প্রক্টরকে লাঞ্ছনা ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, ১১ ছাত্রীসহ ১২ জনকে বহিষ্কার
Published: 13th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ছাত্রীসহ ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেলা তিনটায় উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়। সভা শেষে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছনার দায়ে এক ছাত্রীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর সনদ বাতিলেরও সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি সিন্ডিকেটে পাঠানো হবে। এ ছাড়া একই দিনের ঘটনায় আরও ৯ ছাত্রীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করা নিয়ে প্রথমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা ওই হলের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছিলেন। পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিল।
তবে ছাত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে নন; বরং প্রশাসন যেন এটি ভাঙে, সে দাবি করেছিলেন। এ জন্য তাঁরা আগেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা গেছে এক ছাত্রীকে। আবার আরও একাধিক ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডিকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় মোট ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া ছাত্রীর নাম জানা গেছে। তাঁর নাম আফসানা এনায়েত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। বাকি নয়জনের নামও দ্রুত জানানো হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে এক ছাত্রীসহ দুজনকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে আসছিলেন একদল শিক্ষার্থী। বহিষ্কৃত হওয়া ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন এস এম সানবিন সিফাত ও সানিলা জামিল। তাঁরা দুজনই নৃবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সানবিনকে দুই বছর ও সানিলাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সানবিন তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হননি। তাঁর বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ পাওয়ায় দুই বছর, এক ছাত্রী ক্ষমা চাওয়ায় তাঁকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ছ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েল-হামাস চুক্তি আবারও সঠিক পথে
গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ইসরায়েলের তিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে তারা। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানছে না– এমন অভিযোগে দেশটির জিম্মিদের মুক্তি দিতে নারাজ ছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ইসরায়েলি তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কায়রো পৌঁছানোর এক দিন পর এই বিবৃতি এলো।
বৃহস্পতিবার কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর হামাস জানিয়েছে, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তি বাস্তবায়নের পথে যে কোনো বাধা দূর করার আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মিসর ও কাতারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মধ্যস্থতাকারীরা দু’পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে এনেছেন এবং উভয় পক্ষ চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইসরায়েল মঙ্গলবার জানিয়েছিল, শনিবারের মধ্যে হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি শেষ হবে। হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েল চুক্তির শর্তভঙ্গ করেছে এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রয়টার্স জানায়, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বুধবার গাজার বিষয়ে তাদের দেশের ‘ঐক্যবদ্ধ’ অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন।
গাজায় দখলদার দেশটির হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ১৪ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনও অনেক ভুক্তভোগী ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। এ নিয়ে ফিলিস্তিনি উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হাতে নিহত হয়েছেন শতাধিক ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো সরাসরি হামলায় প্রাণ গেছে ৯২ জনের।