২০২৪ সালের নভেম্বর থেকেই ঢাকার বায়ুর মান ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে। ডিসেম্বরেও একই প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ বছরের জানুয়ারিতে বায়ুদূষণ আরও মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়, যা আগের বারের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।

রাজধানীর পরিবেশকল্যাণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাটমসফেরিক পলিউশন স্টাডিজের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা প্রায় প্রতিদিনই বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দূষিত শহরের মধ্যে ছিল।

তবে এই পরিস্থিতেও বাইরে বের না হয়ে উপায় নেই। ব্যস্ত জীবনে কাজের সূত্রে বা কোনো প্রয়োজনে নিত্যদিন যদি আপনাকে ঢাকার রাস্তায় চলাচল করতে হয়, কিছু আগাম সতর্কতা মানতে ভুলবেন না। বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়োজিত সংস্থা আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় বাতলে দিয়েছে। জেনে নিন সেসব।

১.

প্রতিদিনের বায়ুদূষণের পূর্বাভাস দেখুন

বাইরে বের হওয়ার আগে আপনার এলাকায় দৈনিক বায়ুদূষণের পূর্বাভাস দেখে নিন। আইকিউএয়ারের ওয়েবসাইট থেকে সহজে তা দেখে নিতে পারবেন। পূর্বাভাস আপনাকে জানিয়ে দেবে বাতাস কখন স্বাস্থ্যকর নয়। এ ছাড়া বায়ুর মান সম্পর্কে তথ্য পেতে পত্রিকা, রেডিও ও টিভির আবহাওয়া প্রতিবেদনেও চোখ রাখতে পারেন।

আরও পড়ুনমৌসুমি ফ্লু থেকে বাঁচতে কী করবেন০৪ অক্টোবর ২০২৪২. দূষণ বেশি থাকলে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন

যখন বাতাসের মান অত্যধিক খারাপ থাকে, তখন বাইরে যাওয়া পারতপক্ষে এড়িয়ে চলুন। যদি জিমে যাওয়ার থাকে বা শপিং করার দরকার হয়, চেষ্টা করুন বাড়িতে বসে করা যায় কি না বা অনলাইনে কাজটি সারা যায় কি না। বিশেষ করে শিশুদেরও দূষিত বাতাসে বাইরে খেলাধুলা বা ঘুরতে দেওয়া থেকে বিরত রাখা উচিত। একান্ত যেতেই হলে মুখে মাস্ক পরুন।

৩. জ্বালানিচালিত যানবাহন ব্যবহার সীমিত করুন 

নাগরিক হিসেবে যার যার জায়গা থেকে সচেতন থাকার চেষ্টা করুন। বায়ুদূষণ কমাতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তাই এ সময় যতটা সম্ভব গাড়ির ব্যবহার সীমিত করুন। গণপরিবহন, যেমন বাস, রেল, মেট্রোরেল ব্যবহার করুন। 

৪. কাঠ বা আবর্জনা পোড়ানো এড়িয়ে চলুন

জ্বালানির জন্য কাঠ বা আবর্জনা পোড়ানো অনেক অঞ্চলে বায়ুদূষণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি। শীতকালে আমাদের দেশে কাঠ পুড়িয়ে আগুন পোহানো হয়। এটি বাতাসে ক্ষতিকর কণার পরিমাণ বাড়ায়, যা শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই যথাসম্ভব এটিও এড়িয়ে চলুন।

৫. ঘরের বাতাসের গুণগত মান নিশ্চিত করুন

শুধু বাইরেই নয়, ঘরের ভেতরের বায়ুমানও সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে বিভিন্ন বায়ু পরিশোধনকারী ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে পারেন। যেমন স্নেক প্ল্যান্ট, স্পাইডার প্ল্যান্ট ইত্যাদি।

৬. সর্বোপরি সচেতনতা বৃদ্ধি করুন

দূষণ কমাতে ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে। সরকারের সব স্তরের নীতিনির্ধারক যেন এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়, তার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় এনে নিরাপদ পরিবেশ ও পরিষ্কার বাতাস নিশ্চিত করতে হবে।

সূত্র: আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন

আরও পড়ুনবেশি দিন বাঁচতে চাইলে এই পাঁচ খাবার থেকে দূরে থাকুন১৭ নভেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদযাত্রা: ২৬ মার্চের ট্রেনের টিকিট মিলছে আজ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ)। রবিবার (১৬ মার্চ) তৃতীয় দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। অগ্রিম টিকিটের শতভাগই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।

সকাল ৮টা থেকে মিলছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। আজ যারা টিকিট কিনবেন তারা আগামী ২৬ মার্চ ভ্রমণ করতে পারবেন।

এর আগে, গত ৯ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের টিকিট ১৬ মার্চ, ২৭ মার্চের টিকিট ১৭ মার্চ, ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ ও ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এছাড়া, চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।

আরো পড়ুন:

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু আজ, ফিরতি টিকিট ২৪ মার্চ

কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি

ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু, এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।

এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পর যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

ঢাকা/হাসান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ