জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১৬৫ কোটি টাকার সম্পদ, মুস্তফা কামালের নামে মামলা
Published: 13th, February 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১৬৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আ হ ম মুস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ২৭ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তাঁর নিজের ও ব্যবসায়িক ৩২টি ব্যাংক হিসাবে ৪৪৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্যও পাওয়া গেছে।
আক্তার হোসেন জানান, আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামালের বিরুদ্ধে ৪৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৪৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। কাশমিরি কামালের ২০টি ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ১৩৩ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। এ মামলায় কাশমিরির সঙ্গে মুস্তফা কামালকেও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, প্রায় ৯৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মুস্তফা কামালের দুই মেয়ে কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তাঁদের মধ্যে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৯৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাশফি কামালের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁর নিজের ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ৩৮টি ব্যাংক হিসাবে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আর ৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নাফিসা কামালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তাঁর নিজ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁদের বাবা মুস্তফা কামালকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবিদেশি ‘নাগরিকত্ব’ নিয়ে মন্ত্রী-এমপি হন ২৪ জন ০৫ নভেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। দুদকের করা এ–সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে আজ কামরুল ইসলামকে আদালতে হাজির করে দুদক। পরে দুদকের পক্ষ থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে কামরুল ইসলামকে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা হয়। অন্যদিকে এসব ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে জমা আছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর নামে মামলা করে দুদক। দুদক বলছে, ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ার পর কামরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুদক বলছে, কামরুলের ছেলে তানজীর ইসলামের নামে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৫ টাকা ও মেয়ে সেগুপ্তা ইসলামের নামে ১ কোটি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর দুই সন্তানের নামে আরও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকতে পারে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি কামরুলের নামে ৬ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। মো. কামরুল ইসলামের নিজ ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ১৫টি হিসাবে মোট ২১ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকার লেনদেন হয়। তিনি এই টাকা সন্দেহজনকভাবে হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করেছেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।
গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা–১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাঁকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে।
২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে তাঁকে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।