ফতুল্লা থেকে মোটর সাইকেল চুরি, সুনামগঞ্জ থেকে উদ্ধার করল পিবিআই : গ্রেপ্তার ২
Published: 13th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন জেলা কারাগারের বিপরীতে আয়কর অফিসের সামনে থেকে চুরি যাওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালত তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত ২৬ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের সময় ফতুল্লায় আয়কর অফিসের সামনে থেকে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল (রেজিঃ নং- ঢাকা মেট্রো ৩৩-৬৯৯০, মডেল জ১৫, ঠ৩, নীল রঙের, মূল্য ৪,৭৫,০০০ টাকা) চুরি হয়ে যায়।
ঘটনার পর অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এবং পুলিশ সুপার, পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার তত্ত্বাবধানে তদন্ত শুরু হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চোরচক্রের অবস্থান শনাক্ত করে জানা যায়, মোটরসাইকেলটি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানাধীন এলাকায় রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টার দিকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি ছাতক থানার সহায়তায় ছাতক জামে মসজিদের সামনে থেকে দুই চোরচক্র সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো সুনামগঞ্জ ছাতক উপজেলার মোঃ সাকিব মাহামুদ (২৭), মোঃ মিজানুর রহমান (২৫)।
তাদের দখলে থাকা চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি নম্বরবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর মিলিয়ে জব্দ তালিকা অনুযায়ী সেটি নিশ্চিত করা হয় এবং আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত দুই আসামি অভ্যাসগত মোটরসাইকেল চোর এবং আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা চুরি করা মোটরসাইকেল সংগ্রহ ও কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত।
তদন্তের স্বার্থে আরও অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে হাজির করে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার এক কর্মকর্তা জানান, “আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই মোটরসাইকেল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের গ্রেফতারের ফলে চোরচক্রের আরও তথ্য পাওয়া যাবে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স ন মগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
পরিকল্পনাতেই নেই ওভারপাস
ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তাসলিমা খাতুন। প্রতিদিন বাসা থেকে লিঙ্ক রোড পার হয়ে তাঁকে যেতে হয় কর্মস্থলে। এই সড়কটি আগের চেয়ে চওড়া হওয়ায় যানজট কমেছে। গাড়িগুলো অনেক দ্রুত চলে। স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা তাঁকে পার হতে হয় দুর্ঘটনার আতঙ্ক মাথায় নিয়ে। একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি প্রতিদিন এই জায়গায় রাস্তা পারাপারকারী হাজারো পথচারীর।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডটি ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অথচ ব্যস্ততম ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন জায়গায় কোনো ওভারপাস নেই। এই স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হলে পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।
স্টেডিয়ামের কাছাকাছিই বাসা সংগীতশিল্পী পান্থ ফারুকের। তিনি বলেন, যেসব স্থান দিয়ে অনেক বেশি মানুষ রাস্তা পার হয় ও দু’পাশের রাস্তা লিঙ্ক রোড ক্রস করেছে, সেসব পয়েন্টে ওভারপাস দেওয়া হয়েছে। ভূইগড়, জালকুঁড়ি ও শিবু মার্কেট এলাকায় তিনটি ওভারপাস দেখেছেন। কিন্তু স্টেডিয়াম এলাকায় প্রচুর মানুষ চলাচল করেন। এখানে লিঙ্ক রোডের দু’দিক থেকে যানবাহন ক্রস করে। কিন্তু কেন এখানে ওভারপাস নির্মিত হলো না, তারা বুঝতে পারছেন না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কার্যকরী সদস্য মাহাবুব হোসেন বিজন বলেন, ফতুল্লা ৩ নম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে এখন সংস্কারকাজ চলছে। তাই খেলা বন্ধ। যখন গার্মেন্ট ছুটি হয় বা গার্মেন্টে যাওয়ার সময় হয়, তখন লিঙ্ক রোড পারাপারের সময় রাস্তার দু’পাশে যানবাহন আটকে থাকে। এখান দিয়ে মোড় নেওয়ার উপায় থাকে না। দু’পাশ থেকে মোড় নেওয়ার স্থান কয়েক কিলোমিটার দূরে। তাই শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার জন্য ছোট যানবাহন জমে থাকে। ফলে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।
মাহাবুব হোসেনের ভাষ্য, যখন খেলা শুরু হবে, তখন বিপুলসংখ্যক দর্শক আসেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য ও ফেরিওয়ালারা। এ সময় নিঃসন্দেহে যানজট তৈরি হবে। ভোগান্তি বাড়বে। দুর্ঘটনা বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে লিঙ্ক রোড ছয় লেনের পরিকল্পনার সময়ই এখানে ওভারপাস রাখা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে সমকালের কথা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এই পয়েন্টে ওভারপাস থাকা প্রয়োজন। কারণ, এ স্টেডিয়ামের খেলা দ্রুতই শুরু হবে। তখন অন্ততপক্ষে ১৮ হাজার দর্শক আসবেন। আজ হোক কাল হোক– এটি গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুতে পরিণত হবে। দর্শকদের জন্য এখানে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আসবে। এখানে যে ওভারপাস করা হয়নি, এটি জানতাম না। আমি ভেবেছিলাম, অন্য পয়েন্টে যেহেতু হয়েছে, এখানেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওভারপাস করবে।’ এ বিষয়ে ব্যবস্থা যোগাযোগ করবেন তিনি।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের ছয় লেন প্রকল্পটিতে খরচ হচ্ছে ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুনে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন দফায় সময় বাড়িয়ে এটি ২০২৫ সালের ৩০ জুন শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নারায়ণগঞ্জ অংশের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘এবারের পরিকল্পনায় স্টেডিয়াম পয়েন্টে কোনো ওভারপাস ছিল না। যারা পরিকল্পনা করেছেন, তারা কেন এখানে ওভারপাস রাখেননি, তা বলতে পারব না। তবে এখানে ওভারপাস রাখা যৌক্তিক। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ এখানে ওভারপাস করতে হলে নতুন প্রকল্প নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ছয় লেনের প্রকল্প শেষের পথে। এই প্রকল্পের আওতায় ওভারপাস করার সুযোগ নেই।