আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বহিষ্কার করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আপনাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করুন, না হয় নিজেদের গণতন্ত্রী ও মানবাধিকার রক্ষাকারী হিসেবে পরিচয় দেবেন না।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে দলটির এক সমাবেশে মজিবুর রহমান এ কথা বলেন। গুম, খুন ও আয়নাঘরের নৃশংসতায় জড়িত খুনিদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মজিবুর রহমান বলেন, গুম, খুন, গণহত্যার বিচার না করলে খুনিরা সুযোগ পেলে আবার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠবে। গণ-অভ্যুত্থানের সব পক্ষকে তারা আবার আয়নাঘরে বন্দী করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্ট সরকারের পতন না হলে আন্দোলনকারীদের অনেকেই পরে গুম খুনের শিকার হতেন।

সভাপতির বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘শহীদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই এখন আমরা শুনি কেউ কেউ বলেন, বারবার ফ্যাসিবাদ নাকি শুনতে ভালো লাগে না। কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার কথা বলেন। আমরা বলি, সবার আগে আমার ভাইয়ের, বোনের খুনিদের বিচার চাই।’

বিচারপ্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে আমলা, সাংবাদিক, পুলিশ ও সামরিক প্রশাসনের কর্তাদের আহ্বান জানান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সবাই আন্তরিকভাবে বিচারকাজে সহায়তা করুন, নইলে আপনাদেরও হাসিনা একসময় আয়নাঘরে ঢোকাবে।’

এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আওয়ামী ফ‍্যাসিবাদী আমলের ১৬ বছরে যে গুম, খুন, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও শত শত আয়নাঘর করা হয়েছিল, তার তুলনা শুধু হিটলারের নাৎসি আর মুসোলিনির ফ‍্যাসিস্টদের সঙ্গে হতে পারে। অনেকের জীবন, অনেক পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের স্মৃতি পর্যন্ত হারিয়ে গেছে, তাদের গল্প জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বি এম নাজমুল হক, লে.

কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, এ বি এম খালিদ হাসান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসিরসহ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সংবিধান ও বিচার বিভাগের সংস্কার ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয় : মাও. কাইয়ুম

 নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানার উদ্যোগে গণ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে পঞ্চবটি থানা কার্যালয়ে আয়োজিত এই মাহফিলে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিচারব্যবস্থা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। 

প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, দেশের সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুদক ও বিচার বিভাগের সংস্কার এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।

এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে, বাংলাদেশ আবারও আগের তিমিরে ফিরে যাবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকলে অন্যায় ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না। তিনি আরও বলেন, অসংখ্য আলেম-ওলামার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

ছাত্র গণহত্যার পরিকল্পনাকারী, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতেই নিশ্চিত করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলাম বলেন, আমরা আর কোনো ধর্ষণের ঘটনা দেখতে চাই না।

ধর্ষণের শাস্তি কোরআনের আইনের ভিত্তিতে কার্যকর করতে হবে। নিহত আছিয়ার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম বলেন, রমজান আমাদের আত্মশুদ্ধির শিক্ষা দেয়। বাকি ১১ মাসও যেন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলাম, দেশ ও মানবতার জন্য কাজ করতে পারি। ধর্ষণ, খুন, চাঁদাবাজির মতো অপরাধ থেকে মুক্ত থাকতে পারি, এটাই রমজানের শিক্ষা হওয়া উচিত।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানার সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে এবং ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যে সংগঠনই হোক না কেন, যারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানার নেতৃবৃন্দ তাদের প্রতিহত করবে।

সেক্রেটারি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ আমান উল্লাহ বলেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার নির্মম স্মৃতি আমাদের এখনো তাড়া করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংগ্রামী আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই) ঘোষণা দিয়েছেন, এই সরকারকে বিদায় না দেওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

গণ ইফতার মাহফিলে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন, ইসলামী যুব আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ পরিষদ, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম, মুজাহিদ কমিটিসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনার সহযোগী আসামি সাবেক আইজিপি মামুন
  • গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসিনার সঙ্গে আসামি হলেন সাবেক আইজিপি মামুন
  • জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন রাজনৈতিক নেতারা
  • ২ দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
  • এক মাস গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করবে ইনকিলাব মঞ্চ
  • জাতীয় পার্টিকে বর্জন করুন, রংপুরবাসীর উদ্দেশে রাশেদ খান
  • আমরা স্বদেশে ফিরতে চাই
  • সংবিধান ও বিচার বিভাগের সংস্কার ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয় : মাও. কাইয়ুম
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব, শুনলেন গণহত্যার বর্ণনা
  • যুদ্ধকৌশল হিসেবে গাজায় যৌন সহিংসতাকে ব্যবহার করেছে ইসরায়েল