যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টের পঞ্চম দিনে, অর্থাৎ গতকাল বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত আরও ৫৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় অভিযানে দুটি পিস্তল, একটি ছুরি, একটি রামদা, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ছাড়াও বিভিন্ন মামলায় আজ বিকেল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১ হাজার ৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ অভিযান শুরুর পর শনিবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৩ হাজার ৪১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যৌথ বাহিনী দেশজুড়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে এক সভায় এ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। অভিযান সম্পর্কে এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশ ডেভিলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট চলবে।

আরও পড়ুনঅপারেশন ডেভিল হান্টে আরও ৫৯১ জন গ্রেপ্তার১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে মারধরের শিকার হন ১৫-১৬ জন শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ওই রাতে ডাকাতির খবর পেয়ে তা প্রতিহত করতে সেখানে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের মারধর করা হয়।

আরও পড়ুনগাজীপুরে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আরও ২৩ জন আটক৮ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি অব্যাহত

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ধীরগতি চলছেই। গত জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে বরাদ্দের মাত্র সাড়ে ২১ শতাংশের মতো। এ হার সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। টাকার অঙ্কেও বাস্তবায়নের পরিমাণ কমে গেছে অনেক। 
গতকাল বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপির বাস্তবায়ন সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গত জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একই সময়ে বাস্তবায়ন হয় ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রথম সাত মাসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। 
টাকার অঙ্কেও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে এডিপি বাস্তবায়নের পরিমাণ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এডিপির ৫৯ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয় এডিপির ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। 
একক মাস হিসেবে গত জানুয়ারিতে বাস্তবায়ন হয়েছে এডিপির ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই মাসে এ বাস্তবায়নের হার ছিল ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ বছরের জানুয়ারিতে অর্থ ব্যয় হয় ৯ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ১২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। 
অতিমারি করোনার অভিঘাতের পর সব ধরনের ব্যয়ে সাশ্রয়ী নীতি নেওয়া হয়। এ কারণে প্রায় তিন বছর ধরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি ধীর। এর মধ্যে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এডিপির আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়া হচ্ছে। আবার কিছু প্রকল্পের পরিচালক পালিয়ে গেছেন। সরকার পতনের আন্দোলনে অবরোধসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ বন্ধ ছিল। এমন বাস্তবতায় জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। 
চলতি অর্থবছর ১ হাজার ৩২৭টি প্রকল্প, ১৭টি উপপ্রকল্প ও উন্নয়ন সহায়তা থোক হিসেবে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পের বিপরীতে মূল এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ