১. সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও দিকনির্দেশনা

প্রতিভাবান মানুষের বেলায়ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও দিকনির্দেশনা ছাড়া সামর্থ্যের সবটা কাজে লাগানো কঠিন। শিশুর বেলায়ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকলে কিংবা সে যা পারে, লক্ষ্য যদি হয় তার বিপরীত; পাশাপাশি সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব থাকলে সে অনুৎসাহিত বোধ করতে পারে। যা থেকে সৃষ্টি হয় মনোযোগহীনতা ও আলস্য। তাই শিশুকে তার লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি লক্ষ্য যেন সামর্থ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

২.

ব্যর্থতাকে ভয় নয়

ব্যর্থতার ভয় প্রতিভাবান শিশুকেও বাধার মুখে ফেলে। যে কারণে তুলনামূলক কঠিন কাজগুলো এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে, যা থেক আসতে পারে আলস্য। তাই ব্যর্থতাকে ভয় না করে ইতিবাচকভাবে দেখতে শিশুকে অভ্যস্ত করে তুলুন।

অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার বদলে প্রচেষ্টায় গুরুত্ব দিন, যা শিশুকে সাহসী করে তুলতে ভূমিকা রাখবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গত ১৫ বছরের গুম ও খুনের তদন্ত প্রয়োজন

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের সব গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশদ তদন্ত প্রয়োজন। এসব ঘটনায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান সরকার শুধু জুলাই-আগস্টের মানবতা লঙ্ঘনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তাদের কাজে সন্তুষ্ট হওয়া যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত ‘জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ-বিচারপ্রক্রিয়া: আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন দাবি করেন বক্তারা। জহুর হোসেন হলে আয়োজিত সভার সঞ্চালনা করেন বিগত সময়ে গুম হওয়া পরিবারগুলোর সংগঠন ‘মায়ের ডাক’–এর অন্যতম সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম।

গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিনের বক্তব্যে উঠে আসে প্রতিটি গুমের রহস্য উদ্‌ঘাটনে আরও পরিপূর্ণ তদন্ত প্রয়োজনের গুরুত্বের কথা। তিনি বলেন, ‘শুধু জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়নি। এটা বিগত সরকারের শুরু থেকেই হয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে “শহীদ” ও “ডেভিল হান্ট”–এর মতো শব্দগুলো ধর্মতান্ত্রিক, যা আইন ও ন্যায়বিচার থেকে আরও দূরে নিয়ে যায় আমাদের।’ এ সময় ডিজিএফআই ও র‍্যাবের মতো কয়েকটি সংস্থা, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের হয়ে কাজ করেছে, সেসব সংস্থার বিলুপ্তির কথা বলেন তিনি।

রেজাউর রহমান লেনিনের বক্তব্যে আরও উঠে আসে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কীভাবে বিভিন্ন অপারেটরের ইন্টারনেট বন্ধ করার নির্দেশ দেয় আর সে সময় শত শত মানুষকে খুন করা হয়, সেসব অভিযোগের তথ্য।

রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায়, তাহলে দেশটিকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে আছে।’ শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে বন্দী বিনিময় চুক্তি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া বর্তমান সরকারের কাজ নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার দুপুরে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগী কয়েকজনকে নিয়ে আয়নাঘর নামে পরিচিত প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র‌্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন নেত্র নিউজের এডিটর-ইন-চিফ তাসনিম খলিল। তিনি বলেন, ‘অনেকেই গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল। এর মাধ্যমে অনেকে বিদেশে টাকাও পাচার করেছে। সরকারের উচিত এসব টাকা ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘের সাহায্য চাওয়া। জনগণকে দাবি করতে হবে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়ার জন্য।’

তাসনিম খলিল বলেন, জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট স্বাগত জানালেও এই প্রতিবেদন আরও বিস্তৃত আকারে তৈরির দাবি জানাতে হবে। এ জন্য সাধারণ জনগণের কাছ থেকেই দাবি আসতে হবে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গুম হওয়া মানুষের স্বজনেরা। গুম হওয়া পিতার সন্তানেরা বলছিলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এই সরকার আসার পর আমাদের বাবা হয়তো ফিরে আসবে। কিন্তু কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সরকার কেন ছয় মাস পর আয়নাঘর দেখতে যাবে, কেন দুই মাস পরই না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে সন্তুষ্ট নন বলে অভিযোগ করেন গুম অবস্থা থেকে ফিরে আসা বিল্লাল হোসেন। ২০১৩ সালে কুমিল্লা থেকে গুম হওয়া হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী বলেন, ‘গুম খুনের চেয়েও ভয়ংকর। লাশটাও থাকে না। এই ১১ বছর ধরে সেই কষ্ট বয়ে চলেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ