ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
Published: 13th, February 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা ও জজ আয়েশা আক্তার সুমি এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার চর শিবপুর গ্রামের কাজল মিয়া (৪৯), বাহেরচরের আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন মিয়া ও নজরুল ইসলামের ছেলে রাসেল মিয়া। আদালতে রায়ের সময় রিপন মিয়া ও কাজল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন কারাগারে
সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো.
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন সামী রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধ ব্যাংক থেকে যেভাবে শক্তিশালী ইস্টার্ন ব্যাংক
শুরুতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ব্যাংক চালাবে ব্যাংকাররা, আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করব না। ব্যাংক মুনাফায় না যাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রথম পাঁচ বছর লভ্যাংশ, সভার সম্মানীসহ কোনো সুবিধা নিইনি। এর ফলে ইস্টার্ন ব্যাংক এখন বাজারের সেরা– শওকত আলী চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ব্যাংক
ব্যাংকটিকে আজকের এই পর্যায়ে পৌঁছাতে কী কৌশল কাজে দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইস্টার্ন ব্যাংক শুরুতেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রাহক হিসেবে বেছে নেয়। এ জন্য শুরুতে এসএমই ও খুচরা ঋণ ছিল না। শুরু থেকে আমরা ব্যক্তি নয়, প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করি। এ জন্য আমাদের ব্যাংকে সবকিছু লিখিত আছে। ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদের ভূমিকা কী হবে, তা পরিষ্কার করা আছে। এসব কারণে ইস্টার্ন ব্যাংক আজ এই পর্যায়ে।’
আলী রেজা ইফতেখার আরও বলেন, ‘আমাদের গ্রাহক কে হবেন, এ ব্যাপারে আমরা খুব সচেতন। সব নিয়ম লিখিত। এ জন্য আমার কাছে কোনো ফাইল পড়ে থাকে না। আমার সিদ্ধান্তের জন্য কাউকে অপেক্ষায়ও থাকতে হয় না। আমি কখনো কাউকে ঋণ দেওয়ার জন্য কোনো নির্দেশনা বা পরামর্শ দিইনি। ঋণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ আছে। তারাই এটা দেখে।’
বিসিসিআই থেকে ইস্টার্ন ব্যাংক
পাকিস্তানি ব্যাংকার আগা হাসান আবেদি ১৯৭২ সালে ব্যাংক অব ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ইন্টারন্যাশনাল (বিসিসিআই) প্রতিষ্ঠা করেন। বিসিসিআইয়ের ২৫ শতাংশ মূলধন ছিল ব্যাংক অব আমেরিকার এবং ৭৫ শতাংশ মূলধন ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শাসক শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের। ব্যাংকটি লুক্সেমবার্গে নিবন্ধিত ছিল এবং তার প্রধান কার্যালয় ছিল পাকিস্তানের করাচি ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। ব্যাংকটি চালুর এক দশকের মধ্যেই ৭৮টি দেশে ৪ হাজারের বেশি শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে। এর মধ্যে বাংলাদেশও ছিল। ব্যাপকভাবে কার্যক্রম সম্প্রসারণের কিছুদিন যেতে না যেতেই ব্যাংকটিতে অর্থ পাচার এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটে। এ কারণে বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাংকটির সম্পদ জব্দ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালে এসে ব্যাংকটি বন্ধ হয়ে যায়।
নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বড় তিনটি বিদেশি ব্যাংকের একটি ছিল বিসিসিআই। অন্য দুটি ছিল এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ও আমেরিকান এক্সপ্রেস। বিসিসিআই ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদেশি লেনদেন বাধাগ্রস্ত হবে, এ জন্য ব্যাংকটির বিষয়ে তখনকার সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯১ সালের ৬ জুলাই রাতে বিসিসিআইয়ের কার্যক্রম সীমিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ৮ জুলাই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ব্যাংকটির কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জাতীয় সংসদকে অবহিত করেন। জাতীয় সংসদে ইস্টার্ন ব্যাংক পুনর্গঠন স্কিম পাস করা হয়। তখন ব্যাংকটির আমানত ছিল ৫৫০ কোটি টাকা। এসব আমানতকারীর একটি অংশকে আমানতের বিপরীতে ব্যাংকের শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদি তাঁরা শেয়ার নিতে আগ্রহী না হন, তবে আমানত ফেরত পেতে ৫-১০ বছর লাগবে বলে জানানো হয়। এই প্রস্তাব পাওয়ার পর আমানতকারীদের একটি অংশ ব্যাংকের শেয়ার নিতে আগ্রহী হন। তখন ১০০ টাকা জমার বিপরীতে ১০০ টাকার শেয়ার দেওয়া হয়। যাঁরা ওই সময় শেয়ার নিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন ব্যাংকটির বড় শেয়ারধারী ও পরিচালক। বড় আমানতকারীদের পাশাপাশি সরকারও ব্যাংকটির ৬০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়।
আলী রেজা ইফতেখার