শরীয়তপুরে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ডিলার পয়েন্টে স্টাফদের হাত-পা বেঁধে ভল্টের থেকে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সব তথ্য জানান পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম। গ্রেপ্তাররা হলেন, খুলনা এলাকার মেহেরাজ (৫০), মোরশেদ (৩০) ও মিলন মোল্লা (৩০)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৫ জানুয়ারি জেলাশহরের মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর জেলা পরিবেশক সেলফ প্রমোশন সার্ভিসের ডিলার পয়েন্টে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা ভবনের পেছনের গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে তিন অফিস স্টাফের হাত-পা বেঁধে ভল্টের ভেতরে থাকা ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডিলার পয়েন্টের কর্মচারী শফিউল আলম শিহাব বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় ডাকাতির মামলা করলে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে গত মঙ্গলবার খুলনার বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার সঙ্গে অন্যান্যদের সম্পৃক্ততার কথা জানান। এ সময় তাদের কাছ লুট হওয়া সাড়ে ১৮ লাখ টাকা, ৫০টি মোবাইল ফোন, একটি পিকাপ, মোটরসাইকেলসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। 

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় এসি ল্যান্ডের উপর হামলা, ২ কর্মকর্তা আহত

৬৭ কার্তুজসহ ২ গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার

পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ডাকাত সদস্যদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।

ঢাকা/আকাশ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাঞ্ছারামপুরে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রায় পাঁচ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সাইদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার এ রায় দেন।

নিহত সাইদুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার বাহেরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রাসেল মিয়া (৩০), একই গ্রামের আবদুল খালেক মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া (৩৩) ও চর শিবপুর গ্রামের কাজল মিয়া (৫০)। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকার করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় রিপন ও কাজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য আসামি রাসেল পলাতক রয়েছেন। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত সাইদুর ও তিন আসামি রিপন, কাজল ও রাসেল একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। কাজল পেশায় রিকশাচালক এবং রিপন ও রাসেল ভাঙারি ব্যবসা করতেন। সাইদুর উপজেলার কড়ইকান্দি ফেরিঘাটে ফলের ব্যবসা করতেন। সাইদুরসহ বাকি তিন আসামি একসঙ্গে মাদক সেবনসহ জুয়া খেলতেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কয়েক মাস আগে জুয়া খেলার সময় সাইদুর আসামি রিপন ও কাজলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নেন। কিছুদিন পর রিপন ও কাজল ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে সাইদুরকে বলেন। সাইদুর টাকা পরিশোধের একাধিক তারিখ দেন। সাইদুর ও রাসেলের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। টাকা উদ্ধারের জন্য রিপন ও কাজল সে সময় রাসেলের শরাণাপন্ন হন। টাকা পরিশোধের কথা বললে সাইদুরের সঙ্গে রাসেলের কথা–কাটাকাটি হয়। এতে কাজল ও রিপন নিহত সাইদুরের উপর ক্ষিপ্ত হন। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে রিপন ও কাজল নিহত সাইদুরকে কড়ইকান্দি ফেরিঘাটে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধ করতে চাপ দেন। সেখানে রাসেলও উপস্থিত হয়। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আসামিদের সঙ্গে নিহত সাইদুরের ঝগড়া হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর টাকা পরিশোধ করবে বলে সাইদুর তাঁদের আশ্বস্ত করেন। কিন্তু টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার কড়ইকান্দি ফেরিঘাটে দক্ষিণপাশের বাড়িতে বসে সাইদুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রিপন, রাসেল ও কাজল। ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় সাইদুলকে কৌশলে ডেকে মেঘনপারের বাহেরচর গ্রামের মেঘনা নদীর তীরের এক জমিতে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তারকাটা উঠানো রডের কাউয়াল দিয়ে সাইদুরকে প্রথমে ঘাড়ে এবং পরে পর্যায়ক্রমে গলায় ও ঘাড়ে আঘাত করে ও অবশেষে গলায় চেপে ধরে হত্যা করেন। পরে তাঁর লাশ মেঘনা নদীতে ফেলে দেন তাঁরা। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বাহেরচর লঞ্চঘাটের মেঘনা নদীর পাড়ে সাইদুরের ক্ষতবিক্ষত ও গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন বাঞ্ছারামপুর থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা লোকমান মিয়া বাদী হয়ে রাসেলকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। নিহত সাইদুর সম্পর্কে লোকমানের স্ত্রীর বড় ভাই।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ফখর উদ্দিন আহমেদ খান বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে সেনাসদস্যকে মারধরের অভিযোগে রেলের গার্ডসহ তিনজন গ্রেপ্তার
  • বাঞ্ছারামপুরে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
  • ডাকাত অপবাদ দিয়ে তিন জেলেকে মারধর