বিশ্বে অপরাধীদের আটকে রাখতে কারাগারের ব্যবস্থা থাকলেও অনেক দেশের সরকার, বিশেষ করে স্বৈরাচার সরকার গোপনে কিছু বন্দিশালা পরিচালনা করে থাকে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে এমন গোপন বন্দিশালার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এসব বন্দিশালায় ভিন্নমতের মানুষকে বিনা বিচারে আটকে রেখে নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। এমনকি বন্দীদের হত্যার ঘটনাও ঘটে। বিশ্বের এমন কয়েকটি গোপন বন্দিশালা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আর্জেন্টিনার ইএসএমএ বন্দিশালা

১৯৭৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে আর্জেন্টিনার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইসাবেলা পেরন ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় স্বৈরশাসন চলেছে। আর এই সময়ের মধ্যে আর্জেন্টিনায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। ভিন্ন মতাবলম্বী, অধিকারকর্মী এবং বামপন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী মানুষের ওপর দমন–পীড়ন চলেছে। স্বৈরশাসনের একেবারে শুরুর দিকে বুয়েনস এইরেসে নেভি স্কুল অব মেকানিকস (ইএসএমএ) নামের একটি স্কুলকে গোপন বন্দিশালায় পরিণত করা হয়।

কুখ্যাত এই বন্দিশালায় বন্দীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হতো। অনেক বন্দীকে উড়োজাহাজে করে নিয়ে সমুদ্রে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও ছিলেন। বন্দিশালার ভেতরে একটি মাতৃত্বকালীন ওয়ার্ড ছিল। সেখানে বন্দী নারীরা সন্তান জন্ম দেওয়ামাত্রই নবজাতকদের তাঁদের কাছ থেকে সরিয়ে ফেলা হতো। বন্দী মায়েদের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। স্বৈরশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিবারগুলো এসব শিশুকে দত্তক নিত।

স্বৈরশাসন চলাকালে এবং পরবর্তী সময়ে সামরিক নেতারা ওই বন্দিশালার নির্যাতন–নিপীড়নের তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করতেন। যেমন ১৯৭৯ সালে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা সেখানে পরিদর্শনে গেলে বন্দিশালার কর্মীরা সেখানকার বেজমেন্টের সিঁড়ি আড়াল করে ফেলেন। সিঁড়ির অস্তিত্ব আড়াল করতে তাঁরা একটি দেয়াল তৈরি করে দেন। ওই বেজমেন্টে বেশির ভাগ নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটত।

এই বন্দিশালায় পাঁচ হাজার মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁদের বেশির ভাগেরই আর হদিস পাওয়া যায়নি। মাত্র ২০০ জন জীবিত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছিলেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহতার স্মারক হিসেবে ২০০৭ সালে নির্যাতন কেন্দ্রটিকে জাদুঘর ঘোষণা করা হয়। সেখানে নির্যাতনের বিভিন্ন আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে।

সিরিয়ার সেদনায়া কারাগার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন বন দ শ ল বন দ শ ল য় বন দ শ ল র আর জ ন ট ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদযাত্রা: ২৬ মার্চের ট্রেনের টিকিট মিলছে আজ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ)। রবিবার (১৬ মার্চ) তৃতীয় দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।

সকাল ৮টা থেকে মিলছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। আজ যারা টিকিট কিনবেন তারা আগামী ২৬ মার্চ ভ্রমণ করতে পারবেন।

এর আগে, গত ৯ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ, ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ, ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ ও ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এছাড়া, চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।

আরো পড়ুন:

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু আজ, ফিরতি টিকিট ২৪ মার্চ

কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি

ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু, এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।

এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পর যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

ঢাকা/হাসান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ