সাগর–রুনি হত্যা: র্যাবের সাবেক পরিচালক সোহায়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে টাস্কফোর্স
Published: 13th, February 2025 GMT
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় এবার নৌবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন আলোচিত এই হত্যা মামলা তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত সম্প্রতি মোহাম্মদ সোহায়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ সোহায়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেন। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।
ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২১ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল গ্রেপ্তার হন।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা। এ ছাড়া পশ্চিম রাজাবাজারের যে বাসায় সাগর–রুনি ভাড়া থাকতেন, সেই বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুলকে আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। একই বাসার অপর নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে চার সদস্যের টাস্কফোর্স।
সব মিলিয়ে সাগর-রুনি হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, আবু সাঈদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনই মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে তাঁদের সাগর-রুনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমানে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিনে মুক্ত আছেন। অন্যদিকে মিন্টু এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও অন্য মামলায় কারাগারে আছেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এ মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছিল র্যাব। সর্বশেষ গত বছরের ১৫ অক্টোবর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমার দিন ধার্য ছিল; কিন্তু প্রতিবেদন জমা দেয়নি র্যাব। র্যাবের তদন্তকালে প্রতিবেদন জমার তারিখ পেছায় ১১২ বার। দীর্ঘ সময় পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তারা।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর এ মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টাস্কফোর্সকে মামলার তদন্ত ছয় মাসের মধ্যে শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গত ৪ নভেম্বর র্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই।
২০১৭ সালের ১৫ মার্চ র্যাবের পক্ষ থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মাহিরের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানিয়েছিল, তখন ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক ল্যাবে। ডিএনএ প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলে অজ্ঞাত দুই পুরুষের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়। তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
টাস্কফোর্সের প্রধান ও পিবিআইয়ের প্রধান মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স ব দ কর র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘কী বলব, কথা বলার কি সুযোগ আছে’, আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক প্রতিমন্ত্রী
যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে কিছু বলতে চাইলে উত্তর দেন, ‘কী বলব, কথা বলার কি সুযোগ আছে?’।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর ফেরদৌস আলম তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। দীপঙ্কর তালুকদারকে দুপুর ১টার কিছু সময় পর আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।
তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তবে মূল নথি না থাকায় রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়নি। নথিপ্রাপ্তি সাপেক্ষে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হবে বলে আদেশ দেন আদালত।
পরে দীপঙ্কর তালুকদার আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন সাংবাদিকরা কিছু বলতে চাইলে দীপঙ্কর তালুকদার উত্তর দেন, ‘কী বলব, কথা বলার কি সুযোগ আছে। এখানে সেই সুযোগ আছে? কথা বললেই তো সামনের দিকে যেতে হবে।’’
পরে তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার রাজধানীর সোবহানবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ