প্রায় ৮ বছর পর নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি
Published: 13th, February 2025 GMT
দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস পর কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পেলেন জেলেরা। হাইকোর্টের আদেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শর্তসাপেক্ষে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, হাইকোর্টের রুলনিশির আলোকে পিটিশনারের আবেদন নিষ্পত্তি করে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হলো। তবে এ অনুমতি পাঁচটি শর্তসাপেক্ষে প্রদান করা হয়েছে।
শর্তসমূহ হলো- ১.
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবরে জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো।’’
টেকনাফ জালিয়াপাড়ার শফি উল্লাহ মাঝি বলেন, ‘‘নাফ নদীতে মাছ শিকারে নিষেধজ্ঞা থাকায় চরম অর্থনৈতিক সংকটে ছিলাম। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।’’
জেলে ছুরত আলম বলেন, ‘‘নাফ নদীতে পুনরায় জাল ফেলতে পারব জেনে ভালো লাগছে। প্রতিদিন মাছ ধরে লোকজনে যে ঋণ পায় তা পরিশোধ করতে পারব।’’
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফ নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। প্রায় ৮ বছর পর পুনরায় মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে জেলেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা/তারেকুর/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন পার্বতীপুরের ইউএনও, বাসায় চলছে দাপ্তরিক কাজ
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির পর আজ বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে যাননি ইউএনও ফাতেমা খাতুন। তিনি তাঁর বাসভবন থেকেই দাপ্তরিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের অপসারণের দাবিতে গতকাল বেলা তিনটায় উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মানববন্ধন শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। তাঁকে কার্যালয় ত্যাগ করতে দুই ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় কার্যালয় ছাড়েন ইউএনও ফাতেমা খাতুন। ঘটনার পরপরই ইউএনও কার্যালয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, ইউএনও ফাতেমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই পার্বতীপুরে একক স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে পরপর দুবার বদলির আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে তা স্থগিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা আছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির পার্বতীপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমরা কোনোভাবেই তাঁকে ছাড় দেব না। আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর অপসারণের দাবি করেছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার ইউএনও ফাতেমা খাতুন বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না কেউ।’
আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখছেন। এ ছাড়া ইউএনও কার্যালয়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হওয়ার আশঙ্কা আছে।