আয়নাঘর ও জুলাই মাসের নৃশংসতা আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত: আসিফ
Published: 13th, February 2025 GMT
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এবং আয়নাঘরের নৃশংসতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিস্টদের সমর্থকরা তাদের অপকর্ম অস্বীকার করতে পারবে না। আমরা গতকাল রহস্যময় আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। সেখানে কী ঘটছিল, তা বিশ্বকে উপলব্ধি করতে দিয়েছি।’’
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তারুণ্য উৎসব ২০২৫’-এর সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বিশ্ব বাস্তবতা দেখেছে, তবুও ফ্যাসিবাদের সমর্থকরা নির্লজ্জভাবে তথ্য অস্বীকার করছে। কিন্তু এবার তথ্য অস্বীকার করা ফলপ্রসূ হবে না। কারণ জুলাই মাসের তাদের নৃশংসতা আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত ও প্রকাশিত হয়েছে। ‘আয়নাঘর’ আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশিত হবে।’’
জুলাই মাসের নৃশংসতা ও আয়নাঘরের নথিভুক্তকরণের তাৎপর্য সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘হত্যা ও গুমের মতো অপরাধ করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জনসাধারণের শত্রু হিসেবে স্থায়ীভাবে বিবেচিত হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘তরুণ সমাজের শক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য, আমরা দেশব্যাপী তারুণ্য উৎসব পালন করে আসছি। তরুণরা উৎসাহের সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবগুলোতে অংশগ্রহণ করছে।’’
তারুণ্য উৎসব সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হল, যুবসমাজকে সংগঠিত করা। এ ছাড়া আমরা তরুণ সমাজের ক্ষমতা ও শক্তিকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চাই।’’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সভাপতিত্ব করেন এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব মো.
ঢাকা/সৌরভ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পূর্ণসেবা ও নতুন শিষ্যত্ব দিয়ে ভাঙল সাধুর হাট
সাধুসঙ্গ, রাখালসেবা, অধিবাস, পূর্ণসেবাসহ নানা রীতি ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে সাঙ্গ হলো ফকির লালন শাহ স্মরণোৎসব। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অষ্টপ্রহরব্যাপী গুরুকার্যের মাধ্যমে শুরু হয় সাধুসঙ্গ। সর্বশেষ শক্রবার দুপুরে লালন ভক্ত সাধু-গুরুদের পূর্ণসেবার মাধ্যমে উৎসব শেষ হয়েছে। সকালে বাল্যসেবায় পায়েস ও মুড়ি দেওয়া হয় ফকির বাউল ভক্তদের। দুপুরে পূর্ণসেবায় ছিল ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ও দই। এর পর লালন মতে দীক্ষিতদের খেলাফত (শিষ্যত্ব) প্রদান করেন তাদের নিজ নিজ গুরুরা।
দোল পূর্ণিমা তিথিতে প্রতি বছর ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে তিন দিনব্যাপী সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় ফকির লালন শাহর স্মরণোৎসব। সাধু-গুরু, লালন ভক্তদের সরব উপস্থিতি, গান ও গ্রামীণ মেলায় জমজমাট হয়ে ওঠে আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ উৎসবের আয়োজন করে। এবার রমজানের কারণে এক দিনই লালন স্মরণোৎসব হয়েছে। ছিল না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন। ফলে উৎসবে লালন ভক্ত বাদে অন্য লোকজনের উপস্থিতিও ছিল কম।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে লালন একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। ওই দিন রাত ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আখড়াবাড়িতে খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে আসর বসিয়েছেন বাউল সাধুরা। একতারা বাজিয়ে গানে গানে তারা স্মরণ করছেন ফকির লালন শাহকে। এ সময় তেমন ভিড় চোখে পড়েনি।
উৎসবে আগত ফকির রাজ্জাক শাহ বলেন, ‘সাঁইজি (ফকির লালন) পূর্ণিমা তিথিতে সাধুসঙ্গ করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরাও এমন আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছি। অষ্টপ্রহরব্যাপী গুরুকার্য, রাখালসেবা, অধিবাস, বাল্যসেবা ও পূর্ণসেবার মাধ্যমে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। এবার সাধুসঙ্গে আসল বাউলরা অংশ নেওয়ায় কোনো ভিড় বা ঠেলাঠেলি ছিল না। এতে খুশি আমরা।’
ফকির হৃদয় শাহ বলেন, ‘আমরা চাই পারস্পরিক উৎসবে আসা সবার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হোক। প্রেমের জায়গা গভীর হোক ও ঘৃণা দূর হোক। দোল পূর্ণিমা তিথিতে লালন শাহ তাই করতেন।’
আখড়াবাড়ির ভারপ্রাপ্ত খাদেম মশিউর রহমান বলেন, দুপুরে পূর্ণসেবার মাধ্যমে শেষ হয়েছে সাধুসঙ্গ। এবারও লালন ভক্ত অনুসারীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল আখড়াবাড়ি। আসছে ১ কার্তিক ফকির লালনের তিরোধান দিবসে আবার মিলনমেলায় শরিক হবেন লালন ভক্ত ও প্রেমীরা।