সেনাসদস্যকে মারধর করায় রেলওয়ের ৩ কর্মচারী আটক
Published: 13th, February 2025 GMT
ট্রেনে ও প্ল্যাটফর্মে এক সেনাসদস্যকে মারধর করার অভিযোগে রেলওয়ের গার্ডসহ তিন কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর একটি দল। পরে তাদের রাজশাহী রেলওয়ে থানায় রাখা হয়।
আটক তিনজন হলেন, ঢাকা-রাজশাহী রুটের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড আতিকুর রহমান, অ্যাটেনডেন্ট মনছেহার আলী ও মো.
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একজন সেনাসদস্য বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসছিলেন। আসন না পাওয়ায় তিনি আসছিলেন স্ট্যান্ডিং টিকিটে। শারীরিকভাবে অসুস্থ ওই সেনা সদস্য রেলওয়ের কর্মীদের অনুরোধ করেছিলেন তাকে বসানোর ব্যবস্থা করতে। কিন্তু রেলকর্মীরা তাকে বসানোর ব্যবস্থা করেননি।
আরো পড়ুন:
কর্মবিরতি ঘিরে নানা অঘটন, বুধবারও ট্রেন চলায় অনিশ্চয়তা
মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা রেলকর্মীদের
ওই সেনাসদস্য লক্ষ্য করেন, বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের বসানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার কাছে স্ট্যান্ডিং টিকিট থাকলেও তাকে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। ট্রেনে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় রেলওয়ের কর্মীরা তাকে ধাক্কাধাক্কি করেন।
ট্রেনে ওই বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেলেও ট্রেনটি রাজশাহী আসার পর প্ল্যাটফর্মে নেমে আবার ওই সেনাসদস্যকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। এরপর রেলওয়ের ওই কর্মীরা চলে যান। পরে খবর পেয়ে রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সেনাবাহিনী।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ময়েন উদ্দিন জানান, সকালে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ডিউটির জন্য রেলওয়ের ওই গার্ড এবং অ্যাটেনডেন্টরা স্টেশনে আসেন। তখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে রেলওয়ে থানায় নিয়ে যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান জানান, আটক তিনজনকে থানায় রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হয়ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি।
ট্রেনের বগি ও পাওয়ার কারে টিকিটবিহীন যাত্রী উঠিয়ে বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন রেলওয়ের এক শ্রেণির কর্মচারীরা। রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল আন্তঃনগর ট্রেনের পাওয়ার কারেই বিনা টিকিটের যাত্রীদের বসানোর ব্যবস্থা করা হয় বলে অভিযোগ আছে।
সম্প্রতি বিনা টিকিটের ট্রেনের যাত্রীর কাছ থেকে এক পাওয়ার কার চালকের টাকা নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। এর জের ধরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে একজন সাংবাদিককে মারধর করা হয়। এবার বিনা টিকিটের যাত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হলেন সেনাসদস্য।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন সদস য র লওয় র ব দ কর
এছাড়াও পড়ুন:
নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস য়োসা আর নেই
নোবেলজয়ী কালজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস য়োসা আর নেই। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাজধানী লিমায় ৮৯ বছর বয়সে মারা যান পেরুর এই লেখক। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিকের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালি যুগের প্রজন্মের অবসান হলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে য়োসার বড় ছেলে আলভারো বার্গাস য়োসা লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের বাবা মারিও বার্গাস য়োসা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। পরিবারের সদস্যরা এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন।’ এক্সে পোস্ট করা এ ঘোষণায় সই করেছেন আলভারোর দুই সহোদর গোনসালো ও মরগানা বার্গাস য়োসা।
১৯৩৬ সালে দক্ষিণ পেরুর অ্যারিকুইপায় মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মারিও বার্গাস য়োসার জন্ম। ২০১০ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত য়োসা লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠ লেখকদের একজন। স্প্যানিশ ভাষার এই ঔপন্যাসিক স্পেনেরও নাগরিক।
১৯৬০ ও ’৭০–এর দশকে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের বিস্ময়কর উত্থানের সময়কার কালজয়ী লেখকদের একজন য়োসা। ওই সময়ের কালজয়ী সাহিত্যিকদের মধ্যে রয়েছেন কলম্বিয়ার গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস ও আর্জেন্টিনার হুলিও কোর্তাসার।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে য়োসার স্বাস্থ্যের অবনতির খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় তাঁকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। গত অক্টোবরে তাঁর ছেলে আলভারো বলেন, তাঁর বয়স ৯০ বছর ছুঁই ছুঁই। এই বয়সে এসে সবারই কাজের মাত্রা কিছুটা কমাতে হবে।
নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিকের মৃত্যুতে সোমবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে পেরু। এ সময় সরকারি ভবন ও স্থাপনায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
য়োসার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’, ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘দ্য গ্রিন হাউস’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’। প্রায় ৩০টি ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে।
লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালি যুগের লেখক মারিও বার্গাস য়োসা