেরণা দেবে আমাদের। এ ছাড়া দেশের মানুষের প্রত্যাশা, পরিবারের প্রত্যাশা, ক্রিকেটারদের প্রত্যাশা তো আছেই। সব মিলিয়ে বিশ্বাস করছি যে, ভালো অবস্থানে যাওয়া সম্ভব।”
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী দেশ ভারত। রোহিতদের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। পরে রাওয়ালপিন্ডিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউ জিল্যান্ড ও ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে তারা।
ঢাকা/রিয়াদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব স কর আম দ র র আসর
এছাড়াও পড়ুন:
মুহাম্মদ ইউনূস ও ইলন মাস্কের মধ্যে আলোচনা, ‘আসছে’ স্টারলিংক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্পেসএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং টেসলা ও এক্স-এর মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ভবিষ্যতে সহযোগিতার সমূহ দুয়ার খুলতে এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করতে তাদের মধ্যে বিস্তারিত আপাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে অধ্যাপক ইউনসূ ও ইলন মাস্কের মধ্যে ভার্চুয়ালি এই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই আলোচনার বিষয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
সহিংসতা-হানাহানি যেন না হয়, সজাগ দৃষ্টি রাখুন: প্রধান উপদেষ্টা
পোস্ট লেখা হয়েছে, ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকের সময় মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার ইস্যুগুলোর জন্য বাংলাদেশের উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজির প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ। ইলন মাস্কের সঙ্গে ছিলেন স্পেস এক্স-এর পক্ষে গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার লরেন ড্রেয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড গ্রিফিথস।
ভিডিও লিংকে কথোপকথনের সময় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইলন মাস্ক স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাবের ওপর জোর দেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, গ্রামীণ ও দুর্বল নারী এবং প্রত্যন্ত সম্প্রদায়ের জন্য তার স্টারলিংক ইন্টারনেটের সুবিধাগুলো তুলে ধরেন ইলন মাস্ক।
তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পায়- উচ্চগতির অথচ কম খরচের ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তরে কীভাবে সমন্বয় ঘটাতে পারে, সেই বিষয়টি। একই সঙ্গে তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন ঘটিয়ে অনুন্নত অঞ্চল এবং লাখ লাখ প্রান্তিক মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কীভাবে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখতে পারে, সে বিষয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
আলোচনার সময় নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের সংযোগ ঘটলে লাখো মানুষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে এবং বিশ্বব্যাপী দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে সংহত করবে।
শফিকুল আলম লিখেছেন, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে প্রযুক্তি-চালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার জন্য তার উৎসাহ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ ফোনের একটি সম্প্রসারণ হবে, যা গ্রামের নারী ও যুবকদের বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করার পথপ্রদর্শক হবে। তারা বিশ্বব্যাপী নারী ও শিশু এবং বিশ্ব উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।
এই আলোচনার সময় ইলন মাস্ক গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করেন; দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাব স্বীকার করে অধ্যাপক ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
টেসলা মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা মাস্ক বলেন, তিনি বহু বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ ভিলেজ ফোনের কাজের সঙ্গে পরিচিত।
মাস্ক বলেন, “স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো কাজে লাগান গেলে বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরো এগিয়ে যাবে।”
জাতীয় উন্নয়নের জন্য অধ্যাপক ইউনূস স্টারলিংক পরিষেবার সম্ভাব্য যাত্রা শুরু করার জন্য ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন তিনি।
আমন্ত্রণের জবাবে মাস্ক বলেন, “আমি এটির জন্য অপেক্ষা করছি।"
শফিকুল আলম পোস্টে লিখেছেন, এই সম্পৃক্ততা বাংলাদেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং সারা দেশে উদ্ভাবনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
উভয় পক্ষই এই উদ্যোগের দ্রুত অগ্রগতি ঘটাতে সম্মত হয়েছে এবং তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন, লিখেছেন প্রেস সচিব।
ঢাকা/রাসেল