এআইয়ের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজন: প্রধান বিচারপতি
Published: 13th, February 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পরিচালনার ক্ষেত্রে নাগরিকের ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, এআইয়ের প্রয়োগ বৈশ্বিকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। তাই এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে একটি সম্মিলিত নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে গ্লোবাল গভর্নমেন্ট সামিট ২০২৫-এর ওয়ার্ল্ড রেগুলেটরি ফোরামে আজ বৃহস্পতিবার দেওয়া বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান বিচারপতি তাঁর বক্তৃতায় আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে এআইয়ের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার বিষয়ে এবং বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো তৈরিতে রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্ক আলোকপাত করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আধুনিক বিশ্বে এআই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, অর্থনীতি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নৈতিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে।
রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সময়ের আবর্তে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তা যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে বিষয়ে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, এআই কিংবা এমন অন্য কোনো আধুনিক প্রযুক্তির জটিলতা মোকাবিলায় এককভাবে কোনো নির্দিষ্ট দেশীয় আইনি কাঠামো যথেষ্ট নয়। এ প্রসঙ্গে সিভিল ও কমন ল ফ্রেমওয়ার্কের সমন্বয়ে অভিযোজনযোগ্য আধুনিক আইনি কাঠামো গঠনের জন্য বিশ্বের আইনজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এআইয়ের জন্য আধুনিক নিয়ন্ত্রণকাঠামো শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় নয়; বরং এরূপ নিয়ন্ত্রণকাঠামো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণও নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগের জটিলতা মোকাবিলা করে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারলে ভবিষ্যতের বিচারব্যবস্থাও আরও সুদৃঢ় হবে। এ জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, আইনবিশেষজ্ঞ এবং প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বানও জানান প্রধান বিচারপতি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের বিকল্প হবে, যা বললেন স্যাম অল্টম্যান
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির কিছু প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। এগুলোকে মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমান প্রতিনিধি বা এআই এজেন্ট বলা হচ্ছে। আর তাই সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের কাজ ভবিষ্যতে এআই এজেন্টদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যানও সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। তাঁর মতে, বর্তমানে কয়েক বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সফটওয়্যার প্রকৌশলীরা যেসব কাজ করেন, এআই এজেন্টও অল্প কিছুদিনের মধ্যে সেসব কাজ করতে পারবে।
এক ব্লগ বার্তায় অল্টম্যান বলেন, এআই এজেন্ট শুধু মানুষের সহায়ক হিসেবেই কাজ করবে না, বরং ভার্চ্যুয়াল সহকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রাখবে। এআই দ্রুত শিখছে এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করছে। তবে এআই এজেন্ট নতুন বা মৌলিক ধারণা দিতে পারবে না। ফলে প্রতিষ্ঠানে দক্ষ প্রকৌশলীদের প্রয়োজন হবে।
অল্টম্যানের ধারণা, ভবিষ্যতে লাখ লাখ এআই এজেন্ট বিভিন্ন জ্ঞানভিত্তিক পেশায় নিযুক্ত থাকবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখন কল্পনা করুন, এক হাজার বা দশ লাখ এআই এজেন্ট একসঙ্গে কাজ করছে। এআইয়ের প্রভাব হবে অনেকটা ট্রানজিস্টরের মতো। ট্রানজিস্টর একসময় প্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছিল, কিন্তু এখন তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এতটাই অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে যে আমরা সেটি নিয়ে আর আলাদাভাবে ভাবি না।
এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে অল্টম্যান বলেন, এআইয়ের প্রসারের ফলে মূলধন ও শ্রমের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসতে পারে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়াবে। আর তাই প্রাথমিক পর্যায়েই নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে