টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের অতিথি না করায় অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুরা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, বিষয়ভিত্তিক কুইজ ও কাবিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় স্থানীয় বিএনপি নেতারা। 

স্থানীয়রা জানান, অর্জুনা ইউনিয়ন পর্যায়ের ২৩টি বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় জগৎপুরা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। উদ্বোধনকালে অর্জুনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়ামত আলী খানের নেতৃত্বে স্থানীয় কিছু বিএনপির নেতাকর্মী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়। পরে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুষ্ঠান থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসা বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চলে যায়।

এ ব্যাপারে অর্জুনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়ামত আলী খানের মোবাইলে কল করলে হাকিম ডাক্তার নামে তার এক সহকর্মী জানান, সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কার্ডে না থাকায় এবং না জানিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় বন্ধ করা হয়েছে।

জগৎপুরা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছারোয়ার জাহান বলেন, ‘‘স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাওয়াত দিয়েছিলাম। কিন্তু উদ্বোধনের সময় মঞ্চে না ডাকায় কিছু লোকজন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেয়।’’ 

 উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, তিনি ঘটনা শুনেছেন। বিস্তারিত জেনে ইউএনও মহোদয়কে অবগত করা হবে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, ঘটনার ব্যাপারে এখনো কেউ জানায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পপি খাতুন বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

ঢাকা/কাওছার/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি গাছ কাটায় নীরব প্রশাসন

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সড়কের পাশে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর ১৫ দিন পেরোলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মানাখান এলাকায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রিতা আক্তার নামে এক নারী সরকারি গাছ কাটেন। কিন্তু এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে উল্টো চারজন সাংবাদিক, পুলিশ ও বন বিভাগের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি। ২ মার্চ শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার ও নড়িয়ার ইউএনওর কাছে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে রিতা দাবি করেন, ওই ব্যক্তিরা তাঁর কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন।
রিতা তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর বাড়ির সামনে সরকারি রাস্তার পাশের একটি গাছ কাটছিলেন। সে সময় বন বিভাগের নৈশপ্রহরী জামাল মিয়া ও চার সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হন। সাংবাদিকরা হলেন– নড়িয়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বৈশাখী টেলিভিশনের শরীয়তপুর প্রতিনিধি আবদুল খালেক ইমন পেদা, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর ছৈয়াল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংবাদ দিগন্ত প্রতিনিধি নুরে আলম জিকু এবং আনন্দ টিভির প্রতিনিধি জামাল হোসেন।
অভিযোগে বলা হয়, ওই চার সাংবাদিক ও বন বিভাগের কর্মচারী তাঁকে মামলার ভয় দেখিয়ে ৩২ হাজার টাকা আদায় করেন এবং রাতের মধ্যে গাছ কেটে সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। ঘটনার পরদিন ১ মার্চ গভীর রাতে নিয়মিত টহলের সময় নড়িয়া থানার এসআই রাজীব হোসেন সরকারি গাছ কাটার অভিযোগে তাঁকেসহ কয়েকজন শ্রমিককে আটক করেন। কিন্তু অভিযুক্ত সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ২ মার্চ সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তা জামাল মিয়া ও অভিযুক্ত সাংবাদিকরা আবারও তাঁর বাড়িতে গিয়ে আরও টাকা দাবি করেন এবং মামলা করার হুমকি দেন। পরে তিনি শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার ও নড়িয়ার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
নড়িয়ার ইউএনও আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মার্চ এলজিইডির প্রকৌশলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনও তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রভাবশালীরা প্রায়ই সরকারি গাছ কেটে নিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তামিম বলেন, প্রশাসনের নীরবতায় প্রভাবশালীরা নির্বিঘ্নে সরকারি গাছ কাটছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত।
ঘটনাটি নতুন মোড় নেয় গত বুধবার, যখন রিতা আবার একটি লিখিত দরখাস্ত দিয়ে তাঁর আগের অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর অভিযোগ মিথ্যা ছিল এবং পুলিশ বা সাংবাদিকরা তাঁর কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি।
এ বিষয়ে ইউএনও আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, প্রথমে অভিযোগ করার পর এখন তা প্রত্যাহার করায় বিষয়টি সন্দেহজনক। তিনি কোনো চাপে পড়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন কিনা, সেটি তদন্ত করা হবে।
গাছ কাটার ঘটনায় প্রশাসনের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, গাছ যেহেতু এলজিইডির সম্পত্তি, তাই তাদের নিয়মিত মামলা করতে বলা হয়েছে। গত সপ্তাহে মামলা করা হয়নি। তবে এই সপ্তাহে মামলা করা হবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাংবাদিকরা দাবি করেছেন, তারা নির্দোষ এবং রিতা তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। নড়িয়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবদুল খালেক ইমন পেদা বলেন, তারা সাংবাদিক হিসেবে সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিতা তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন। তবে এখন তিনি নিজেই অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। অথচ প্রশাসন গাছ কাটার ঘটনায় এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রিতা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রথমে তিনি ব্যস্ত থাকার কথা বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টিসিবির সাত হাজার স্মার্ট কার্ড বিতরণ হয়নি, পণ্য দেওয়া হচ্ছে ‘নেতাদের স্লিপে’
  • বিনা মূল্যে নৌকা না পেয়ে কর্মচারীকে মারধর করার অভিযোগ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে
  • সরকারি গাছ কাটায় নীরব প্রশাসন
  • ডিসি–ইউএনও–এসি ল্যান্ডরা কি পারবে নদীর সুরক্ষা দিতে