রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি বাঙলা কলেজে আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী ‘সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ‘সমাপনী অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে আয়োজনের ইতি টানা হয়। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঙলা কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মিটুল চৌধুরী, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও শিক্ষক উপদেষ্টা (বাকসাস) নাহিদা পারভীন এবং সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান সাবেহা সুলতানা। সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক উপদেষ্টা (বাকসাস) প্রফেসর সায়েমা ফিরোজ। 

শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রফেসর সায়েমা ফিরোজ বলেন, ‘‘এরকম প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করায় বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতিকে ধন্যবাদ। তরুণদের মাঝে সঠিক সাংবাদিকতা ছড়িয়ে পড়ুক, এটা আমাদের চাওয়া। সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্ত থাকা অনেক বড় অর্জন। যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ।’’

ডিআরইউ-এর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘‘এরকম আয়োজন দেখে অনেক আনন্দিত। এত শিক্ষার্থী সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ নিতে এসেছেন, সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। আমি বাকসাসকে অনুরোধ করব, আপনারা এমন আরো কর্মশালায় আয়োজন করবেন। এ ছাড়াও আমি উপাধ্যক্ষ ম্যামকে অনুরোধ করব, এই ক্যাম্পাসে জার্নালিজম বিভাগ চালু করতে যেন বিবেচনায় রাখা হয়।’’

সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। 

তিন দিনের কর্মশালায় সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও দেশবরেণ্য প্রথিতযশা সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতার কলাকৌশল ও রিপোর্টিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। এ ছাড়াও, টেলিভিশন সাংবাদিকতা, সংবাদ লিখন, ফিচার রাইটিং ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিভিন্ন বিষয়ে ‘বিশেষ প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন— মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান রফিকুজ্জামান রুমান, সরকারি বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর সায়মা ফিরোজ, নিউজ টোয়েন্টিফোরের বিশেষ প্রতিনিধি ও আলোচিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক মো.

তাইমুর হাসান শুভ, প্রথম আলোর সিনিয়র ফটো জার্নালিস্ট সাবিনা ইয়াসমিন, আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার (ক্রাইম) আমানুর রহমান রনি, দৈনিক কালবেলার ডেপুটি ইনচার্জ (মাল্টিমিডিয়া) অমিত হাসান রবিন, দৈনিক সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সদস্য মাজহারুল ইসলাম রবিন, বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপক জাহেদ হাসান ফরহাদ; মোহনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মো. মনিরুল ইসলাম এবং রাইজিংবিডি ডটকম-এর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক নাজমুল হোসেন। 

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে, না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট ছিল, তার বড় প্রমাণ সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচার না করা। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। বিচার না করলে কেউ পার পাবেন না। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী তারিখে (২ মার্চ) প্রতিবেদন জমা না হলে রাজপথে আন্দোলনে নামা হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে ডিআরইউ।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ সেই খুনের ১৩ বছর পূর্ণ হলো।

সমাবেশে ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, আওয়ামী লীগ যে ফ্যাসিস্ট দল ছিল, তার প্রমাণ সাগর-রুনি হত্যার বিচার না করা এবং কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের নাম প্রকাশ না করা। পাশাপাশি তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় নাম প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী তারিখ ২ মার্চ। আবু সালেহ আকন বলেন, ওই তারিখেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া না হলে তাঁরা একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করবেন। ওই কমিটির মাধ্যমে আবারও তাঁরা রাজপথে আন্দোলনে নামবেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আগামীকাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পরও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কেন সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে, এ প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ২ মার্চের পরও সময়ক্ষেপণ করা হলে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেবেন।

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, সাগর-রুনিকে যে বাড়িতে হত্যা করা হয়েছিল, ওই বাড়িটি সিসিটিভির আওতায় ছিল। কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এটা পুলিশের জানার কথা। তিনি আরও বলেন, কারও বেডরুমে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়—সংসদে দাঁড়িয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য দেওয়ার পর বোঝা গেছে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়া যাবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এই হত্যার বিচার হবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: ৬ বছর মামলার কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি ১০ ঘণ্টা আগে

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে গত ছয় মাসে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ঘটেছে কি না, এমন প্রশ্ন রেখে সাংবাদিক নেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, তদন্তের দায়িত্ব যাদের হাতে ছিল, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অন্তত অভিযোগপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বিচার না করার পেছনে যারা দায়ী, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মত দেন তিনি।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা মানোয়ারুল ইসলাম, রাজু আহমেদ, সালেহ বিপ্লব, গাজী আনোয়ার, বাবুল তালুকদার, এম এম বাদশা, আজমল হক হেলালী প্রমুখ।

সংহতি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এ এম এম আনিসুল আউয়াল।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যা: ১৩ বছরে হত্যা মামলার তদন্ত পিছিয়েছে ১১৫ বার৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিআরইউ শীতকালীন ব্যাডমিন্টনের পুরস্কার বিতরণী
  • মোবাইল সাংবাদিকতায় ডিআরইউ সদস্যদের পিআইবি প্রশিক্ষণ
  • এবার সম্পত্তি ভাগ নিয়ে মুখ খুললেন সোহেল চৌধুরী-দিতির মেয়ে
  • বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ডিআরইউ
  • সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে, না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি