ডিএনএ পরীক্ষার (প্রোফাইলিং) মাধ্যমে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁর নাম মো. হাসান (১৯)। তিনি কাপ্তানবাজারে ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রীর একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন।

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মোরশেদ আলম বলেন, নিহত তরুণকে নিজেদের সন্তান বলে দাবি করেছিল একটি পরিবার। পরে তাদের কাছ থেকে ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। আজ মরদেহের ডিএনএর সঙ্গে এর মিল পাওয়া যায়। এতে এই তরুণের নাম হাসান বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময়ে নিহত অজ্ঞাতনামা সাত ব্যক্তির মরদেহ মর্গে রয়েছে। তাঁদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি এক নারীসহ অন্যদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনের সময় থেকে নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে দুই পরিবার এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। এর মধ্যে হাসানের পরিবার ১২ জানুয়ারি একটি মরদেহ তাদের পরিবারের সদস্যের বলে দাবি করেছিল। পরদিন তাঁর মা–বাবার ডিএনএর নমুনা নেওয়া হয়। সেই নমুনা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হয়েছিল।

মর্গ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসানের পরিবার মরদেহ নেওয়ার জন্য আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেছে। আগামীকাল মরদেহ মর্গ থেকে নেওয়া হবে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মুনসুর জানান, নিহত হাসানের মরদেহটি যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। বাকি ছয়টি মরদেহের মধ্যে একটি যাত্রাবাড়ী থানা–পুলিশ তদারক করছে, অন্য পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্তে শাহবাগ থানা–পুলিশ কাজ করছে।

পরিচয় শনাক্ত হওয়া মো.

হাসানের চাচা নুরে আলম জানিয়েছেন, ‘হাসানকে ৫ আগস্ট বিকেল থেকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে আমরা ফেসবুকে দেখি, একটি ছেলে পায়ে বিদ্যুতের তার প্যাঁচানো অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিল। তার মুখে হালকা দাড়ি ও পরনে পায়জামা-পাঞ্জাবি ছিল। তখন মর্গে এসে মরদেহ দেখে মনে হয়েছিল, সে–ই আমাদের হাসান। আজ তা–ই হলো।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, ভোলা সদর উপজেলার বাগচির গ্রামের দিনমজুর মনির হোসেন ও মা গোলেনুর বেগমের ছেলে মো. হাসান। তিনি যাত্রাবাড়ীর সুতি খালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় থাকতেন। কাজ করতেন কাপ্তানবাজারে ইলেকট্রনিক পণ্যের একটি দোকানে। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে হাসান ছিলেন সবার বড়।

চাচা নুরে আলম প্রথম আলোকে জানান, আগামীকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র পর পর ব র ত হওয় মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-পুতিন

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবে ‘শান্তি আলোচনায়’ অংশ নেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

এর আগে গতকাল বুধবার পুতিন ও ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন। পরে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিয়ে শান্তি আলোচনার জন্য তিনি শিগগির রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠক সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ফিরে আসার পর এটা ছিল দুই নেতার ‘দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক ও স্বীকৃত’ যোগাযোগের ঘটনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, পুতিনের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ ফোনালাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, আলোচনায় ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প ট্রুথে লিখেছেন, ‘আমরা দু’জনেই একমত হয়েছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বন্ধ করতে চাই।’ 

তিনি বলেন, আমরা উভয়েই এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু প্রথমেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং একে অপরের দেশ পরিদর্শন করতে সম্মত হয়েছি।

ইতোমধ্যে দুই নেতা তাদের দলকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।

ট্রাম্প বলেন, আর কোনো জীবনহানি হওয়া উচিত নয়। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং গতকাল মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যাকে আমি গত রাতে হোয়াইট হাউসে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানিয়েছি।

এই ফোনালাপটি মার্ক ফোগেলের মুক্তির একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হয়। ফোগেল একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি রাশিয়ায় তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ভিনিক-কে মুক্তি দিতে পারে। যিনি গত বছর অর্থপাচার ষড়যন্ত্রের দায় স্বীকার করেছিলেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পুতিনের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়ে খোলাসা করেননি।

ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শান্তি আলোচনা আরও গুরুতর হতে পারে।

ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে ইউরোপের উচিত কিয়েভকে সমর্থনে আরও বড় ভূমিকা নেওয়া। পাশাপাশি, গত মাসে ট্রাম্প মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদি তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়।

এদিকে সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ইউরোপের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে চায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজয়নগরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিশুর মৃত্যু
  • জীবনানন্দ দাশ সারাবিশ্বেই গুরুত্বপূর্ণ
  • সেনাসদস্যকে মারধর করায় রেলওয়ের ৩ কর্মচারী আটক
  • এনসিটিবি ভবনের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
  • ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ
  • সুনাগরিক, ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়
  • ৫ আগস্টের ‘মার্চ অন ঢাকা’ ঠেকাতে যেভাবে পরিকল্পনা করেছিল ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার
  • ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-পুতিন
  • ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাবকে আজগুবি বলল উত্তর কোরিয়া