ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেই আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির নতুন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করায় তুলসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি।

যুক্তরাষ্ট্রে নরেন্দ্র মোদির দুই দিনের সফরে অনেক কর্মসূচি রয়েছে। আজ সকালে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে তুলসীর সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মব্যস্ত সফর শুরু হলো। পরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মোদি লিখেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে বৈঠক করলাম। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের দৃঢ় সমর্থক।’

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে তুলসী গ্যাবার্ডের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে মার্কিন সিনেট। তুলসী গ্যাবার্ডের মনোনয়নকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে বিতর্কিত মনোনয়ন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুনতুলসী গ্যাবার্ড হলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান, ট্রাম্পের আরেক বিজয়১০ ঘণ্টা আগে

মোদি আজ সকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছালে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী ভারতীয় তাঁকে স্বাগত জানান। তিনি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে এক্সে এক পোস্টে মোদি লেখেন, ‘শীতের ঠান্ডায় এ এক উষ্ণ অভিনন্দন। ঠান্ডা আবহাওয়া উপেক্ষা করে ওয়াশিংটন ডিসির প্রবাসী ভারতীয়রা আমাকে বিশেষভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

আরও পড়ুনট্রাম্পের সঙ্গে ‘ব্রোমান্স’ ফেরানোর চেষ্টায় মোদি৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: টন ড স

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী-বিএনপি পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ৪

চট্টগ্রামে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের সঙ্গে হামলা পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুই দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের চারজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- ছাত্রঅধিকার পরিষদ নেতা মো. মারুফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্যসচিব মোহাম্মদ মীর ও কর্মী মো. সজীব এবং ছাত্রদল কর্মী রায়াদ হাসান। নগরীর উত্তর কাট্টলী এলাকায় অবস্থিত মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠন ও এক নারী শিক্ষককে কলেজে আসতে বারণ করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি কলেজের পরিচালনা কমিটি গঠন হয়। এতে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিনসহ চার বিএনপি নেতা। আজ সকালে তাদেরকে কলেজে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কমিটি গঠনের পর সিরাজ উদ্দিনকে নিয়ে কটূক্তি করেন এক নারী শিক্ষক। আরেক শিক্ষক সেটি সিরাজ উদ্দিনকে জানিয়ে দেন। এর জের ধরে সিরাজ উদ্দিন ওই নারী শিক্ষককে কলেজে আসতে বারণ করেন। 

বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে আজ সংবর্ধনা চলাকালে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানান। খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও জড়ো হন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মো. সজীব নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। খবর পেয়ে বিকেলে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল কলেজে যান। তারা অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কলেজ গেইটের বাইরে থেকে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের ওপর চড়াও হন ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপি নেতারা থানায় যান। সেখানে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আবারও তাদের ওপর চড়াও হন। থানার বাইরে ছাত্রঅধিকার পরিষদ নেতা মারুফকে পেয়ে মারধর করেন। পরে পুলিশ উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘সম্প্রতি কলেজটির পরিচালনা কমিটি গঠন হয়। এরমধ্যে চারজনই বিএনপির। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কলেজে তাদের সংবর্ধনা দেয় ছাত্রদল। কলেজটিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এরপরও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে তারা। খবর পেয়ে আমাদের একটি প্রতিনিধি দল গেলে তাদের ওপরও চড়াও হয় ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে অভিযোগ দিতে থানায় গেলে সেখানে আমাদের একজনকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে ছাত্রদল ও বিএনপি। হামলায় জড়িত এই নব্য ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা আবার রাজপথে নামবো।’

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, ‘এক শিক্ষককে কলেজে আসতে বারণ করার প্রতিবাদ করায় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নিবো। পুলিশের সামনে এই ধরনের হামলার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা।’

আকবরশাহ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মাইনুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষকদের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে শিক্ষার্থীরা বিরোধে জড়িয়েছেন। এই বিষয়ে মীমাংসাও হয়েছিল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয় দেওয়া ছেলেরা যাওয়ার সময় ছাত্রদলের এক কর্মীকে বেধড়ক পিটিয়েছে। তারা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে বলে শুনেছি।’ তার দাবি, ছাত্রদল নয়; কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। 

শিক্ষককে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘কাউকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। এখানে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা করছে। যারা একসময় ছাত্রলীগ-শিবির করত।’

আকবরশাহ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘কলেজ কমিটির এক সদস্যকে নিয়ে এক শিক্ষকের কটূক্তির জেরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছেলেরা ছাত্রদলের এক ছেলেকে পিটিয়েছে। পরে তারা আবার একা পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজনকে মারধর করেছে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ