গাইবান্ধায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্যাহ আল-মামুন মন্ডলকে (৩০) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে উপজেলার ধাপেরহাট বন্দরের জামদানি সড়ক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী নিহতের লাশ নিয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাট বন্দরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রেখেছে। এতে মহাসড়কে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

নিহত আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন মন্ডল (৩০) উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান মন্ডলের ছেলে ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ধাপেরহাট ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া বর্তমানে তিনি বিপিএলের সিলেটের নেট ফাস্ট বোলার ছিলেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আব্দুল্যাহ আল-মামুন মন্ডলকে ওই এলাকায় দেখা যায়। এর পর পরই এক দল দুর্বৃত্ত দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে। 

খবর পেয়ে তার স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। দ্রুত তাকে পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া হচ্ছিল। পথে তার মৃত্যু হয়। পরে তার লাশ নিয়ে এলাকাবাসী ধাপেরহাটে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। 

নিহতের পিতা আব্দুল মান্নান মন্ডল জানান, গত কয়েক বছর থেকে আব্দুল্যাহ আল-মামুন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল না। মামুন দীর্ঘদিন থেকে ক্রিকেট খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। সে গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সিলেট থেকে বাড়ি এসেছিল। তিনি এই হত্যার বিচার চান। 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রাত ৮টায় ঘটনাস্থল থেকে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার জানান, মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়া দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত ও আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঢাকা/মাসুম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল য হ আল ম ম ন অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে জামায়াতপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা

পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার অভিযোগে জেলা জামায়াতের আমিরসহ জামায়াতপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলাটি করেন পটুয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ও জেলা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. মিজানুর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন জামায়াতপন্থী আইনজীবী পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার, পটুয়াখালী জেলা জামায়াতে আমির আইনজীবী নাজমুল আহসান, জামায়াতের ল ইয়ার্স কাউন্সিলের পটুয়াখালী জেলা শাখার সেক্রেটারি মো. আবু সাঈদ খান শামীম, আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন, মো. মহিউদ্দিন, মো. নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী, মো. তাওহীদুর রহমান, মো. মোর্শেদুজ্জামান সাজন, মোহাম্মদ আলী, গাজী মো. হুমায়ূন কবির ও অধ্যাপক কায়সারী। মামলায় ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় বিএনপিপন্থী ৩৭ জন আইনজীবীকে এ মামলায় সাক্ষী দেখানো হয়েছে।  

এজাহারে বলা হয়েছে, ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৫-২৬ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম ক্রয় এবং জমা দেওয়ার দিন ছিল। ফরম ক্রয়-বিক্রয় শুরু হলে জেলা জামায়াতের আমির নাজমুল আহসান দলীয় আইনজীবী ও বহিরাগতদের নিয়ে বিভিন্ন পদে ছয়টি মনোনয়ন ফরম ক্রয় করে জমা দেন। ফরম বিক্রয়ের সময় শেষ হওয়ার পর আবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী পরিষদের সক্রিয় সদস্য মো. মহিউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম ক্রয়ের কথা জানান। এ সময় সাধারণ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা ফরম ক্রয়-বিক্রয়ে দ্বিমত জানালে জামায়াতের জেলা আমির আইনজীবী মো. নাজমুল আহসানের নির্দেশে এজাহারভুক্ত আসামিরা বাদী ও সাক্ষীদের মারধর করে মারাত্মক জখম করেন। হামলার সময় বাদী ও সাক্ষীদের মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে জামায়াতপন্থী আইনজীবীর মামলায় জামিন পেলেন বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবী৬ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে মামলার প্রধান আসামি জেলা জামায়াতের আমির মো. নাজমুল আহসান বলেন, ‘গত ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে কে কাকে হামলা ও মারধর করেছে, তার ভিডিও চিত্র দেশবাসী দেখেছেন, এখানে লুকানোর কিছু নাই। অপরাধীদের অপরাধ ঢাকার জন্য বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন, যা ভিত্তিহীন।’

এর আগে ওই ঘটনায় বুধবার রাতে বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। হামলার শিকার পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে বহিরাগত আরও ৩৫ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এজাহারভুক্ত বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবী পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে আপসের শর্তে জামিন পান।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রথমে জামায়াতপন্থী আইনজীবী একটি মামলা করেন। এক দিন পর বিএনপিপন্থী আইনজীবী একটি মামলা করেন। দুই মামলায় সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনপটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে হামলার অভিযোগে বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ