চার দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ছাত্রসমাবেশে মাইকের আওয়াজে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, রোকেয়া ও শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠানে এসে মাইক বন্ধ করতে বললে তোপের মুখে ২৬টি বন্ধ করেন আয়োজকরা। 

এ সময় ২৬টি মাইক বন্ধ হলেও রাজু ভাস্কর্যে ছয়টি উচ্চ শব্দের সাউন্ডবক্স চলমান রয়েছে। 

অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি চত্বর, শহীদ মিনার ও শাহবাগ পর্যন্ত ২৬টি মাইকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় শাখা (বাসদ)। এ সময় সংগঠনটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাইকগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি। তবে অনুষ্ঠান চলমান থাকবে।’’ 

এর আগে বেলা সাড়ে ৯টা থেকে মাইকের আওয়াজ শুরু হয়। এতে বিপদে পড়েন গ্রন্থাগারে পড়ুয়া এবং টিএসসি সংলগ্ন রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। 

এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মাইক বন্ধ করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো.

মনিরুজ্জামান বলেন, ‘‘সকালে লাইব্রেরিতে এসে মাইকের তীব্র আওয়াজে কোনোভাবেই পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। শব্দ এত তীব্র, মনে হচ্ছে যেন লাইব্রেরির ভেতরেই প্রোগ্রাম হচ্ছে। শব্দে রীতিমতো লাইব্রেরির গ্লাসগুলো কাঁপছিল। অনেকের পরীক্ষা চলমান, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।’’ 

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, ‘‘এভাবে বিকট শব্দে অনুষ্ঠান করার অনুমতি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেয়, তা ভাববার বিষয়। যেখানে আজকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রয়েছে এবং অনেকের ক্লাস পরীক্ষা চলছে। আয়োজকদের ন্যূনতম কমনসেন্সটুকু পর্যন্তও নাই।’’ 

এদিকে, রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিশাল জায়গা নিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় টিএসসিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় অসুস্থ রোগী পরিবহণকারী অ্যাম্বুলেন্সকেও আটকে থাকতে দেখা যায়। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদকে কল করা হলে প্রক্টর অফিসের স্টাফ হারুন কল রিসিভ করে জানান, ‘‘স্যার সিনেটের একটি মিটিংয়ে আছেন। মোবাইলটি বর্তমানে আমার কাছে আছে।’’

সৌরভ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই, মুঘল সম্রাট আকবর, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর। তবে তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।

এছাড়াও শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।

সোমবার সকালে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল সাগে ৯টায় কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমীর ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী নেন এবং শোভাযাত্রায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, বৈশাখী শোভাযাত্রায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিয়ারী সুন্দরী, কাজী মিয়াজান, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।

কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।

সুবর্ণা খাতুন নামের এক শিশু জানায়, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।

প্রায় ১৮ ধরে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।

আধুনিকতার বাইরে এসে যেন বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারি। সেজন্য সম্রাট আকবরের ডামি সেজেছিলাম। কথাগুলো বলছিলেন চয়ন শেখ।

পরিচয় জানতেই 'বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!' কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।

নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চড়ক মেলায় মেতে উঠেছিল নাটোরের শংকরভাগ 
  • কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা
  • নববর্ষেও বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ: দুলু
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
  • হালখাতা আছে, নেই নিমন্ত্রণ
  • মারমাদের মাহা সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
  • ‌‘তৌহিদী জনতার’ চিঠিতে বাতিল হলো শেষের কবিতা নাটকের প্রদর্শনী
  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা