রাজশাহীতে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এইচএসটিটিআই) শিক্ষক-কর্মকর্তারা আজ বৃহস্পতিবার পৌনে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের ফটকে পাশের টিচার্স ট্রেনিং (টিটি) কলেজের শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। এইচএসটিটিআই ফটকের সামনে একটা চত্বর বানানোকে কেন্দ্র করে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে পৌনে চার ঘণ্টা পর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিবসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের মধ্যস্থতায় বিকেল পৌনে চারটায় শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেন।

এইচএসটিটিআই সূত্রে জানা গেছে, এইচএসটিটিআইয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করানোর আলাদা মাঠ নেই। তাদের কার্যালয় ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করানো হয়। জায়গাটি নিচু। বর্ষার সময় পানি জমে। এ জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে জায়গাটি পাকা করে উঁচু করার কাজ শুরু করা হয়েছিল; কিন্তু সেখানে উঁচু করলে টিটি কলেজের সামনে জলাবদ্ধতা তৈরি হবে অভিযোগ তুলে আজ মিস্ত্রিদের কাজ করতে নিষেধ করে টিটি কলেজের কর্মচারীরা। পরে টিটি কলেজের শিক্ষকেরা এসে কাজ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে টিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে এইচএসটিটিআইর ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। টিটি কলেজের ফটক দিয়ে এইচএসটিটিআইয়ে ঢুকতে হয়। ওই ফটকেও শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিলে তাঁরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

শিক্ষার্থীরা হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দেন, এইচএসটিটিআইয়ের অধ্যক্ষ মো.

ওয়াহেদুল কবির সুহার্দী, অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন মিঞা ও উপপরিচালক মোছা. নাসিমা খাতুনের অপসারণ করতে হবে। এ জন্য মাউশির রাজশাহীর পরিচালককে ঘটনাস্থলে আসতে হবে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টিটি কলেজের শিক্ষককে এইচএসটিটিআইয়ের এক শিক্ষক ধাক্কা দিয়েছেন। দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি না মানলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

দুপুর ১২টার পর শিক্ষার্থীরা তিন কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান এবং তাঁদের অপসারণেরও দাবি জানান। এ নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নগরের রাজপাড়া থানা-পুলিশ। কিন্তু ফটকে তালা দেওয়া থাকায় তাঁরা ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। পুলিশ দেখে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হন। খবর পেয়ে রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. ইব্রাহিম আলী, কামরুজ্জামান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব শামীম আরা চৌধুরী, রাজশাহী মাউশির সহকারী পরিচালক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সবার উপস্থিতিতে এইচএসটিটিআইয়ের পক্ষ থেকে উপপরিচালক নাসিমা খাতুন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপরে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

টিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শওকত আলী খান বলেন, একটা ঘটনা ঘটেছিল। তারা পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলেছেন। ওই জায়গা যেভাবে উঁচু করা হচ্ছে, সেভাবে করলে টিটি কলেজের ফটকের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। কাজটা সমন্বয় করে করা দরকার ছিল। তাঁরা সেটি করেননি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এসেছিলেন। তিনি বিষয়টি বুঝেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের সম্মান শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। টিটি কলেজের মাঠে ইচ্ছা করলে এইচএসটিটিআইর শিক্ষার্থীদের পিটি করানো যায়।

এইচএসটিটিআইর অধ্যক্ষ মো. ওয়াহেদুল কবির সুহার্দী বলেন, দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে দিয়ে প্রাক্কলন করে কাজটি করাতে শুরু করেছিলেন। কাজের কারণে টিটি কলেজের কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, কাউকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের এই দাবি সঠিক নয়। টিটি কলেজের একজন শিক্ষক তাঁদের দিকে ছুটে আসছিলেন। তাঁদের একজন শিক্ষক মাঝখানে দাঁড়িয়ে তাঁকে ঠেকিয়েছেন। এর বেশি কিছু হয়নি। ভুল–বোঝাবুঝি এড়াতে সবার পক্ষ থেকে উপপরিচালক নাসিমা খাতুন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কল জ র শ ক ষ র স মন র ফটক

এছাড়াও পড়ুন:

কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে ১৩ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ১৩ পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাসেলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে একই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক কারণে ওই ১৩ জনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে পাথরবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসনিক কারণে ১৩ পুলিশ সদস্যকে সিলেট পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করার নির্দেশনার দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁরা সেখানে সংযুক্ত হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের বিষয়টি তাঁর জানা নেই।

প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুজন উপপরিদর্শক (এসআই), দুজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ৯ জন কনস্টেবল। তাঁরা হলেন এসআই খোকন চন্দ্র সরকার ও মিলন ফকির, এএসআই শিশির আহমেদ ও শামীম হাসান, কনস্টেবল নাজমুল আহসান, মুন্না চৌধুরী, নাইমুর রহমান, তুষার পাল, আবু হানিফ, সাখাওয়াত সাদী, সাগর চন্দ্র দাস, মেহেদী হোসেন ও কিপেস চন্দ্র রায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জে শাহ আরেফিন টিলা থেকে অবৈধভাবে পাথর তোলা হচ্ছে। ওই পাথর ট্রাক্টরে করে বিভিন্ন জায়গায় পরিবহন করা হয়। পাথরবোঝাই গাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পাথরবোঝাই গাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। এরপর তাঁদের থানা থেকে প্রত্যাহার করা হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সম্পদের হিসাব গোপন রাখার দায়ে ডিবির সাবেক এসআইয়ের কারাদণ্ড
  • চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির মামলা করলেন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা
  • এক থানার ১৩ পুলিশ প্রত্যাহার 
  • কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে ১৩ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার