গানটি অর্ধেক লিখেই মারা যান গীতিকার
Published: 13th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’–এর শেষ দিনে আজ সন্ধ্যায় পারফর্ম করেছে আর্টসেল। সন্ধ্যা সাতটায় ‘ধূসর সময়’ গানের মাধ্যমে কনসার্ট শুরু করে ব্যান্ডটি। এরপরই দ্বিতীয় গান ‘পথচলা’ গাইতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন ব্যান্ডের সদস্যরা। জানান, গানটি অর্ধেক লিখেই মারা যান গানটির গীতিকার।
আর্টসেল ব্যান্ডের জনপ্রিয় গানের একটি ‘পথচলা’। গানটি তাদের ‘অন্যসময়’ অ্যালবামের। গানটির গীতিকার তরিকুল ইসলাম রূপক। তবে গানটি শেষ করতে পারেননি তিনি। ‘পথচলা’ গানের প্রথম অংশ লেখার পরই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। গানের শেষ অংশটি লেখেন রুম্মান আহমেদ।
‘আমি আজ নেই, তবুও কত সুর ওঠে বেজে তোমার ওই গানের মাঝে; এই পথ গেছে মিশে আমার বেলা শেষে’, এই অংশ লেখা হয় রূপককেই উদ্দেশ করেই। শুধু তা–ই নয়, এই অ্যালবামের ‘রূপক’ শিরোনামের গানটিও তাঁকে নিয়েই লেখা।
মঞ্চে রূপকের জন্য দোয়া চান ব্যান্ডটির ভোকাল ও লিড গিটারিস্ট লিংকন। বলেন, ‘আমাদের বন্ধুর জন্য সবাই প্রার্থনা করবেন। রূপক যেখানেই আছে, যেন ভালো থাকে।’
আর্টসেলের পরে নগরবাউল জেমসের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তারুণ্যের উৎসব।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পূর্ণসেবা ও নতুন শিষ্যত্ব দিয়ে ভাঙল সাধুর হাট
সাধুসঙ্গ, রাখালসেবা, অধিবাস, পূর্ণসেবাসহ নানা রীতি ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে সাঙ্গ হলো ফকির লালন শাহ স্মরণোৎসব। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অষ্টপ্রহরব্যাপী গুরুকার্যের মাধ্যমে শুরু হয় সাধুসঙ্গ। সর্বশেষ শক্রবার দুপুরে লালন ভক্ত সাধু-গুরুদের পূর্ণসেবার মাধ্যমে উৎসব শেষ হয়েছে। সকালে বাল্যসেবায় পায়েস ও মুড়ি দেওয়া হয় ফকির বাউল ভক্তদের। দুপুরে পূর্ণসেবায় ছিল ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ও দই। এর পর লালন মতে দীক্ষিতদের খেলাফত (শিষ্যত্ব) প্রদান করেন তাদের নিজ নিজ গুরুরা।
দোল পূর্ণিমা তিথিতে প্রতি বছর ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে তিন দিনব্যাপী সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় ফকির লালন শাহর স্মরণোৎসব। সাধু-গুরু, লালন ভক্তদের সরব উপস্থিতি, গান ও গ্রামীণ মেলায় জমজমাট হয়ে ওঠে আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ উৎসবের আয়োজন করে। এবার রমজানের কারণে এক দিনই লালন স্মরণোৎসব হয়েছে। ছিল না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন। ফলে উৎসবে লালন ভক্ত বাদে অন্য লোকজনের উপস্থিতিও ছিল কম।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে লালন একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। ওই দিন রাত ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আখড়াবাড়িতে খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে আসর বসিয়েছেন বাউল সাধুরা। একতারা বাজিয়ে গানে গানে তারা স্মরণ করছেন ফকির লালন শাহকে। এ সময় তেমন ভিড় চোখে পড়েনি।
উৎসবে আগত ফকির রাজ্জাক শাহ বলেন, ‘সাঁইজি (ফকির লালন) পূর্ণিমা তিথিতে সাধুসঙ্গ করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরাও এমন আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছি। অষ্টপ্রহরব্যাপী গুরুকার্য, রাখালসেবা, অধিবাস, বাল্যসেবা ও পূর্ণসেবার মাধ্যমে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। এবার সাধুসঙ্গে আসল বাউলরা অংশ নেওয়ায় কোনো ভিড় বা ঠেলাঠেলি ছিল না। এতে খুশি আমরা।’
ফকির হৃদয় শাহ বলেন, ‘আমরা চাই পারস্পরিক উৎসবে আসা সবার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হোক। প্রেমের জায়গা গভীর হোক ও ঘৃণা দূর হোক। দোল পূর্ণিমা তিথিতে লালন শাহ তাই করতেন।’
আখড়াবাড়ির ভারপ্রাপ্ত খাদেম মশিউর রহমান বলেন, দুপুরে পূর্ণসেবার মাধ্যমে শেষ হয়েছে সাধুসঙ্গ। এবারও লালন ভক্ত অনুসারীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল আখড়াবাড়ি। আসছে ১ কার্তিক ফকির লালনের তিরোধান দিবসে আবার মিলনমেলায় শরিক হবেন লালন ভক্ত ও প্রেমীরা।